ইসলামী ব্যাংক বাঁচাতে রোডম্যাপ নেওয়া হয়েছে : ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ
ইসলামী ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের অর্ধেকের বেশি এস আলম গ্রুপের পকেটে গেছে এবং ব্যাংকটিকে বাঁচাতে রোডম্যাপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকটির চেয়ারম্যান মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। আজ বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, ইসলামী ব্যাংকের প্রতি গ্রাহকদের আস্থা নেই, এমনকি আস্থা নেই প্রবাসী ও শেয়ারহোল্ডারদের। তাই সবার আস্থা ফেরাতে ও ব্যাংকটি বাঁচাতে রোডম্যাপ নেওয়া হয়েছে এবং এই রোডম্যাপ বাস্তবায়ন হবে তিনটি ধাপে। প্রথমত নতুন বোর্ডের শুরু থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে অনিয়ম খুঁজে বের করা ও বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া। দ্বিতীয়ত ২০২৫-২৬ সাল দেওয়া হয়েছে ঘুরে দাঁড়ানোর বছর। তৃতীয় ২০২৭, ২০২৮ ও ২০২৯ সাল এগিয়ে যাওয়ার বছর।
সামনে অর্থ উত্তোলনে সমস্যায় পরবে না গ্রাহক জানিয়ে ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, অনেক গ্রাহকের এতদিন টাকা তুলতে যেসব সমস্যা পড়েছে। সেইসব সমস্যা আজকের পর আর পোরে না। কারণ গত এক সপ্তাহ যে পরিমাণ টাকা জমা হয়েছে, তার চেয়ে বের হয়েছে কম। এখন নিট ব্যালেন্স পজিটিভ রয়েছে। সামনে আরও বাড়বে।
গত জুন শেষে ইসলামী ব্যাংকের ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ লাখ ৭৪ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা জানিয়ে ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় জামায়াতমুক্ত করার নামে ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি অভিনব কায়দায় চট্টগ্রামের একটি গ্রুপটি ইসলামী ব্যাংক দখলে নেয়। পরে নিয়ম না মেনেই ব্যাংকটির অর্থ লুটপাট করে ওই গ্রুপটি। নামে-বেনামে ব্যাংকটির মোট ঋণের অর্ধেকের বেশি এস আলম নিয়েছে। এস আলম গ্রুপের ঋণের পুরো তথ্য পেতে, আরও এক সপ্তাহ সময় লাগবে। গ্রুপটি সম্পদ অতিমূল্যায়ন করে ঋণ নিয়েছে। ইতোমধ্যে গ্রুপটি সম্পদ নতুন করে মূল্যায়ন করা হচ্ছে। এছাড়া ঋণের বিপরীতে যেসব জামানত রয়েছে, তা দিয়ে কাভার হবে না। তাই জামানতের বাইরে যেসব সম্পদ রয়েছে তা বের করার জন্য আইন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়।
এস আলমকে সহযোগিতা যারা করেছেন, তাদের প্রসঙ্গে ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, যারা মধ্যম বা তার নিচের পদের কর্মকর্তা রয়েছে, তাদের এখনই সরাচ্ছি না। কারণ সেখান এখন হাত দিয়ে বা সংস্কারে গেলে সব ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। তাই উপরের পদের কর্মকর্তা কিছু সরানো হচ্ছে। তবে আইন অনুযায়ী, অপরাধের সাথে জড়িত সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ ছাড় পাবে না। তবে ভুল প্রক্রিয়ায় কাউকে সরানো হবে না।