ঢাবিতে ছাত্রদলের উপর ছাত্রলীগের হামলা, ২ জনের অবস্থা গুরুতর

Looks like you've blocked notifications!
চিকিৎসাধীন ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারীদের হামলায় আহত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। ছবি : এনটিভি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উপর অতর্কিত হামলার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। ছাত্রদল এ অভিযোগের তীর ছুড়েছে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারীদের দিকে। এ হামলার ঘটনায় ছাত্রদলের অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন বলে জানায় সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।

আজ সোমবার (১০ এপ্রিল) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ইফতারের পর আড্ডা দেওয়া অবস্থায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

হামলায় আহতদের প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে ইসলামি ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতাল কাকরাইলে স্থানান্তর করা হয়। 

ছাত্রলীগের এ হামলায় আহতরা হলেন, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের ছাত্রীবিষয়ক সম্পাদক মানসুরা আলম, নবাব স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সিনিয়র সহসভাপতি আমান উল্লাহ আমান, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদি হাসান এবং নবাব স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ছাত্রদলকর্মী আবদুল্লাহ আল কাফি।

চিকিৎসাধীন ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারীদের হামলায় আহত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। ছবি : এনটিভি

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি শাহরিয়ার কবির বিদ্যুৎ, সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাহিদ হাসান শাহীন, এস এম হল ছাত্রলীগের সমাজ সেবা সম্পাদক আশিক আকাশ ও সাংগঠনিক সম্পাদক তোফায়েল, জসিম উদ্দিন হল ডাকসুর সাবেক জিএস ইমাম হাসান এবং মুহসীন হল ছাত্রলীগের কর্মী মেহেদীসহ অন্তত ৪০ থেকে ৫০ জন এ হামলায় অংশ নেন বলে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল বলেন, ‘আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা প্রায় প্রতিদিন সেন্ট্রাল ফিল্ডে ইফতার করি। প্রতিদিনের ন্যায় আজও ইফতার করে ঢাকা মেডিকেলের বহির্বিভাগের এখানে আড্ডা দিচ্ছিলাম। এমন সময় হঠাৎ করে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের ৪০ থেকে ৫০ জন অনুসারী মোটরসাইকেলে করে এসে আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। তাদের হামলায় আমাদের ছয়জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যকার মানসুরা আলম দুই কানেই শুনতে পাচ্ছেন না। রাজু আহমেদ বাম চোখে মারাত্মক আঘাত প্রাপ্ত এবং পুরো শরীরে আঘাত প্রাপ্ত হয়েছেন। মেহেদীর মাথায় ১০টা সেলাই লেগেছে এবং পুরো শরীরে আঘাতপ্রাপ্ত। এ ছাড়া  আমান ও কাফি মাথায় মারাত্মকভাবে আঘাত প্রাপ্ত।'

খোরশেদ আলম সোহেল আরও বলেন, ‘ছাত্রদল ক্যাম্পাসে সহাবস্থান চায়। আমরা ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের অরাজকতা চা ইনা। ছাত্রলীগ এখন আর ছাত্রসংগঠন নেই, ছাত্রলীগ এখন সন্ত্রাসী সংগঠনে পরিণত হয়েছে। এই হামলা সেটাই প্রমাণ করে।’

চিকিৎসাধীন ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারীদের হামলায় আহত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। ছবি : এনটিভি

সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ছাত্রলীগের অতর্কিত হামলায় এসএম হলের রাজু গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁর অবস্থা আশংকাজনক। আর জহুরুল হক হল ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদীর মাথায় ১০টি  সেলাই লেগেছে এবং তাঁর হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে।’

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ঢাবির বিজয় একাত্তর হল ছাত্রদলের সভাপতি সোহেল রানা বলেন, ‘আমরা ইফতারের পর মেডিকেলের বহির্বিভাগের সামনে আড্ডা দিচ্ছিলাম। হুট করে তারা মোটরসাইকেলে করে এসে কোনো কথাবার্তা ছাড়াই অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমাদের ছয়জন আহত হয়। তারা যে কয়জনকে মেরেছে শুধু মাথার দিকে টার্গেট করে মেরেছে। আমরা মেডিকেলের ভিতরে ঢুকেছি, সেখানে ঢুকেও তারা মেরেছে। তারা সবাই সৈকতের অনুসারী।’

আহত মানসুরা আলম বলেন, ‘ছাত্রলীগের ইমাম হাসান নামের একজনের নেতৃত্বে ইফতারের পর মেডিকেলের বহির্বিভাগে এসে আমাদের উপর আক্রমণ করেছে। সে আমার গায়ে হাত তোলার সময় অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করেছে। কানে আঘাত করেছে, এখন কানে কিছু শুনতে পাচ্ছি না।'

এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ছাত্রদল লন্ডন থেকে করা প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ক্যাম্পাসে লাশের রাজনীতি কায়েম করতে চাচ্ছে। আজ সয়েল ডিপার্টমেন্টের একজনের উপর ছাত্রদলের ২৫ থেকে ৩০ জন নেতাকর্মী হামলা করে এবং মারধর করে। এরপর সে তার বন্ধুদের কল দিয়েছে, সেখানে আমাদের ছাত্রলীগেরও দুই-এক জন ছিল। তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ছাত্রদলকে প্রতিহত করেছে।’