পাঠ্যবইয়ে গুগল থেকে কপি-পেস্টকারীদের বিচার দাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেছেন, ‘যারা গুগল থেকে কপি-পেস্ট করে পাঠ্যবইয়ের কাজ করেছেন, জ্ঞান চুরি করেছেন, তাদের বিচারের আওতায় আনা হোক।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আজ শনিবার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে পাঠ্যপুস্তকে চৌর্যবৃত্তি, বাংলাদেশের ইতিহাস বিকৃতি ও ভুল-ভ্রান্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে এ কথা বলেন ইয়ামিন মোল্লা। বিক্ষোভ শেষে টিএসসি থেকে শাহবাগ পর্যন্ত মিছিল নিয়ে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করে সংগঠনটি।
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার স্মার্ট বাংলাদেশের যে গল্প দিচ্ছে, এর মধ্যে আমরা দেখলাম বাংলাদেশে কয়েকজন স্মার্ট চোরের আবির্ভাব ঘটল। যারা গুগল থেকে কপি-পেস্ট করে পাঠ্যবইয়ের কাজ করেছেন। যারা এ কাজগুলো করেছেন তারা আবার বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। এ ঘটনাগুলো শুনলে আমাদের লজ্জা হয়।’
পাঠ্যবইয়ে ভুল করার শাস্তি প্রদান বিষয়ে ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘বাংলাদেশে যদি কেউ জুতা চুরি করে তাকে ধরে গণধোলাই দেওয়া হয়। যদি কেউ বাসে মানি ব্যাগ বা টাকা চুরি করে তাকেও গণধোলাই দেওয়া হয়। এজন্য আমরা বলতে চাই, পাঠ্য বইয়ে কপি-পেস্ট করে যারা জ্ঞান চুরি করেছে, তাদেরও বিচারের আওতায় আনা হোক। আজকের এই সমাবেশ থেকে তাদের শাস্তির দাবি করছি। কারণ, এটি কোনো ভুল নয়। এটি স্পষ্টতর অপরাধ এবং একটি গভীর ষড়যন্ত্র।’
বইয়ে ভুল ইতিহাসের বিষয় উল্লেখ করে বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্পাসে একটি ছাত্র সংগঠন সব সময় স্মার্ট বাংলাদেশের গল্প বলে থাকে। একদিকে তারা স্মার্ট বাংলাদেশের গল্প বলছে আরেকদিকে পাঠ্য বইগুলোতে ভুল ভ্রান্তির ছড়াছড়ি।’
অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি আরও বলেন, ‘আমাদের এই দেশকে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী করে দেওয়ার জন্য ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর দেশের মেধাবী সূর্য সন্তানদেরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছিল। ঠিক সেই গোষ্ঠীটি আবার ২০২৩ সালে এসে সুপরিকল্পিতভাবে আমাদের এই দেশের শিক্ষা নামের মেরুদণ্ডকে পঙ্গু করে দেওয়ার জন্য পাঠ্যপুস্তকগুলোতে ভিনদেশি সংস্কৃতি, ভিনদেশি দেশপ্রেম, বিজ্ঞানের নামে অপবিজ্ঞান, সংস্কৃতির নামে অপসংস্কৃতি এবং ধর্মীয় বিদ্বেষকে ঢুকিয়ে দিয়েছে।’
অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, ‘সপ্তম ও ষষ্ঠ শ্রেণির পাঠ্য বইয়ে চৌর্যবৃত্তি করা হয়েছে। যা বইয়ের রচনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ডক্টর জাফর ইকবাল এবং হাসিনা খানরা স্বীকারও করেছেন। জাফর ইকবালরা আমাদের ইউরোপ-আমেরিকা এবং উন্নত বিশ্বের উদাহরণ দিয়ে থাকেন। কিন্তু আজ তারা ভুল করে এবং দায়িত্বের অবহেলা করে এখনও দায়িত্বে বহাল আছেন।’
এছাড়া কর্মসূচিতে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি তারিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম শাহীন, প্রচারবিষয়ক সম্পাদক রাসেল সরকার, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রশীদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সহসভাপতি আসিফ মাহমুদ, পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক মারজিয়া আক্তার জামিলা ও সরকারি তিতুমীর কলেজ শাখার সভাপতি নেওয়াজ খান বাপ্পিসহ অনেকে।