সংখ্যায় কম, তবে পাসের হারে এগিয়ে ছাত্রীরা
চলতি বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ছাত্রদের চেয়ে ছাত্রীদের অংশগ্রহণ ছিল কম। তবে পাসের হারে এগিয়ে আছে ছাত্রীরাই। ১০ শিক্ষা বোর্ডের সাতটিতেই এমন চিত্র দেখা গেছে। বাকি তিনটি চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও সিলেট শিক্ষা বোর্ডেও পাসের হার বেশি। তবে ওই তিনটিতে ছাত্রীর সংখ্যাও বেশি।
ঢাকা, রাজশাহী, যশোর, বরিশাল, দিনাজপুর, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রদের চেয়ে ছাত্রীরা সংখ্যায় কম, তবে তাঁরা পাসের হারে এগিয়ে রয়েছেন।
ছাত্রদের মোট পাসের হার ৭১ দশমিক ৬৭ শতাংশ আর ছাত্রীদের বেলায় তা ৭৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ। অংশগ্রহণকারী ছাত্র ছিল সাত লাখ তিন হাজার জন এবং ছাত্রীসংখ্যা ছিল ছয় লাখ ৩৩ হাজার ৬২৯ জন।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে ছাত্রদের পাসের হার ৬৮ দশমিক ২২ শতাংশ আর ছাত্রীদের পাসের হার ৭৪ শতাংশ। যেখানে অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র এক লাখ ৯৮ হাজার ও ছাত্রী এক লাখ ৯৫ হাজার ৮৩৫ জন। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে ছাত্রদের পাসের হার ৭২ দশমিক ৩২ শতাংশ আর ছাত্রীদের পাসের হার ৮১ দশমিক ২১ শতাংশ। যেখানে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র ৮০ হাজার ৮২২ ও ছাত্রী ৬৭ হাজার ৮৫০ জন। যশোর শিক্ষা বোর্ডে ছাত্রদের পাসের হার ৭২ দশমিক ৭৪ শতাংশ আর ছাত্রীদের পাসের হার ৭৮ দশমিক৭৬ শতাংশ। যেখানে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র ছিল ৬৫ হাজার২২২ এবং ছাত্রী ৬১ হাজার ৯ জন।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে ছাত্রদের পাসের হার ৬৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ আর ছাত্রীদের পাসের হার ৭৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ। যেখানে অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র ছিল ৩২ হাজার ২৩২ ও ছাত্রী ৩১ হাজার ৩০৬ জন।
এবার দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে ছাত্রদের পাসের হার ৬৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ আর ছাত্রীদের পাসের হার ৭৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ। যেখানে অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র ছিল ৬৩ হাজার ৯৫৭ এবং ছাত্রী ৬০ হাজার ৩৫৮ জন।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে ছাত্রদের পাসের হার ৮৭ দশমিক ৯৯ শতাংশ আর ছাত্রীদের পাসের হার ৮৯ দশমিক ২৭ শতাংশ। যেখানে অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র ছিল ৪৮ হাজার ও ছাত্রী ৩৮ হাজার ১৩৮ জন এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ছাত্রদের পাসের হার ৮০ দশমিক ৭ শতাংশ আর ছাত্রীদের পাসের হার ৮৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ। যেখানে অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র ছিল ৮৭ হাজার ৮৬৪ এবং ছাত্রী ৩৬ হাজার ৪৫৬ জন।
অন্যদিকে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে ছাত্রদের পাসের হার ৭৭ দশমিক ১২ শতাংশ আর ছাত্রীদের পাসের হার ৭৮ দশমিক ২৭ শতাংশ। যেখানে অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র ছিল ৪৩ হাজার ২২২ জন ছাত্র এবং ছাত্রী ৫১ হাজার ১৩৮ জন। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে ছাত্রদের পাসের হার ৫৯ দশমিক ২১ শতাংশ আর ছাত্রীদের পাসের হার ৬৫ দশমিক ১১ শতাংশ। যেখানে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র ছিল ৪৮ হাজার ৯৯০ এবং ছাত্রী ৪৯ হাজার ৯৩৬ জন এবং সিলেট শিক্ষা বোর্ডে ছাত্রদের পাসের হার ৬৪ দশমিক ৯১ শতাংশ আর ছাত্রীদের পাসের হার ৬৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ। যেখানে অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র ছিল ৩৪ হাজার ৬৪৯ এবং ছাত্রী ৪১ হাজার ৬০২ জন।
ছাত্রীদের এগিয়ে থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার সকালে ফল প্রকাশের অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘পরীক্ষার ফল হাতে পেয়ে লক্ষ করছি, পাসের দিক থেকে আমাদের ছাত্রীসংখ্যা একটু বেশি মনে হচ্ছে। জেন্ডার সমতার কথা বিশ্বব্যাপী প্রচলিত। এখন আমাদের বলতে হয়, আমাদের ছাত্রদের সংখ্যাটা বাড়াতে হবে, তাদের পাসের হারটাও বাড়াতে হবে, যাতে জেন্ডার সমতাটা এসে যায়। এই বিষয়টার দিকে দৃষ্টি দিতে হবে।’