র‌্যাগিং ও ভাঙচুর : ইবির ছয় শিক্ষার্থী বহিষ্কার

Looks like you've blocked notifications!
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী বহিষ্কার হওয়া তিন শিক্ষার্থী। ছবি : এনটিভি

কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ছয় শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

নবীন শিক্ষার্থীকে র‌্যাগিং এবং মধ্যরাতে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ইবির চিকিৎসাকেন্দ্র ভাঙচুরের ঘটনায় ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

সভায় অভিযুক্ত আট শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজনকে স্থায়ী এবং তিনজনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। অন্য দুজনকে সতর্ক করা হয়েছে।

সভা শেষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলিনা নাসরিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

স্থায়ী বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন ইবির মেডিকেল সেন্টার ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্ত আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রেজোয়ান সিদ্দিকী কাব্য এবং হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীকে র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় মিজানুর রহমান ইমন ও হিশাম নাজির শুভ। এক বছরের জন্য বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন, র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় অভিযুক্ত হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার পুলক, সাদমান সাকিব আকিব ও শেখ সালাউদ্দীন সাকিব।

ইবির ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলিনা নাসরিন জানান, তদন্তে ইবির চিকিৎসাকেন্দ্রে ভাঙচুরের ঘটনায় আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রেজোয়ান সিদ্দিকী কাব্যর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় স্থায়ী বহিষ্কারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এ ছাড়া অভিযুক্ত সালমান আজিজ ও আতিক আরমান ঘটনার সময় উপস্থিত থাকলেও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সংশ্লিষ্টতা না থাকায় তাদের শেষবারের জন্য সতর্ক করা হয়েছে। অন্যদিকে র‌্যাগিংয়ের ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় মিজানুর রহমান ইমন ও হিশাম নাজির শুভকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। অন্য তিন অভিযুক্ত সরাসরি ঘটনার সঙ্গে জড়িত না হলেও ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে কোনো বাধা দেননি, সমর্থন করেছেন। সেজন্য আগামী এক বছরের জন্য তাঁদের ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়েছে।

গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ সেপ্টেম্বর দফায় দফায় ইবির হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের এক নবীন শিক্ষার্থীকে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ ওঠে একই বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মিজানুর রহমান ইমন, শাহরিয়ার পুলক, হিশাম নাজির শুভ, সাদমান সাকিব আকিব, ও শেখ সালাউদ্দীন সাকিবের বিরুদ্ধে। এর আগে গত ১০ জুলাই নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের জরুরি বিভাগে ভাঙচুর, অ্যাম্বুলেন্স চালককে মারধর এবং কর্তব্যরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ ওঠে আইন বিভাগের ছাত্র রেজওয়ান সিদ্দিকী কাব্য, সালমান আজিজ ও আতিক আরমানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মেডিকেল কর্তৃপক্ষ ও ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৫ জুলাই অনুষ্ঠিত ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অভিযুক্ত তিন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। একই সঙ্গে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলিনা নাসরিনকে আহ্বায়ক করে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সবশেষে আজ সভায় উভয় তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন মূল্যায়ন ও পর্যালোচনা করে অভিযুক্তদের বিষয়ে এ সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।