জুলাইয়ে প্রবাসী আয়ে বড় ধাক্কা
বাংলাদেশে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স আসা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। গত ১৪ থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ৫৮ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার। আলোচিত সময়ে প্রতিদিন গড়ে এসেছে চার কোটি ২০ লাখ ডলার। অথচ, জুলাইয়ের প্রথম ১৩দিনে প্রবাসী আয় এসেছিল ৯৭ কোটি ৮৬ লাখ ডলার। সেই হিসেবে ওই প্রথম ১৩ দিনে প্রতিদিন গড়ে প্রবাসী আয় এসেছিল সাত কোটি ৫২ লাখ ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রবাসী আয় সংক্রান্ত হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জুলাই মাসের প্রথম ১৩দিনের যে পরিমাণ প্রবাসী আয় এসেছিল, সর্বশেষ ১৪ দিনে এসেছে তার চেয়ে ৩৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ কম। আর এই আয় প্রতিদিন গড়ে তিন কোটি ৩২ লাখ ডলার করে কমেছে। এদিকে গত বছরের (২০২৩ সাল) ১ থেকে ২৪ জুলাই দেশে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৫৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার। সেই হিসেব চলতি বছরের (২০২৪ সাল) ১ থেকে ২৭ জুলাই একই সময়ে এসেছে ১৫৬ কোটি ৭৪ ডলার।
গত জুন মাসে রেকর্ড পরিমাণ প্রবাসী আয় পেয়েছিল দেশ। এক মাস না যেতে তার উল্টো চিত্র দেখা গেছে। জুলাইয়ে পাঁচদিন (১৯ থেকে ২৩ জুলাই) ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় প্রবাসী আয় উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। প্রবাসী আয়ের এই নেতিবাচক প্রভাব দেশের রিজার্ভের ওপর চাপ তৈরি হবে, এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমন অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে বিভিন্ন কৌশলে যেকোনো মূল্যে প্রবাসী আয় বাড়াতে কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই মধ্যে নির্ধারিত রেটের চেয়ে বেশি দামে ডলার কিনতে মৌখিকভাবে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার গত ১৯ জুলাই রাত থেকে কারফিউ জারি করে। এর ফলে গত মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) পর্যন্ত ব্যাংক বন্ধ ছিল। এসময় ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় ব্যাংকের অনলাইন লেনদেন পুরো বন্ধ ছিল। দীর্ঘ বন্ধের পর গত ২৪ জুলাই থেকে ব্যাংকের কার্যক্রম চালু হয়। অবশ্য সেইদিন ব্যাংকের লেনদেন চলে চার ঘণ্টা (বেলা ১১টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত)। ব্যাংক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় পাঁচদিন (১৯ থেকে ২৩ জুলাই) ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে প্রবাসী আয় আসা সম্ভব ছিল না। এতে সর্বশেষ ১৪ দিনে প্রবাসী আয়ে ভাটা পড়ে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুন মাসে প্রবাসী আয় এসেছিল ২৫৪ কোটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার ডলার। চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২১১ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার ডলার। প্রবাসী আয় ফেব্রুয়ারিতে ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার, মার্চে ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ ৭০ হাজার ডলার, এপ্রিলে ২০৪ কোটি ৪২ লাখ ৩০ হাজার ডলার এবং মেতে ২২৫ কোটি ৩৮ লাখ ৮০ হাজার ডলার এসেছে।