রাজস্ব সমস্যার সমাধানে কলসেন্টারের প্রস্তাব এফবিসিসিআইয়ের
কর ও রাজস্ব প্রদানের ক্ষেত্রে প্রায়ই ব্যবসায়ীরা হয়রানি ও নানা সমস্যার সম্মুখীন হন। এসব সমস্যার সমাধানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) কলসেন্টার স্থাপনের প্রস্তাব করেছেন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ।
আজ সোমবার এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় এ কথা বলেন আবদুল মাতলুব আহমাদ।
এনবিআরের ধারাবাহিক প্রাক-বাজেট আলোচনার অংশ হিসেবে আজ চারটি ব্যবসায়ী সংগঠন অংশ নেয়। এর মধ্যে বাংলাদেশ উইমেন্স চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, ঢাকা উইমেন্স চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ ও ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সঙ্গে আলোচনা হয়।
প্রাক-বাজেট আলোচনায় মাতলুব আহমাদ বলেন, ‘কর ও রাজস্ব প্রদানের ক্ষেত্রে অনেকদিক থেকেই ব্যবসায়ীদের হয়রানি ও সমস্যার অভিযোগ পাওয়া যায়। ব্যবসায়ীরা সরকারকে কর ও রাজস্ব প্রদানের জন্য আগ্রহী হলেও সিস্টেম সমস্যার কারণে তারা হতাশ হয়। এমনকি অভিযোগ জানালেও তাৎক্ষণিকভাবে তার সমাধান নিতে পারে না। এতে করে তারা রাজস্ব প্রদানে নিরুৎসাহিত হয়। দিনে দিনে আমাদের কর ও রাজস্বের পরিধি সম্প্রসারিত হচ্ছে। তাৎক্ষণিকভাবে করদাতাদের এসব সমস্যা সমাধানে একটি কলসেন্টার স্থাপন করা জরুরি।’
মাতলুব আহমাদ আরো বলেন, ‘সরকার ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব একটি বাজেট প্রণয়ন করতে চায়। দেশের ৩৫ শতাংশ লোক এখনো স্থায়ী কর্মসংস্থানের সঙ্গে জড়িত নয়। তাদের কর্মসংস্থানের সঙ্গে জড়িত করতে এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে এবারের বাজেটে বিশেষ দৃষ্টি রাখা দরকার।’
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট সেলিমা আহমাদ বলেন, ‘বর্তমান সরকার নারীবান্ধব সরকার। নারীদের উদ্যোক্তাবান্ধব করতে ব্যক্তিগত করসীমা তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করছি। নারী উদ্যোক্তাদের বিনামূল্যে ট্রেড লাইসেন্স করা ও ট্রেড লাইসেন্সের বার্ষিক কর আগের পরিমাণে পুনর্নির্ধারণের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।’
সেলিমা আহমাদ আরো বলেন, ‘মেলা ও ব্যবসার কাজ শেষে সীমান্ত দিয়ে প্রবেশকালে নারী উদ্যোক্তাদের নানাভাবে কাস্টমস কর্মকর্তারা হয়রানি করেন। দেশের কর আহরণ বাড়াতে কাস্টমসের জটিলতা ও হয়রানি নিরসন করা জরুরি।’ তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া নারী উদ্যোক্তার কর সুবিধা বাড়াতে বিদ্যমান ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে তা ৭ থেকে ৮ শতাংশ করা প্রয়োজন। এতে দেশের উদ্যোক্তা বাড়বে, রাজস্ব আহরণও বাড়বে।’
দেশের প্রস্তাবিত ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য একটি আলাদা অর্থনৈতিক জোন ঘোষণার অনুরোধ জানান সেলিমা আহমাদ।
সেলিমা আহমাদ বলেন, ‘ভারতে কাগজ ও মুদ্রণশিল্পের কর অনেক কম। এ শিল্প নানাভাবে সরকারের কাছ থেকে প্রণোদনা পায়। এর ফলে তারা কম খরচে ছাপার কাজ করতে পারে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষাসহ শিক্ষা খাতের বিভিন্ন বই ছাপানোর ক্ষেত্রে এডিপির পরামর্শ অনুযায়ী আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়। এর ফলে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে আমাদের দেশের এসব কাজ ভারতে চলে যাচ্ছে। ফলে দেশীয় বাজার লোকসান গুনছে। এ অবস্থায় দেশের মুদ্রণশিল্পে ও কাগজ আমদানিতে কর কমানোর প্রস্তাব করছি।’