খুবি ছাত্রীর আপত্তিকর ছবি তোলার অভিযোগ, বিচার দাবি শিক্ষার্থীদের

Looks like you've blocked notifications!
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর আপত্তিকর ছবি তোলার অভিযোগে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক ছাত্রের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি : সংগৃহীত

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) সদ্য সাবেক এক ছাত্রের বিরুদ্ধে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অপর এক ছাত্রীর আপত্তিকর ছবি তোলার অভিযোগ উঠেছে। এরই মধ্যে ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে গত ৬ এপ্রিল হরিণটানা থানায় মামলা করা হয়েছে। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

হরিণটানা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমদাদুল হক জানান, গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগী ছাত্রী বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ছাত্রের মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ জব্দ করে ফরেনসিকে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, এ ঘটনায় ওই ছাত্রের শাস্তি দাবি করে মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদী চত্বরে আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মানববন্ধন করেন তাঁরা।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তাঁদের মানববন্ধনে চারটি দাবি তুলে ধরা হয়েছে। সেগুলো হলো—শিক্ষার্থীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনার সুষ্ঠু বিচার করতে হবে, এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে হবে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কর্তৃপক্ষের সর্বোচ্চ ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে, এবং ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ—খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাইখ রহমান আবির নামের ওই শিক্ষার্থী গত ১ এপ্রিল রাতে ইসলামনগরের শাহ শিরিন রোডে ছাত্রীদের মেসে বাথরুমের ভেন্টিলেটর দিয়ে উঁকিঝুঁকি দিচ্ছিলেন। এ সময় ওই মেসের এক শিক্ষার্থী তাঁকে দেখে ফেলেন। এরপর তিনি দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

শিক্ষার্থীদের দাবি, এ ঘটনা আগে কয়েকবার ঘটলেও ওই ছাত্রকে শনাক্ত করা যায়নি। কিন্তু, এ ঘটনার পরদিনই ওই ছাত্র বিকেল ৫টার দিকে মেসের গোসলখানার ভেন্টিলেটর দিয়ে ভুক্তভোগীর গোসল করার মুহূর্ত মুঠোফোনে ধারণ করেন। ওই সময় ভুক্তভোগী তাঁর চেহারা দেখে ফেলেন এবং সাহায্যের জন্য চিৎকার করেন। এর মধ্যেই ওই ছাত্র পালিয়ে যান।

শিক্ষার্থীরা আরও বলছেন, এর মধ্যেই সিসিটিভি ক্যামেরা থেকে ফুটেজ নিয়ে এলাকাবাসীর সাহায্যে ওই ছাত্রকে শনাক্ত করা হয়। দুদিন পর রাতে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের খান জাহান আলী হলের গেটের পাশে চিহ্নিত করা হয়। তাঁর সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি ঘটনার বিষয়টি স্বীকার করেন। এর মধ্যে তাঁর কাছ থেকে প্রমাণ দেখতে চাইলে, তিনি সম্মতি দিলেও তা ধ্বংস করার চেষ্টা করেন। এর মধ্যে তাঁর মুঠোফোনে ভুক্তভোগীর ছবিসহ আরও মানুষের আপত্তিকর চিত্র পাওয়া যায় বলে দাবি শিক্ষার্থীদের।

এ ঘটনার মধ্যে সেখানে থাকা উপস্থিত ব্যক্তিরা উত্তেজিত হয়ে ওই ছাত্রের ফোন কেড়ে নেন এবং তাঁকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। পরে উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে থাকা একজন তাৎক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে ফোন দিয়ে বিষয়টি অবগত করেন। এরপর প্রশাসনের হেফাজতে ওই ছাত্রকে নেওয়ার পর তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে প্রশাসনের সার্বিক সহায়তার আশ্বাসে ওই ছাত্রের নামে হরিণটানা থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

এদিকে, ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে করা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য ঘনিষ্ঠদের মাধ্যমে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করছেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে, ওই ছাত্রকে গণপিটুনি দেওয়ার ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের একটি অংশ ক্ষুব্ধ হয়েছেন বলে জানা গেছে। তাঁরা এ ঘটনার তদন্ত দাবি করেছেন।

এদিকে, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক শরিফ হাসান লিমন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, “গণপিটুনির ব্যাপারে অন্যান্য ছাত্রদের দাবি—ওই ছাত্র অপরাধ করলে তাঁর শাস্তি হোক, কিন্তু তাঁকে যে ‘প্রহার’ করা হয়েছে, সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেওয়া হোক। তবে, অভিযোগ দেওয়া হলেও এ ব্যাপারে আগে খতিয়ে দেখা হবে।”