এফবিসিসিআই নির্বাচন : উন্নয়ন পরিষদের ইশতেহার

কেউ দুর্নীতি করবে না, গ্যারান্টি দিলাম : মাতলুব আহমাদ

Looks like you've blocked notifications!
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) দ্বিবার্ষিক (২০১৫-১৭) নির্বাচনে সভাপতি পদপ্রার্থী ও নিটল-নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল মাতলুব আহমাদ। ছবি : এনটিভি

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) দ্বি-বার্ষিক (২০১৫-১৭) নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বী ও নিটল-নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেছেন, ‘নির্বাচনে জিতলে আমরা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেব না। এফবিসিসিআইয়ের কোনো পরিচালক দুর্নীতি করবে না। গ্যারান্টি দিলাম।’ আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলের বেলকুনি হলে উন্নয়ন পরিষদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণার পর সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। 

সংবাদ সম্মেলনে আবদুল মাতলুবের নেতৃত্বাধীন উন্নয়ন পরিষদের প্যানেলের সব সদস্যসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী নেতারা উপিস্থত ছিলেন। 

চার পৃষ্ঠার ইশতেহার পড়ে শোনান মাতলুব আহমাদ। সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নিয়ে আসা; প্রতিটি জেলায় শিল্পনগরী গড়ে তোলা এবং সবুজ শিল্পায়নের সূচনা; প্রতিটি চেম্বারের অধীনে ট্রেড লাইসেন্স প্রদানের ক্ষমতা; টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করা; জেলা চেম্বারের নিজস্ব ভবন প্রতিষ্ঠা ও পুরাতন ভবন সংস্কার এবং আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি সম্পন্ন করে গড়ে তোলা; কার্যকরী গবেষণা সেল তৈরি; বন্দর ও বন্দনগরীর উন্নয়ন; এফবিসিসিআইয়ের সদস্যদের বিশেষ সুবিধা প্রদান; ডিজিটাল সেবা কর্মসূচি; রপ্তানি বৃদ্ধি; নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও নারী উদ্যোক্তাদের সুবিধা প্রদান; ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য একটি সেবাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা; প্রতিবন্ধী ও শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ সহায়তা সেল; ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ এবং পর্যটন খাতের উন্নয়ন নিয়ে অঙ্গীকার তুলে ধরা হয়েছে উন্নয়ন পরিষদের ইশতেহারে। 

ইশতেহার ঘোষণা শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন মাতলুব আহমাদ। 

সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে আনা অসম্ভব বলে অনেক বিষেশজ্ঞ মত দিয়েছেন। আপনারা কীভাবে এটা করবেন– এ প্রশ্নের জবাবে মাতলুব আহমাদ বলেন, ‘এটার জন্য আমাদের সুস্পষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে। আমি মনে করি, এটা সম্ভব। সবার জন্য সুদের হার ৯ শতাংশ করা হবে, এটা আমার কমিটমেন্ট।’ 

এফবিসিসিআইয়ের পরিচালকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় দুর্নীতির নানা অভিযোগ ওঠে। আপনাদের ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম ঘঠবে কি– এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে মাতলুব আহমাদ বলেন, ‘আমরা মানুষকে সম্মন করি, করব।নির্বাচনে জিতলে আমরা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেব না। এফবিসিসিআইয়ের কোনো পরিচালক দুর্নীতি করবেন না। গ্যারান্টি দিলাম।’   

এ ছাড়া শেয়ারবাজার, এফবিসিসিআইয়ের নিজস্ব ভবন নির্মাণ ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় ভূমিকা নিয়ে নিজের মতামত তুলে ধরেন মাতলুব আহমাদ। 

আবদুল মাতলুব আহমাদ তাঁর প্যানেলের অ্যাসোসিয়েশন ও চেম্বার গ্রুপের সদস্যদের পরিচয় করিয়ে দেন। 

অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপের ১৬ প্রার্থী হলেন- এফবিসিসিআইয়ের বর্তমান সহসভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি শামীম আহসান, বাংলাদেশ কোল্ডস্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের মো. মুনতাকিম আশরাফ, বাংলাদেশ ইলেকট্রিক মার্চেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের এনায়েত হোসেন চৌধুরী, বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পমালিক সমিতির আবদুর রাজ্জাক, বাংলাদেশ ফ্রুটস ভেজিটেবল অ্যান্ড এলাইড প্রোডাক্টস এক্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, বাংলাদেশ ফার্নিচার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের কে এম আকতারুজ্জামান,  গ্রে অ্যান্ড ফিনিসড ফ্যাব্রিক্স মিলস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের হারুন-অর-রশিদ, বাংলাদেশ পেপার ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের মো. শফিকুল ইসলাম ভরসা, বাংলাদেশ পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ ও বিপণন সমিতির মো. আমিন হেলালী,  বাংলাদেশ প্লাস্টিক প্যাকেজিং রোল ম্যানুফ্যাকচারার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের আবু মোতালেব, বাংলাদেশ রিকন্ডিশন ভেহিক্যাল ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের মো. হাবিব উল্ল্যাহ ডন, বাংলাদেশ সেকেন্ডারি কোয়ালিটি টিনপ্লেট ইমপোর্টার্স অ্যান্ড মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের মো. নিজাম উদ্দিন রাজেশ, জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প সমিতির এম শোয়েব চৌধুরী, আউটসোর্সিং অ্যান্ড লজিস্টিক সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের মো. আবু নাসের ও প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রিজ  অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের রাব্বানী জব্বার। 

চেম্বার গ্রুপের ১৬ প্রার্থী হলেন- নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির মো. বজলুর রহমান, বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির হাসিনা নেওয়াজ,  বরিশাল মেট্রোপলিটন চেম্বারের মো. নিজাম উদ্দিন,  চুয়াডাঙ্গা চেম্বারের দীলিপ কুমার আগারওয়ালা, ফরিদপুর চেম্বারের মাহবুবুর রহমান খান, ফেনী চেম্বারের এ কে এম সাহিদ রেজা, গাইবান্ধা চেম্বারের মো. আবুল খায়ের মুরসালিন পারভেজ, গাজীপুর চেম্বারের মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত সরকার, গোপালগঞ্জ চেম্বারের শেখ ফজলে ফাহিম, জামালপুর চেম্বারের রেজাউল করিম রেজনু, কিশোরগঞ্জ চেম্বারের গাজী গোলাম আসরিয়া, ময়মনসিংহ চেম্বারের মো. আমিনুল হক শামীম, নরসিংদী চেম্বারের প্রবীর কুমার সাহা, সুনামগঞ্জ চেম্বারের মো. নুরুল হুদা মুকুট, কক্সবাজার চেম্বারের মো. হেলাল উদ্দিন চৌধুরী ও মেহেরপুর চেম্বারের নাগিবুল ইসলাম দিপু। 

মোট ৫২ জন পরিচালক নিয়ে এফবিসিসিআইয়ের বোর্ড গঠিত হবে। এর মধ্যে ৩২ জন পরিচালক সরাসরি নির্বাচিত হবেন। বাকি ২০ জন পরিচালক দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন থেকে মনোনীত হয়ে বোর্ডে যুক্ত হবেন। 

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২৩ মে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচিত পরিচালকরা ২৫ মে সংগঠনের সভাপতি, প্রথম সহসভাপতি ও সহসভাপতি নির্বাচিত করবেন। 

এ লক্ষ্যে গত ৩০ মার্চ প্রাথমিক ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে মোট দুই হাজার ১৯৩ জনকে প্রাথমিকভাবে ভোটার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭৮টি চেম্বার থেকে ৪৩০ জন ও ৩৫৫টি অ্যাসোসিয়েশন থেকে ১ হাজার ৭৬৩ জনকে ভোটার করা হয়েছে।