স্টার কাবাবের ভ্যাট ফাঁকি
প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ফাঁকি দিচ্ছে রাজধানীর অভিজাত রেস্তোরাঁ স্টার কাবাব হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট। নিজেদের করা এক অভিযানে ওই হোটেলের ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পেয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তারা।
আজ সোমবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত স্টার কাবাব ও রেস্তোরাঁ গ্রুপের মালিকানাধীন ১১টি ইউনিটে অভিযান চালায় এনবিআরের আটটি দল। এনবিআরের গণসংযোগ কর্মকর্তা সৈয়দ আব্দুল মোমেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
স্টার কাবাব হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের মধ্যে রাজধানীর বনানী, ধানমণ্ডি, ওয়ারী, টিকাটুলি, এলিফ্যান্ট রোড ও ঠাটারি বাজার শাখায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগটি প্রমাণিত হওয়ায় ভ্যাট গোয়েন্দা কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠানটির বাণিজ্যিক দলিলাদি জব্দ করেন। জব্দকৃত এসব দলিল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মামলা করবে এনবিআর।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমবার একই সময়ে ভ্যাট গোয়েন্দার ৮টি টিম রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত স্টার কাবাব ও রেস্তোরাঁ গ্রুপের মালিকানাধীন ১১টি ইউনিটে অভিযান পরিচালনা করে। দীর্ঘদিন অনলাইনে ও টেলিফোনে তাদের ইউনিটগুলোর বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
কাঁচা চালান ইস্যু করা, ইসিআর থাকা সত্ত্বেও চালান না দেওয়া, নিজস্ব প্যাডে ও সাদা কাগজে হাতে লেখা বিল প্রদান, মূল্য তালিকায় ভ্যাট অন্তর্ভুক্ত/বহির্ভূত উল্লেখ না করাসহ বিভিন্ন অভিযোগে স্টার কাবাবে অভিযান চালানো হয়।
এনবিআরের মতে, স্টার হোটেল ও কাবাবের মতো বড় প্রতিষ্ঠানগুলো কোটি কোটি টাকা ভ্যাঁট ফাঁকি দেওয়ায় ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো ভ্যাট প্রদানে উৎসাহিত হচ্ছে না। বড় প্রতিষ্ঠানগেুলোকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার লক্ষ্যে এবং ভ্যাট ফাঁকিরোধে এ ধরনের অভিযান পরিচালনার নির্দেশ রয়েছে।
মূসক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী জানান, ভ্যাট গোয়েন্দারা এলিফ্যান্ট রোডে স্টার হোটেল ও রেস্টুরেন্টের বেশ কিছু কাঁচাচালান ইস্যুর প্রমাণসহ হাতেনাতে ম্যানেজারকে ধরেন। একইভাবে ঠাটারি বাজার, ধানমন্ডি, বনানী, কারওয়ান বাজার শাখায় ব্যাপকহারে কাঁচাচালান ইস্যু করছে। এতে প্রতিদিন সরকার লাখ লাখ টাকা ভ্যাট প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। স্টার কাবাব ও বেকারি একটি রেজিস্ট্রেশনের আওতায় দুটো নন ফিসক্যাল ইসিআর ব্যবহার করছে।
ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গোয়েন্দা কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠানটির বাণিজ্যিক দলিলাদি জব্দ করে নিয়ে আসেন। জব্দকৃত দলিলাদি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ফাঁকিকৃত ভ্যাট উদঘাটন করে মামলা দায়ের করা হবে বলে জানান বেলাল হোসেইন চৌধুরী।
উল্লেখ্য, গত ৬ মাসে ভ্যাট গোয়েন্দা দপ্তর প্রায় ৭০টি ভ্যাট ফাঁকির অভিযান পরিচালনা করেছে। এসব অভিযানে ব্যাপক ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়া যায়।