বিশ্ব খাদ্য সংস্থার পূর্বাভাস

উৎপাদন বাড়বে, চাল আমদানি কমবে

Looks like you've blocked notifications!

চলতি অর্থবছরে (জুলাই ২০১৪-জুন ২০১৫) বাংলাদেশ সাত লাখ টন চাল আমদানি করতে পারে, যা গত অর্থবছরের চেয়ে ৩৬ শতাংশ কম। বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) পূর্বাভাসে এ কথা বলা হয়েছে।
 
দেশের মোট চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম হওয়ায় গত অর্থবছরে ১১ লাখ টন চাল আমদানি করতে হয়েছিল। তবে এফএও মনে করছে, এবার উৎপাদন বাড়বে।
 
এফএওর তথ্য অনুসারে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের খাদ্যশস্য আমদানি ৩ দশমিক ৭ শতাংশ কমে ৩৬ লাখ ৮০ হাজার টনে দাঁড়াবে। গত বছর আমদানি করা হয়েছিল ৩৮ লাখ ২০ হাজার টন খাদ্যশস্য।
 
২০১৩ সালের চেয়ে ২০১৪ সালে বাংলাদেশে তিন মৌসুমের ধান উৎপাদন ১ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়ে। এফএওর তথ্য অনুসারে, গত বছর আমন (এপ্রিল-ডিসেম্বর), আউশ (ফেব্রুয়ারি-আগস্ট) ও বোরো (অক্টোবর-মে) মৌসুমে গড়ে পাঁচ কোটি ২২ লাখ টন ধান উৎপাদন হয়, যা থেকে প্রায় তিন কোটি ৪৯ লাখ ৭০ হাজার টন ছাটাই চাল পাওয়া যায়। এর আগের বছর পাঁচ কোটি ১৫ লাখ ৩৯ হাজার টন ধান উৎপাদন হয়েছিল, যা থেকে গড়ে তিন কোটি ৪৫ লাখ ৩১ হাজার টন ছাটাই চাল পাওয়া যায়। বাংলাদেশে তিন মৌসুমে বার্ষিক যথাক্রমে ৩৮, ৭ ও ৫৫ শতাংশ হারে ধান উৎপাদন হয়ে থাকে।
 
কিছু দিনের মধ্যেই বোরো ধান চাষের আয়োজন শুরু হবে। পর্যাপ্ত সেচ ব্যবস্থা, বীজ, সার, জ্বালানি-বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রয়োজন হবে। এগুলো পর্যাপ্ত সরবরাহ করা গেলে উৎপাদন আশানুরূপ হবে বলে এফএও মনে করে। সংস্থাটি বলেছে, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে প্রয়োজনীয় উপকরণ (সার ও জ্বালানি) সররাহ ব্যাহত হওয়ায় দেশের উত্তরাঞ্চলে প্রত্যাশা অনুযায়ী ধান উৎপাদন নাও হতে পারে। এ বছর দেশের ৪৮ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ বাড়বে।
 
দেশে চালের দাম ২০১৪ সালের মার্চের পর থেকে নিম্নমুখী প্রবণতায় ছিল। তবে গত বছর আগস্টে ঘুরে দাঁড়ায়। গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রতিটন চালের দাম দাঁড়ায় ৩১ হাজার ৬৯৭ টাকা। এর পর আবারও কমতে থাকে। বর্তমানে প্রতিটন চালের দাম দাঁড়িয়েছে ২৬ হাজার ৪৬৩ টাকায়, যা চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির (২৭ হাজার ৭৫০ টাকা) চেয়ে ৫ শতাংশ কম। আর গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৬ শতাংশ কম। 

৩ মার্চ খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম জানান, চলতি বছর মে থেকে আগস্টের মধ্যে ১০ লাখ টন বোরো ধান ও এক লাখ টন চাল কিনবে সরকার। প্রতি কেজি ২২ টাকা দামে ধান ও প্রতি কেজি ৩২ টাকা দামে চাল কেনা হবে।
 
বাংলাদেশে চলতি অর্থবছরে ছাটাই চাল উৎপাদন বাড়তে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে বিশেষায়িত অনলাইন সংবাদ মাধ্যম ওরিজার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। গত সোমবারের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ অর্থবছরে ছাটাই চাল উৎপাদন হবে তিন কোটি ৪৬ লাখ টন, যা আগের অর্থবছরে হয় তিন কোটি ৪৩ লাখ ৯০ হাজার টন। ২০১৪ সালে ৬ লাখ ৭৮ হাজার টন চাল আমদানি করা হয়েছিল। তবে চলতি বছর বাংলাদেশ গড়ে পাঁচ লাখ টন চাল আমদানি করতে পারে।
 
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, দেশের পাইকারি বাজারে বর্তমানে মোট চালের দাম পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। ২০১০ সালে প্রতি কেজি মোট চালের দাম ছিল ২৭-২৮ টাকা, যা বর্তমানে ২২-২৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে গত বছর ৩৪-৩৬ টাকায় মোট চাল বিক্রি হয়েছিল।
 
ব্যক্তি খাতের আমদানি কমাতে এরই মধ্যে খোলা বাজারে (ওএমএস) গড়ে প্রতি কেজি চালের দাম ২২ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। আগে খোলা বাজারে চালের দাম ছিল গড়ে ২৬ টাকা। গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।