প্রথম আলোর বিরুদ্ধে ঢাবি উপাচার্যের অবস্থান গণবিরোধী : ঢাবি ছাত্র ফ্রন্ট

Looks like you've blocked notifications!

স্বাধীনতা দিবসে স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করে সংবাদ প্রচারের অভিযোগ তুলে প্রথম আলো পত্রিকার নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে গতকাল শহীদ মিনারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সংহতি জানাতে অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতাজ্জামান। উপাচার্যের এই অবস্থানকে গণবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।

গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সাদিক ও সাধারণ সম্পাদক আরাফাত সাদ সাক্ষরিত এক যৌথ বিবৃতিতে মন্তব্য করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, “ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিলের দাবিতে যখন সারা দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ আন্দোলন করছে, তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ‘স্বাধীনতা সচেতন নাগরিক সমাজ’ নামক এক প্লাটফর্মের ব্যানারে আয়োজিত সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন। যেখানে স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসের করা একটি প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে তিনি দৈনিক প্রথম আলোকে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আঘাত হানা’, ‘স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করা’, ‘রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত হানা’ ইত্যাদি অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন। সমাবেশ থেকে দৈনিক প্রথম আলোর নিবন্ধন বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে।”

উপাচার্যের অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘উপাচার্যের এই গণবিরোধী অবস্থান এবারই প্রথম না, এর আগেও আমরা তার এমন অবস্থান দেখেছি। তার এ ধরনের কর্মকাণ্ড এটাই প্রমাণ করে যে, তিনি একটি বিশেষ ওপর মহলের ইশারায় পরিচালিত হন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসনের ধারণার পরিপন্থী।’

নেতৃদ্বয় বলেন, ‘উপাচার্য মহোদয় ওই সমাবেশে রাষ্ট্রের স্বার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপের মায়াকান্না কেঁদেছেন, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন রক্ষায় তার ন্যূনতম ভূমিকা আমরা দেখি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ছাত্রলীগের দখলদারিত্ব বিরাজ করছে দীর্ঘদিন ধরে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হলগুলোতে এক রুমে ৪০ থেকে ৫০ জন একসঙ্গে গাদাগাদি করে থাকে, হলে থাকা শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগ জোর পূর্বক মিছিলে নিয়ে যায়, ক্যান্টিনে খাবারের দাম ক্রমান্বয়ে বাড়ছে, একই হারে খাবারের পুষ্টিমান কমছে, লাইব্রেরি-রিডিংরুমে পড়াশোনার পর্যাপ্ত জায়গা পায় না, ডাকসু নির্বাচন হচ্ছে না। এই বিষয়গুলো নিয়ে তার কার্যকরি কোনো পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাই না।’

উপাচার্যের অবস্থানকে গণবিরোধী আখ্যা দিয়ে তারা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালেয়ে শিক্ষার্থীদের স্বাধীন চিন্তা, রাজনৈতিক ভিন্ন মত দমনে ছাত্রলীগ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যৌথ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপাচার্য মহোদয়ের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে যখন দমনমূলক আইন দিয়ে ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করা হচ্ছে, মুক্ত চিন্তা দমন করা হচ্ছে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতকে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে তখন উপাচার্যের এই অবস্থান সম্পূর্ণ গণবিরোধী। আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে উপাচার্যের এই গণবিরোধী অবস্থানের নিন্দা জানাচ্ছি।’