রাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে তালা ঝুলিয়ে শিক্ষার্থীদের অনশন

Looks like you've blocked notifications!
অনশন করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ছবি : এনটিভি

দ্রুত ফলাফল প্রকাশ করে পরবর্তী সেমিস্টারের পরীক্ষা গ্রহণের দাবিতে আমরণ অনশন করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে বিভাগের সামনে অফিস ও শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলিয়ে তারা এ অনশন শুরু করেন। দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা আন্দোলনকারীরা। সন্ধ্যা ৬টার দিকে প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের অনশন চলমান ছিল।

শিক্ষার্থীদের ছয়টি দাবি হলো—ঈদ-উল ফিতরের আগেই প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ফল প্রকাশ করে দ্বিতীয় বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা গ্রহণ করা, ২০২৪ সালের মধ্যে তাদের স্নাতক শেষ করা, নোটিশের নামে গড়িমসি বন্ধ করা, ছয় মাসের সেমিস্টারের সময়কাল কমিয়ে তিন মাস করা, সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার এক মাসের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করা, বিভাগের লোকবল সংকট দূর করা এবং পরীক্ষা, ক্লাস টেস্ট ও বিভাগীয় কার্যক্রমে যেসব ত্রুটি আছে তা নিরসন করা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী মোয়াজ্জিন শিকদার বলেন, ‘২০২০ সালে আমরা প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু করেছি। ২০২৩ সালে এখনো অফিসিয়ালি আমরা প্রথম বর্ষ শেষ করতে পারিনি। অন্য বিভাগগুলোতে আমার সেশনের বন্ধুরা এখন তৃতীয় বর্ষের ক্লাস করছে। ফলে আমরা মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছি। এখন বাধ্য হয়ে আমরা আমরণ অনশনে বসেছি। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দাবি পূরণ না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা এখান থেকে উঠব না।’

ওই বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী রামিসা তাসনিম বলেন, ‘গত ৬ মার্চ আমাদের তৃতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তা এখনও শুরু হয়নি। আমাদের ক্লাস-পরীক্ষা কোনোটাই নিয়মমাফিক হচ্ছে না। তিন বছর ধরে আমরা এখনো প্রথম বর্ষেই রয়েছি। প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ফলাফল এখনও দেয় নি। এজন্য তৃতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষার জন্য ফরম ফিল-আপ করতে পারছি না এবং পরীক্ষায়ও অংশগ্রহণ করতে পারছি না।’

মো. ইশতিয়াক হোসেন বলেন, ‘আমাদের প্রধান দাবি হচ্ছে দ্রুত যেন পরীক্ষা নেওয়া হয়। এমনিতেই করোনার কারণে আমাদের দেড় বছর ক্ষতি হয়েছে। আবার বিভাগ থেকেও ফলাফল দিচ্ছে না এবং পরীক্ষা নিচ্ছে না। দেখা গেল পড়াশোনা শেষ করতে করতে আমাদের বয়স ২৭-২৮ বছর হয়ে গেছে। তখন আমরা বের হয়ে কী করব? পরিবার ও সমাজ আমাদের ওপর আশা করে আছে। সবকিছু মিলিয়ে আমরা অনেক হতাশার মধ্যে আছি।’

বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। আর আমাদের বিভাগে শিক্ষক রয়েছে মাত্র ছয়জন। তাদের মধ্যে একজন স্কলারশিপ নিয়ে জাপান এবং আরও একজন দুই মাসের ছুটিতে অস্ট্রেলিয়ায় আছেন। চারজন শিক্ষক দিয়ে পাঁচ বর্ষের ক্লাস-পরীক্ষা চালানো বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীদের বলেছি, আগামী ৩০ বা ৩১ মার্চের মধ্যেই তাদের ফলাফল প্রকাশ করা হবে। কিন্তু তারা এখনি এর সমাধান চাচ্ছেন। ফলাফল প্রকাশের তো কিছু প্রক্রিয়া আছে। ইতোমধ্যে আমরা কাজও শুরু করেছি।’