হিজাব খুলতে বাধ্য করার অভিযোগে রাবি শিক্ষককে ৫ বছর অব্যাহতির সুপারিশ

Looks like you've blocked notifications!
শ্রেণিকক্ষে ছাত্রীর হিজাব-নিকাব খুলতে বাধ্য করা এবং বিভিন্ন সময়ে ছাত্রীদের উত্যক্ত করার অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এক শিক্ষককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে মানববন্ধন করেন। ছবি : এনটিভি

শ্রেণিকক্ষে ছাত্রীর হিজাব-নিকাব খুলতে বাধ্য করা এবং বিভিন্ন সময়ে ছাত্রীদের উত্যক্ত করার অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এক শিক্ষককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে,  ক্লাস-পরীক্ষা থেকে পাঁচ বছরের জন্য অব্যাহতির সুপারিশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের একাডেমিক কাউন্সিল। আজ মঙ্গলবার (১২ মার্চ) একদিকে মানববন্ধন থেকে শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষাককে অবাঞ্ছিত ঘোষণ করেন, অপরদিকে, বিকেলে কাউন্সিলের জরুরি সভায় পাঁচ বছর অব্যাহতির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়৷

এর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ছাত্রীদের 'অশোভনীয় বার্তা' পাঠানো এবং শ্রেণিকক্ষে বিভিন্ন সময় তাদের পোশাক নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ উঠেছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এরই প্রতিবাদে গতকাল সোমবার কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে বিভাগের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী। এ সময় অভিযুক্ত শিক্ষককে বিভাগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানানো হয়৷

এদিকে, আজ একই দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশন। বেলা ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়৷ এ সময় ওই শিক্ষককে ক্যাম্পাস থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন সংগঠনটির সভাপতি মেহেদী সজীব।

মানববন্ধনে মেহেদী সজীব বলেন, বাংলাদেশ একটি ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র। এখানে একজন নাগরিক আরেকজন নাগরিকের কোনো কাজে হস্তক্ষেপ করার অধিকার নেই৷ কিন্তু, ওই শিক্ষক ক্লাসের মধ্যে জোরপূর্বক মেয়েদের হিজাব খুলতে বাধ্য করেছেন৷ এটি যৌন নিপীড়ন ও যৌন অত্যাচার৷ এমন শিক্ষক আরও যারা রয়েছেন তারা সাবধান হয়ে যান। এ ছাড়া আগামী দুই দিনের মধ্যে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার করতে হবে৷ পাশাপাশি ওই শিক্ষককে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি।

কর্মসূচিতে নিজেকে ভুক্তভোগী দাবি করে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের এক ছাত্রী বলেন, আমি একজন ভুক্তভোগী৷ আমি ক্লাসে সব সময় হিজাব পড়ে আসি৷ আমার ভাবতে খারাপ লাগে, আমার শিক্ষক এই সম্মানিত পোশাককে হেয় করছেন। হিজাব ও বোরখা পরে আসায় তিনি আমাকে বলছেন, আমি নাকি প্যাকেট হয়ে এসেছি। সংবিধানে আমাদের ব্যক্তি স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তিনি সেটি লঙ্ঘন করেছেন। আমি তার উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাই।

অব্যাহতির সুপারিশের বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আশরাফ-উজ-জামান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, 'শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে বিভাগের একাডেমিক কাউন্সিলের একটি জরুরি সভা হয়৷ সেখানে ড. হাফিজুর রহমানকে আগামী পাঁচ বছরের জন্য সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা ও একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে৷'