ঢাবির হলে চাকরিজীবী ছাত্রলীগ নেতার এসি-ফ্রিজ নিয়ে অবৈধ বসবাস

Looks like you've blocked notifications!
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা এসএম রিয়াদ হাসান। ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে কয়েকবছর আগেই স্নাতক-স্নাতকোত্তর শেষ হয়ে গেলেও অবৈধভাবে এখন পর্যন্ত হলে থাকার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের এক কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে। তিনি হলে তো থাকেনই, আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে এয়ারকুলার এবং রেফ্রিজারেটর ব্যবহারের নিয়ম না থাকলেও, তার কক্ষে তা অনায়াসেই ব্যবহার করেন।

অভিযুক্ত ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম এসএম রিয়াদ হাসান। তিনি ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। কয়েক বছর আগেই তার স্নাতক-স্নাতকোত্তর শেষ হয় এবং তিনি গত ১ আগস্ট শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান ‘ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ফাউন্ডেশন’ এ সহকারী ব্যবস্থাপক হিসেবে যোগদান করেন। সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে তার কক্ষ নং হলো ৩১৩।

ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, রিয়াদ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খানের নিজ জেলার ও ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণে প্রভাব খাটিয়ে হলে নিয়ম বহির্ভূতভাবে থাকছেন দীর্ঘদিন ধরেই। এমনকি করোনাকালে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বন্ধ ছিল এবং কোনো শিক্ষার্থীরই যখন হলে থাকার সুযোগ বা নিয়ম ছিল না, তখনও তিনি হলে থেকেছেন দ্বিধাহীনভাবে।

অন্যদিকে, ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, সরকারি চাকরিজীবীদের ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত থাকার কোনো সুযোগ না থাকলেও তিনি ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটিতে সহ-সভাপতির পদে আসীন হয়েছেন নতুন করে। যা, গত ৩১ জুলাই ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য সাক্ষরিত একটি চিঠির মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়।

জানা যায়, তিনি স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন কয়েক বছর আগেই। কিন্তু তিনি তা অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার মাস্টার্স এর রেজাল্ট বের হয়নি। বের হলেই হল ছেড়ে দিব। তবে আমার রুমে কোনো এসি-ফ্রিজ নেই।’

সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মো. আবদুর রহিম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি একটা কাজে কুমিল্লা এসেছিলাম। বিষয়টি জানার জন্য হলের অফিসারদেরকে ইন্সট্রাকশন দিয়েছি। আর হলে কোন শিক্ষার্থী এভাবে থাকবে, এসি-ফ্রিজ ব্যবহার করবে, এটা আসলে নিয়ম না। আমি এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমি হলের প্রাধ্যক্ষ হিসেবে আসার পর থেকেই, ছাত্রত্ব শেষ যাদের তাদেরকে দ্রুত হল ছাড়ার জন্য এনকারেজড করছি।’

ছাত্রলীগ সভাপতি নাহিয়ান খান জানান, ‘রিয়াদ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বা সাংগঠনিক সম্পাদক হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমরা তা না দিয়ে সহ সভাপতির পদ দিয়েছি। যখন তাঁকে পদ দেওয়া হয়, তখন তিনি সরকারি চাকরিতে যোগ দেননি। যেহেতু এখন তিনি চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, তাই তাঁর পদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে শূন্য হয়ে গেছে।’

উল্লেখ্য, রিয়াদ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মনোনীত হয়েছেন ৩১ জুলাইয়ে ইস্যুকৃত এমন একটি চিঠি শেয়ার করে তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীরা সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় রিয়াদকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানালে তাকে নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়।