হালুয়াঘাট পৌরসভা নির্বাচনে আলোচনায় আ.লীগ ও ব্যবসায়ীদের প্রার্থী
জমে উঠেছে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট পৌরসভা নির্বাচন। প্রার্থীরা রাত-দিন নির্ঘুম ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। ফেস্টুন-পোস্টারে ছেয়ে গেছে নির্বাচনি এলাকার অলিগলি। মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং স্বতন্ত্র ও ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি—এমন আলোচনা ভোটারোদর মুখে। নির্বাচন কর্তৃপক্ষ বলছে, ভোট সুষ্ঠু ও সুন্দর করতে কেন্দ্রে কেন্দ্রে থাকবে সর্বোচ্চ সতর্কতা।
দ্বিতীয় মেয়াদে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে হালুয়াঘাট পৌরসভা নির্বাচন। নির্বাচনে তিনজন স্বতন্ত্র ও আওয়ামী লীগের একজনসহ চারজন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আট জন সংরক্ষিত নারী ও সাধারণ কাউন্সিলর ২৭ জনসহ মোট ৪০ প্রার্থী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
হালুয়াঘাট পৌরসভা নয়টি ওয়ার্ড ও ১৯ হাজার ৫৪ ভোটার নিয়ে গঠিত। তারমধ্যে পুরুষ ভোটার নয় হাজার ২৮৮ আর নারী ভোটার সংখ্যা নয় হাজার ৭৬৬। আগামী ১৬ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান মেয়র মো খায়রুল আলম ভুঞা, স্বতন্ত্র নাদিম আহমেদ, মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ, আব্দুল মোতালেবসহ চারজন নির্বাচনি মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। মেয়র ও কাউন্সিলর পদপ্রার্থীরা পৌরসভার নানা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের মন জয় করে নির্বাচনি লড়াই জিততে মরিয়া।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হালুয়াঘাট ব্যবসায়ী উন্নয়ন সমিতির সভাপতি নাদিম আহমেদের অভিযোগ, আশপাশের যেকোনো পৌরসভার চেয়ে বর্তমান মেয়র ১০ গুণ বেশি কর ধার্য করায় ব্যবসায়ীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। তাই তিনি সাড়ে চার হাজার ব্যবসায়ীর প্রতিনিধি হিসেবে ভোটে জয়লাভ করবেন। এ ছাড়া কোনো উৎকোচ ছাড়া বয়স্কভাতার কার্ড বিতরণ, তুলনামূলক কম কর ধার্য করা, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ জলাবদ্ধতা দূর করা, খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ, মাদক নিয়ন্ত্রণ করে যুবসমাজকে রক্ষা করা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য বাজেটে উল্লেখযোগ্য বরাদ্দসহ বিজয়ী হলে ১৭ দফা প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করবেন বলে জানান তিনি।
আন্যদিকে বর্তমান মেয়র ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. খায়রুল আলম ভুঞা বলেন, নির্বাচনের আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রশাসক ছিলেন। তিনি কর বৃদ্ধির প্রস্তাব করে গেছেন। বর্তমান পৌর পরিষদ তা বাস্তবায়ন করেছে মাত্র।
মো. খায়রুল আলম ভুঞা এবারও বিজয়ী হলে হালুয়াঘাট পৌরসভাকে উন্নয়নের পাশাপাশি স্মার্ট পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলবেন। নতুন নতুন উন্নয়ন প্রকল্প পাবেন—সেখান থেকেই পৌরসভা চলবে এবং নতুন করে কর বৃদ্ধি করা হবে না। তাই উন্নয়নের জন্য সচেতন নাগরিকরা তাঁকেই ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন বলে দাবি তাঁর।
ভোটাররা বলছেন, অতীতে যিনি এলাকার উন্নয়ন করেছেন, সাধারণ মানুষের পাশে থেকেছেন—সে রকম জনবান্ধব, সৎ, যোগ্য ও মাদক প্রতিরোধে অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী নতুন প্রার্থী হলেও তাঁকেই তাঁরা ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন।
হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জন কেনেথ রিসিল বলেছেন, ভোট সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্ন করতে নয়টি কেন্দ্রে নয়জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ প্রয়োজনীয় সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে।
এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিপরীতে তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সাড়ে চার হাজার ব্যবসায়ীর প্রতিনিধিও আছেন। তিনিও বেশ জনপ্রিয়। ভোটাররা উন্মুখ হয়ে অপেক্ষা করছেন পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করতে। আর প্রার্থীদের জয়-পরাজয়ের ভাগ্য নির্ধারিত হবে আগামী ১৬ মার্চ।