নাগরিক সংলাপ

টেকসই উন্নয়নে প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতা, দক্ষ যুবসমাজ

Looks like you've blocked notifications!
এসডিজি বাস্তবায়ন নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটরিয়ামে আয়োজিত এক সংলাপে বিশিষ্ট নাগরিকরা বক্তব্য দেন। ছবি : এনটিভি

টেকসই উন্নয়ন অর্জন করতে হলে সরকারি প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার পাশাপাশি দেশের যুবকদের দক্ষ করে গড়ে তোলা জরুরি বলে মনে করছেন দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা। এ ছাড়া স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি যুবসমাজকে সঠিক পথে নিতে মানসম্পন্ন শিক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তাঁরা।

জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়ন নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটরিয়ামে আয়োজিত এক নাগরিক সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন।

‘বাংলাদেশ প্রেক্ষিতে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ১৬, শান্তি ও নিরাপত্তা, মানবাধিকার ও সুশাসন’ শিরোনামের ওই সংলাপের আয়োজন করে এসডিজি বাস্তবায়ন নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ।

এসডিজির ১৭টি অভীষ্ট লক্ষ্যের মধ্যে ১৬-তে যেসব লক্ষ্য অর্জনের কথা বলা হয়েছে তার অন্যতম হচ্ছে, অংশগ্রহণমূলক শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠন, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। আর এসব অর্জনে সরকারকে সবার আগে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি দূর করার তাগিদ দেন বিশিষ্টজন। এ আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা আরো বলেন, সবার আগে দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আজকাল দেখতে পাচ্ছি অযৌক্তিক প্রকল্প ব্যয়। এটা দুর্নীতির বড় ধরনের চেহারা হিসেবে বাংলাদেশে আবির্ভূত হয়েছে। এই অযৌক্তিক প্রকল্প ব্যয়ের মাধ্যমে দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ যদি হয়ে যায়, সেটা হলে কিন্তু আমরা অনেক পেছনে পড়ে যাব।’  

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী বলেন, ‘বিনিয়োগের খরচ কেবল বেড়ে চলেছে। এর প্রধান কারণ দুর্নীতি। দুর্নীতি এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ছে।’   

পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘দুর্নীতি নেই, আমি বলব না। তবে কী পরিমাণ দুর্নীতি আছে, সেটা আমি জানি না। যেভাবে সংখ্যা (আপনারা) বলেন, এটা কোন পরিসংখ্যান ব্যুরো থেকে তথ্য নিয়ে বলেন, তা আমি জানি না। আমরা সবাই ভালো। আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে ভালো। যেহেতু আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে ভালো, আমি সবাইকে ভালো মনে করি।’

বিশেষজ্ঞদের মতে, এসডিজিকে এগিয়ে নিতে প্রয়োজন একটি দক্ষ যুবসমাজ। আর সে জন্য প্রয়োজন মানসম্মত শিক্ষাব্যবস্থা। যুবসমাজকে সঠিক পথে নিতে সামাজিক মূল্যবোধ গড়ে তোলার তাগিদ দেন তাঁরা।

সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী বলেন, ‘বড় কিছু যদি করতে চান, তাহলে কর্ম সৃষ্টি করতে হবে। তা না হলে আমি দুঃখিত যে এসডিজির কিছুই হবে না।’

পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি যেটি আলোচনা হচ্ছে সেটি হচ্ছে, যুবসমাজ বিপথে চলে গেছে বা চলে যাচ্ছে। তাদের মূল্যবোধটা আবার জাগ্রত করতে পারি, তাহলে আমি মনে করি আমরা সফল হব।’

বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে এসডিজি-১৬ অর্জনে একটি পূর্ণাঙ্গ দেশজ কৌশল প্রণয়নে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিশেষজ্ঞরা।