ব্যাংকে নেই নতুন নোট, ভরপুর খোলাবাজারে

Looks like you've blocked notifications!

প্রতি বছরে ঈদের আগে বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন টাকার নোট বাজারে ছাড়ে। এবারেও নতুন টাকার নোট বাজারে ছেড়েছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। এতে নতুন টাকার নোট সংকটে পড়ে। ফলে ঢাকায় নতুন নোট বিনিময় করা যাবে বেঁধে দেওয়া এমন শাখাগুলোতে গিয়েও নতুন টাকার নোট পাননি অধিকাংশ গ্রাহক। তাই নতুন নোট সংগ্রহে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ে গ্রাহকরা বিকল্প পথ হিসেবে খোলাবাজার বেছে নিয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে গ্রাহকদের সাথে আলাপে এমন তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, “এবছর ঈদুল ফিতরের আগে ঢাকা অঞ্চলের বিভিন্ন ব্যাংকের ৮০টি শাখায় নতুন নোট সরবরাহ করা হয়। এসব শাখায় ১০০ কোটি টাকার মতো নতুন নোটের সরবরাহ করা হয়। আবার ঢাকার বাইরের বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে আরও ১০০ কোটি টাকা সরবরাহ করা হয়।” 

বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, “এবার ঈদকে সামনে রেখে সারাদেশে নতুন নোট সরবরাহ করা হয় ২০০ কোটি টাকা। কিন্তু গত বছরে ঈদুল ফিতরের আগে বাংলাদেশ ব্যাংক ১৫ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট বাজারে ছেড়েছিল। এরও আগের বছরে ঈদুল ফিতরের আগে বাজারে ছেড়েছিল ২৩ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট।”

রাজধানীর আরামবাগের বাসিন্দা মোমিন আশরাফ বলেন, ঈদের আগে সোনালী ব্যাংকের রমনা করপোরেট শাখা থেকে দুই লাখ টাকা তুলতে যাই। কিন্তু সেখানে আমাকে দেওয়া হয় এক হাজার টাকার নতুন নোটের বান্ডিল ও এক হাজার টাকার পুরানো নোটের বান্ডিল (প্রতি বান্ডেলে সমপরিমাণ একশ নোট)। পাঁচশ, একশ ও পঞ্চাশ টাকার নতুন নোটের বান্ডিল চাইলে ব্যাংকের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা দেননি। 

পুরোনো টাকার নোট দিয়ে নতুন টাকার নোট বিনিময় করতে আসা সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের বসুন্ধরা সিটি (পান্থপথ) শাখার গ্রাহক জব্বার চৌধুরী বলেন, ঈদের আগে ব্যাংকটিতে নতুন টাকা নিতে এসেছিলাম। কিন্তু নতুন টাকার নোট না পেয়ে ফিরে আসতে হয় আমাকে। পড়ে খোলাবাজার থেকে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করে আমাকে কিনতে হয়। ব্যাংকে নাই কিন্তু খোলাবাজার নতুন টাকার রমরমা ব্যবসা জানিয়ে সাউথইস্ট ব্যাংকের কর্পোরেট শাখা গ্রাহক শরাফদ বলেন, ব্যাংকটিতে গিয়ে নতুন টাকার নোট পাইনি। ব্যাংকটির কর্মকর্তারা আমাকে বলেছে, নতুন নোট শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু খোলাবাজারে নতুন নোটের অভাব নেই। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার নতুন নোট সরবরাহ  কম হয়েছে। ঈদে নতুন নোট হিসেবে চাহিদার শীর্ষে একশ টাকার নোট। কিন্তু হিসেব সুবিধার কারণে ছোট নোট আমরা বেশি দিয়ে থাকি।

প্রতিবছরের মতো এবারও ঈদকে সামনে রেখে ৫, ১০, ২০, ৫০ ও ১০০ টাকার নতুন নোট বাজারে ছাড়া হয়। ১০ টাকার একটি বান্ডিলের (১০০টি নোট) মূল্যমান ১ হাজার টাকা। নতুন নোটের এমন একটি বান্ডিল খোলাবাজার থেকে কিনলে ১ হাজার ১৫০ টাকা দিতে হয়। নতুন নোটের প্রতি বান্ডিলে ক্রেতাদের বাড়তি ১৫০ টাকা খরচ করতে হয়। অনেকক্ষেত্রে এর চেয়ে বেশি অর্থ গুণতে হয়েছে অনেককেই। শুধু ১০ টাকা নয়, খোলাবাজার থেকে কিনলে সব ধরনের নোটের জন্যই বাড়তি দাম দিতে হয়।