বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী সড়কের উন্নয়নে প্রকল্প একনেকে অনুমোদন
বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তবর্তী সড়ক ও সেতুর উন্নয়নে ‘ক্রসবর্ডার নেটওয়ার্ক ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (বাংলাদেশ)’ নামে একটি প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এই প্রকল্পের মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে দুই হাজার ৪৭২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।
রাজধানীর শেরে বাংলানগরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আজকের প্রত্যেকটি প্রকল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ছয় হাজার ৯৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ব্যয়ে মোট নয়টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে সরকারি অর্থায়ন দুই হাজার ৫৪৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিল ১৫৫ কোটি ২২ লাখ টাকা ও প্রকল্প সাহায্য থেকে তিন হাজার ৪০০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) সহায়তায় ‘ক্রসবর্ডার নেটওয়ার্ক ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (বাংলাদেশ)’ প্রকল্পের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। এশিয়ান হাইওয়ে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী জরাজীর্ণ সড়ক ও সেতুর উন্নয়ন করা হবে। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ ২০১৬ সালের মে মাস থেকে ২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
মুস্তফা কামাল বলেন, আজকের অনুমোদন পাওয়া অন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হচ্ছে ‘আমিনবাজার–মাওয়া–মংলা ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন’ প্রকল্প। সেতু কর্তৃপক্ষের আপত্তি ও যানবাহন চলাচলে নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে পদ্মা সেতুতে কয়লাভিত্তিক তাপ-বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন টানা হচ্ছে না। এটি এখন টানা হবে পদ্মা সেতু থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে নদীর গভীর দিয়ে। সাভারের আমিনবাজার, মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং (মাওয়া) ও মংলা দিয়ে। আমিনবাজার-মাওয়া-মংলা ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন নির্মাণের মাধ্যমে ভবিষ্যতে মাওয়ায় বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুৎ ইভাকুয়েট করার ব্যবস্থা করা যাবে। এ লক্ষ্যে প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হচ্ছে এক হাজার ৩৫৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।
অনুমতি পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো
দিনাজপুর-চিরিরবন্দর-পার্বতীপুর সড়ক প্রশস্তকরণ (জেড-৫০২৫) প্রকল্প। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা।
ঢাকার শেরে বাংলানগরে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয় ভবন নির্মাণ’। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
নদীতীর সংরক্ষণের মাধ্যমে মেঘনা নদীর ভাঙন থেকে ভোলা জেলার তজুমদ্দিন উপজেলা সদর সংরক্ষণ প্রকল্প। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৪৯ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
পানি ভবন নির্মাণ (প্রথম পর্যায়) প্রকল্প। প্রকল্পটি ব্যয় ধরা হয়েছে ২১০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।
কিশোরগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প। এতে ব্যয় ধারা হয়েছে ৩৪৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্প-প্রথম পর্যায় প্রকল্প। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯০৫ কোটি ৩২ লাখ টাকা।