১৫ শতাংশ শুল্ক বাতিলের দাবি দোকান মালিক সমিতির
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের স্বার্থে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) বিধান বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি। তাঁদের দাবি, নতুন মূসক আইনে প্যাকেজ আকারে মূসক দেওয়ার বিধান করা হোক।
এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা কামনা করছে সংগঠনটি।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি তুলে ধরেছে সংগঠনটি। এতে প্যাকেজ মূসকের দাবিতে আগামীকাল সোমবার দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত সারা দেশে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।
দোকান মালিক সমিতির মহাসচিব মো. শাহ আলম খন্দকার বলেন, ‘ক্ষুদ্র দোকান মালিকদের জন্য খুবই কষ্টসাধ্য হবে হিসাব করে বা ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্ট্রারের (ইসিআর) মাধ্যমে ক্রেতার কাছ থেকে মূসক আদায় করা। এতে রাজস্ব আদায় যেমন বাধাগ্রস্ত হবে, তেমনি ব্যবসায়ীরা হয়রানির শিকার হবেন। তাই দেশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের স্বার্থে নতুন মূসক আইনে প্যাকেজ মূসক বহাল রাখার দাবি জানাচ্ছি।’
শাহ আলম আরো বলেন, ‘২০১৩ সালে প্যাকেজ ভ্যাট প্রথা বাতিল করার প্রস্তাব সংসদে উপস্থাপন করা হলে ব্যবসায়ীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বাজেটের ওপর সমাপনী বক্তৃতায় প্যাকেজ প্রথা বহাল রাখার নির্দেশ দেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, নতুন ভ্যাট আইনে প্যাকেজ ভ্যাট প্রথা রাখা হয়নি।’
প্যাকেজ ভ্যাট বহাল রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ আশা করেন শাহ আলম।
দোকান মালিক সমিতি চেয়ারম্যান এস এ কাদের কিরণ বলেন, ‘আমাদের এখনো এমন কোনো অবকাঠামো গড়ে ওঠেনি যে ইসিআর পদ্ধতির মাধ্যমে ভ্যাট দেব। মালিক নিজেই ব্যবসা চালায়। তাই ইসিআর পদ্ধতির ভ্যাট আদায়ের চিন্তা বাস্তবসম্মত নয়। যারা একদরে পণ্য বিক্রি করে, তাদের জন্য হয়তো এ পদ্ধতি প্রযোজ্য হবে। কিন্তু দাম দরাদরি করে পণ্য বিক্রি করে তাদের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতিতে ভ্যাট পরিশোধ করা সম্ভব না।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দোকান মালিক সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান আবুল কাশেম সরকার, কামাল হোসেন প্রমুখ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সব ধরনের ব্যবসা ও সেবার ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ হারে মূসক আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে। এত দিন ব্যবসায়ীরা প্যাকেজ পদ্ধতিতে মূসক দিলেও নতুন আইনে এটি থাকবে না। নতুন আইন বাস্তবায়নে দীর্ঘদিন ধরেই ব্যবসায়ীরা বিরোধিতা করে আসছেন। আইনটি পর্যালোচনা করতে সরকার ও ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে যৌথ কমিটিও গঠন করা হয়। ওই কমিটি ১৫ শতাংশের পরিবর্তে হ্রাসকৃত হার রাখাসহ সাত দফা সুপারিশ করে। ব্যবসায়ীরা ওই সাত দফা বাস্তবায়নসহ প্যাকেজ পদ্ধতিতে মূসক বহাল রাখার দাবি করে আসছেন।
দোকান মালিকদের দাবির বিষয়ে ১৫ মে এফবিসিসিআইর সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ স্বাক্ষরিত একটি চিঠি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এখনো কোনো ইতিবাচক সাড়া না আসায় মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন ব্যবসায়ীরা।