কর আদায় বাড়াতে ফাঁকি ঠেকাতে হবে
আগামী অর্থবছরে (২০১৬-১৭) আয়কর, মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও শুল্ক মিলিয়ে প্রায় দুই লাখ কোটি টাকারও বেশি কর আদায়ের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর আদায়ের লক্ষ্য বড় হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কর আদায়ের আওতা বাড়ানোর পাশাপাশি কর ফাঁকি ঠেকাতে এনবিআরকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
চলতি অর্থবছরে (২০১৫-১৬) বড় অঙ্কের কর আদায়ের লক্ষ্য ছিল এনবিআরএরের সামনে। কিন্তু এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পিছিয়ে পড়ায় পরবর্তী সময়ে কাটছাঁট করে দেড় লাখ কোটি টাকার কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সেই লক্ষ্য থেকেও বেশ দূরে আছে এনবিআর। অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে আদায় হয়েছে এক লাখ পাঁচ হাজার কোটি টাকা। তাই বছর শেষে রাজস্ব আদায়ে এনবিআর যে ঘাটতিতে পড়ছে সে বিষয়টি মোটামুটি নিশ্চিত।
কর আদায় বাড়ানোর ব্যাপারে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, ‘আমাদের আয়করদাতার পরিধি বড় না হলে আদায় বাড়বে না। আয়কর দেওয়ার মতো যোগ্য লোকের আছে পৌঁছাতে হবে। এমন মানুষদের আওতার মধ্যে আনার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এর জন্য আলাদা প্রচেষ্টা লাগবে।’
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘কর আদায়ের আওতা, পরিধি, ব্যক্তি বেড়েছে। সে ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়েনি। আর প্রযুক্তিও কাজে লাগানো হয়নি। সেদিক থেকে আমাদের দুর্বলতা রয়েছে গেছে। সেটাও আমাদের দেখতে হবে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্বচ্ছতার চ্যালেঞ্জ ও ব্যবসায়ী মহলের কিছু বিরোধিতা সত্ত্বেও আসছে অর্থবছরে বাস্তবায়ন হতে পারে নতুন মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট আইন। এর মাধ্যমে আয়করের আওতা বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করবে সরকার। আগামী অর্থবছরে দুই লাখ তিন হাজার কোটি টাকা কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হতে পারে এনবিআরের সামনে।
ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের প্রকৃত কর আদায়ের চেয়ে আগামী অর্থবছরে ৩০ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি প্রয়োজন পড়বে। এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আগামীতে ভ্যাট আইন কার্যকর হবে। প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়িয়ে এটাকে বাস্তবায়ন করতে হবে। মানুষকে এর জন্য প্রস্তুত করতে হবে।’
আবদুল মজিদ বলেন, ‘বড় বড়রাই বড় বড় ফাঁকি দিচ্ছে। সেগুলো এক একটা বিরাট বিরাট অঙ্ক (অর্থ ফাঁকি)। সেগুলোর দিকে নজর দিতে হবে। কোর্টে অনেক মামলা আছে। সেগুলোর রায় হলে অনেক অর্থ উদ্ধার হবে। এভাবে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করতে হবে।’