বিপিও খাত থেকে ১০০ কোটি ডলার আয়ের আশা অর্থমন্ত্রীর

Looks like you've blocked notifications!
রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০১৬’ সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের বিজনেস প্রসেসিং আউটসোর্সিং (বিপিও) খাত থেকে ২০২১ সালে মধ্যে ১০০ কোটি মার্কিন ডলার আয়ের আশা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০১৬’ সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন।

দুই দিনব্যাপী বিপিওর সম্মেলন যৌথভাবে আয়োজন করে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কলসেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্য)। দেশে দ্বিতীয় বারের মতো এ সম্মেলন হলো। বাক্যর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘২০২১ সালের মধ্যে বিপিও খাত থেকে এক বিলিয়ন (১০০ কোটি) ডলার  আয়ের আশা করছি। বর্তমানে এ খাত থেকে আয়ের পরিমাণ ১৮ কোটি ডলার। ২০১৫ সালে এর পরিমাণ ছিল ১৩ কোটি ডলার।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের তরুণদের স্বপ্ন দেখতে হবে। স্বপ্নহীন বা গন্তব্যহীন জাতি কোনো দিন ভালো করতে পারে না। বর্তমান সরকার আইসিটি খাতে বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। পরিকল্পনাগুলো বাস্তবে রূপ দেওয়াই সরকারের লক্ষ্য। সরকার আইসিটি খাতে তরুণদের প্রশিক্ষণ দিয়ে যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলছে।’

২০২১ সালের মধ্যে বিপিও খাতে এক লাখ তরুণের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি স্বপ্ন দেখি অল্প দিনের মধ্যে আমরা বাংলাদেশ থেকে মাইক্রোসফট, অ্যাপল, গুগলের মতো তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে পারবে।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সম্মেলনে বিদেশিরা এসে আমাদের বলেছেন বাংলাদেশের সবকিছু ঠিক আছে। এ দেশের তরুণরা রেডি। এটাই আমাদের জন্য বড় স্বীকৃতি। আমরা যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণা দেই তখন আমরা কোনো রূপরেখা ঠিক করে দেইনি। আমরা জানতাম তরুণরাই এসব ঠিক করে নেবে। আমাদের ভাবনা সত্যি হয়েছে, তরুণরাই তাদের গন্তব্য ঠিক করে নিয়েছে।’ 

সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘তরুণদের প্রযুক্তিক্ষেত্রে আগ্রহী করে গড়ে তুলতে হবে। তরুণরাই আগামীর ভবিষ্যৎ। তরুণরা এগিয়ে না এলে দেশ এগিয়ে যাবে না। পলক বলেন, আইসিটি বিভাগের বাজেট শতকরা ৫০ ভাগ বেড়েছে। আমাদের দেশের বাজারও বড় হয়েছে।’

পলক বলেন, বিশ্বের যেসব দেশ বিপিও খাতে ভালো করেছে তারা সবাই নিজেদের অভ্যন্তরীণ খাতের বিপিও শিল্পকে শক্তিশালী করেছে। যেমন ভারতের চলতি বছরের লক্ষ্যমাত্রা ১২০ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে ২০ বিলিয়ন ডলারই আসবে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে। তাই আমাদের বিপিও খাতকে অভ্যন্তরীণ মার্কেটেও শক্তিশালী করতে হবে। এ লক্ষ্যে আমরা নিয়মিতভাবে বিপিও সামিট আয়োজন করছি।’

বিপিও সামিটের মাধ্যমে বিশ্বেরর কাছে বাংলাদেশের দক্ষতার কথা তুলে ধরা হচ্ছে বলে জানান জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেন, বিশ্বে এ খাতের সাফল্য তুলে ধরার পাশাপাশি আমাদের স্থানীয় সরকারি-বেসরকারি সেক্টরে বিপিও খাতের সম্প্রসারণ। বাংলাদেশের বিপিও সেক্টরের সাফল্যের গল্পগুলো আমরা সবাইকে জানাতে চাই। দেশের তরুণদের কাছে এই সেক্টরকে অন্যতম একটি কাজের ক্ষেত্র হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিতে চাই।’

সমাপনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বেসিসের সভাপতি মোস্তাফা জব্বার, আইসিটি বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার, আইসিটি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বনমালী ভৌমিক ও বাক্যের সভাপতি আহমাদুল হক।

সমাপনী অনুষ্ঠানের শেষে ছিল সিএক্সও নাইট। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বিপিও খাতে বিশেষ অবদান রাখায় একটি বিদেশি ও ৭টি দেশি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়।

এবারের সম্মেলনে প্রায় ২৫ হাজার দর্শনার্থী অংশগ্রহণ করেছে। বিদেশি ২৩ জন বক্তাসহ সম্মেলনের মোট বক্তা ছিলেন ৭৭ জন। সামিট উপলক্ষে বিপিও খাতে চাকরি প্রত্যাশীদের প্রায় ২১ হাজার বায়োডাটা জমা পড়েছে।