ঢাবিতে দুই বিভাগের ক্রিকেট ম্যাচে সংঘর্ষ, আহত ২০

Looks like you've blocked notifications!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক আহতদের দেখতে এসে তাদের সঙ্গে কথা বলছেন। ছবি : ঢাবির সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে নেওয়া।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তবিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ২০২৩-এর ফাইনাল ম্যাচে দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই বিভাগের অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। 

আজ সোমবার (৯ জানুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আহত শিক্ষার্থীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল ও ঢাবির শহীদ ডা. মুর্তজা মেডিকেল সেন্টার থেকে যৌথভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউটের আহত দুজনের অবস্থা গুরুতর। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মুর্তজা মেডিকেল সেন্টারে তাদের চিকিৎসা চলছে।

সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের আহত ১৬ জন হলেন—স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব শান্ত, মামুন রেজা, জীম নাজমুল, মিনহাজুল ইসলাম ফাহিম; চতুর্থ বর্ষের নাঈম হাসান অয়ন, কৃপা দাস, ফারহান মুরসালিন অলিভ, জামিল হোসেন জীম; তৃতীয় বর্ষের মশিউর রহমান মুন্না, রিশাদ সরকার, এনামুল হক পলাশ, অয়ন সমাদ্দার, মাসফিউর রহমান; দ্বিতীয় বর্ষের তপন; প্রথম বর্ষের মেহেদী হাসান ও রেদোয়ান।

এদিকে আহত হওয়া মার্কেটিং বিভাগের চার শিক্ষার্থী হলেন—দেলোয়ার হোসেন, আরাফ মাহমুদ, জুলফিকার মাহমুদ মুন্না ও ইমতিয়াজ হোসেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং মার্কেটিং বিভাগের মধ্যে ফাইনাল খেলা হচ্ছিল। মার্কেটিং বিভাগের এক খেলোয়াড় আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আউট হয়েও মাঠ ছাড়তে অস্বীকৃতি জানান। এ নিয়েই দুই বিভাগের দর্শকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় এবং সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। 

সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা খেলার শুরু থেকেই তাদের বিভিন্ন ভাষায় গালাগাল করছিল। জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থীরা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করলে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাঁদের ওপর আক্রমণাত্মক হয়ে যায়। এক পর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হয়।

সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী এবং ওই ইনস্টিটিউট ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মিনহাজুল ইসলাম ফাহিম বলেন, ‘খেলার মাঝখানে ওদের একজন বোল্ড আউট হন। আম্পায়ার তাঁকে আউট হিসেবে গণ্য করে। কিন্তু তিনি আউট হওয়ার পরও মাঠ ছাড়তে চাচ্ছিলেন না। এমন সময় খেলার মাঠে এক বাজে সিচুয়েশন ক্রিয়েট হয়। এদিকে মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টের যারা দর্শক ছিল তারা আউট হয়নি এরকমটা দাবি করছিল। জোরে বাজে বাজে সাউন্ড করছিল। আবার আমাদের বিভাগের দর্শক যারা ছিল তারাও আউট হয়েছে দাবি করছিল। এমন অবস্থায় মার্কেটিং বিভাগের পাশ থেকে আমাদের দিকে চেয়ার ছুড়ে মারা হয়। তখনই ঝামেলার সূত্রপাত হয়। এরপর মারামারি। এ ঘটনায় আমাদের ১৫ থেকে ২০ জন লোক আহত হয়। এদের মধে দুই জনের অবস্থা গুরুতর। তাদের ভার্সিটি মেডিকেল থেকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’  

ঘটনার বিষয়ে জানতে মার্কেটিং বিভাগ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ইমরোজ আব্দুল্লাহকে মুঠোফোনে কল দিলে তিনি ‘ভাই, একটু পর ফোন দিচ্ছি’ বলেই ফোনটি কেটে দেন। এর কিছুক্ষণ পর বারবার কল দেওয়া হয়েছে। তিনি ফোন ধরেননি।

ঘটনার ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তবিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলছে। আজকের ফাইনাল ম্যাচে মার্কেটিং বিভাগ এবং সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তাদের বেশি উত্তেজনার কারণে হাতাহাতিতে রূপ নেয়। ঘটনার পর কয়েকজন আহত শিক্ষার্থীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।’

এদিকে, আজ রাতে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগপত্র দিয়েছেন ঢাবি সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউট ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মিনহাজুল ইসলাম ফাহিম।