এক কলেজ থেকে মেডিকেলে সুযোগ পেলেন ৩৯ শিক্ষার্থী

Looks like you've blocked notifications!
সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ। ছবি : এনটিভি

নীলফামারীর সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে ৩৯ শিক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন সরকারি মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। এর মধ্যে ২৩ জন মেয়ে এবং ১৬ জন ছেলে।

এর আগে কলেজটি থেকে ২০২০ সালে ৪০ জন, ২০১৯ সালে ৩৮ জন, ২০১৮ সালে ৩৬ জন শিক্ষার্থী মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পান।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, এ বছর এ কলেজ থেকে ২৬৮ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। এর মধ্যে ২৪৯ জন জিপিএ-৫ পায়। আর, ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পায় ৩৯ জন।

শিক্ষার্থী আদুরী তাসফিন ফারজানার বাড়ি দিনাজপুরের রানিরবন্দরে। বাবা ছেলেবেলায় মারা যান। আদুরী এ বছর ভর্তির সুযোগ পেয়েছে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে।

আদুরী বলেন, ‘বাবার স্বপ্ন ছিল, আমি একদিন ডাক্তার হব। আজ সে স্বপ্ন বাস্তব রূপ নিয়েছে। সাফল্যের প্রতিটি ধাপে শিক্ষকদের কঠোর শ্রম রয়েছে।’

নুসরাত জাহান থাকেন সৈয়দপুর শহরের কাজিপাড়া এলাকায়। বাবা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। আরেকজন শিক্ষার্থী মিনহাজুল ইসলাম থাকেন চিরিরবন্দর উপজেলার জোতসাতনালা গ্রামে। উভয়েই এবার সুযোগ পেয়েছে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে।

নুসরাত ও মিনহাজুল বলেন, ‘করোনাকালে কলেজ অনেকদিন বন্ধ থাকায় মুঠোফোনে শিক্ষকেরা আমাদের সার্বিক সহযোগিতা করেছেন। নিয়মিত অনলাইন ক্লাস নিয়ে আমাদের সিলেবাস পূর্ণ করেছেন। আমাদের শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশটা ব্যতিক্রম। স্যারদের বন্ধুত্বসুলভ পাঠদান, ক্লাসের বাইরেও শিক্ষকেরা আমাদের নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন বলে আজ এ সফলতা এসেছে।’

অভিভাবক নুর ইসলাম বলেন, ‘কলেজ থেকে আমাদের নানা রকম নির্দেশনা দেওয়া হতো। এটা আমাদের সন্তানদের পড়ালেখায় সহযোগিতা করেছে।’

কলেজটির প্রভাষক আতাউর রহমান সফলতার কারণ সম্পর্কে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া আছে বলেই আমরা সফল হতে পেরেছি।’

বাংলার প্রভাষক সোহেল আরমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের প্রধান অস্ত্র মনোযোগ। আমাদের অধ্যক্ষ প্রতিটি ক্লাস তদারকি করেন। এর মধ্য দিয়ে মানসিকভাবে অনুপ্রেরণা পেয়েছে শিক্ষার্থীরা।’

কলেজটির শিক্ষাদান বিষয়ে অধ্যক্ষ গোলাম আহমেদ ফারুক এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘কলেজে পাঠদান চলে গ্রিন ক্লিন, এনজয়েবল ক্লাসরুম লার্নিং পদ্ধতিতে। এ কারণেই আমাদের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব ও মননশীলতা দিন দিন বাড়ছে।’

অধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘এ কলেজে ভর্তি পরীক্ষা অত্যন্ত স্বচ্ছ। মেধাবী শিক্ষার্থীরাই এ কলেজে পড়ার সুযোগ পান। কলেজের শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে আমরা এক ধরনের সেতুবন্ধন তৈরি করি। ক্লাসরুমেই সম্পূর্ণ পাঠদান সম্পন্ন করা হয়। এর ওপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীদের যাবতীয় প্রয়োজনীয়তা মাথায় রাখা হয়। এতে ফলাফল ভালো হয়।’

উল্লেখ্য, নীলফামারীর সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজের নাম ছিল সরকারি কারিগরি মহাবিদ্যালয় (টেকনিক্যাল কলেজ)। ২০১৯ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নাম পরিবর্তন করে সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ রেখেছে। কলেজটিতে কেবল বিজ্ঞান বিষয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে।