সব গণমাধ্যমকে একই করনীতির আওতায় আনার দাবি অ্যাটকোর
দেশের সব গণমাধ্যমকে একই করনীতির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মালিকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব টিভি চ্যানেল ওনার্স (অ্যাটকো)। তারা বিদেশি চ্যানেলগুলোকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি দিয়ে এ দেশে চলার অনুমোদন দিতে বলেছে।
আজ শনিবার সকালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় অ্যাটকোর পক্ষ থেকে এসব দাবি জানানো হয়। সভায় একটি সমন্বিত নীতিমালার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেছেন, অর্থ, তথ্য, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং এনবিআর ও অ্যাটকোকে নিয়ে বৈঠক করে এ নীতিমালার ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ঘণ্টাব্যাপী এই আলোচনায় বিদেশি চ্যানেলগুলোর আগ্রাসনে দেশীয় চ্যানেলগুলোর অসম প্রতিযোগিতাসহ বেশ কিছু বিষয় উঠে আসে। তবে আলোচনায় সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পায় করনীতি।
এ সময় অ্যাটকোর প্রেসিডেন্ট এবং এনটিভির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী বলেন, দেশের স্বার্থে এবং মানুষের কল্যাণেই কাজ করছে টেলিভিশনগুলো। তিনি বলেন, ‘সরকার পত্রিকাকে টাকা দিয়ে অ্যাড দিচ্ছে। কিন্তু টেলিভিশনকে বিনা টাকায় দিয়ে দিচ্ছে এবং বলে দিচ্ছে প্রাইম টাইমে চালানোর জন্য। আমরা করছি। কারণ ভ্যাট আমরা দিতে চাই। ট্যাক্স দিতে চাই। না হলে দেশ চলবে কীভাবে। অবশ্যই দিতে হবে। কিন্তু সেটাকে দিতে হবে, সমন্বয় করতে হবে, সব জায়গায় একই রকমভাবে।’
অ্যাটকোর সাধারণ সম্পাদক ও চ্যানেল আইয়ের পরিচালক (বার্তা) শাইখ সিরাজ বলেন, ‘ফিফটিন (১৫) পার্সেন্ট ভ্যাট আমরা দিচ্ছি। এই ভ্যাটটা এই মাসের হিসাবটা সম্পূর্ণ করেই আমরা দিয়ে দিচ্ছি। কিন্তু এই টাকাটা, যে বিজ্ঞাপনের বিপরীতে ভ্যাটটা প্রদান করলাম সেই টাকাটা হয়তো আমি এই মাসেই পাচ্ছি না। পত্রিকা কিন্তু ভ্যাটটা দিচ্ছে সে নিজে না। বিজ্ঞাপনদাতা পত্রিকার ভ্যাটটা দিয়ে দিচ্ছে। তাহলে মিডিয়া তো টেলিভিশন। একই জিনিস। তাহলে তার জন্য নিয়ম কী? আমি কেন ভ্যাট পরিশোধ করব? আমিও তো বলতে পারি, (পত্রিকার মতো) ওই সিলটা দিতে পারি, বিজ্ঞাপনদাতা ভ্যাট পরিশোধ করবে।’
গণমাধ্যম সব সময় দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে অ্যাটকোর পক্ষ থেক করারোপের ক্ষেত্রে বিদেশি চ্যানেলগুলোর ব্যাপারে একটি নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানানো হয়।
আর এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান গণমাধ্যমের করনীতিসহ বেশ কিছু সমস্যার কথা স্বীকার করেন। তিনি সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘বাজেটের শেষে... বাজেটে তো কিছু কিছু বিষয় আমরা চিন্তা করব। কিন্তু আমাদের একটা গাইডলাইন বা একটা নীতিমালা তৈরি করার বিষয় আছে। অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ইতিমধ্যে একটি সভা হয়েছিল। আপনারা অনেকেই এসেছিলেন। সেখান থেকে আমরা অনেকগুলো বার্তা পেয়েছি। এই ধরনের আলাপ-আলোচনা কিন্তু চলমান প্রক্রিয়া।’
এই আলোচনায় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার এবং কর আহরণে দেশীয় টিভি চ্যানেলগুলোর অবদানের কথা উল্লেখ করে এনবিআর চেয়ারম্যান ধন্যবাদ জানান অ্যাটকোকে।