অযৌক্তিক কারণে প্রশাসনে বদলি করা হবে না : ইসি আলমগীর
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, অযৌক্তিক কারণে কাউকে বদলি করব না। তবে যদি যৌক্তিক কোন কারণ থাকে, হ্যাঁ এই অফিসার নিরপেক্ষ নন, তার আচরণে ও কাজে প্রমাণ হয়েছে, তখন বদলি করব। যেমন জামালপুরের একজন জেলা প্রশাসককে আমরা বদলি করেছি, সেই সময় সিডিউল ঘোষণা হয়নি। উনি একটি অনুষ্ঠানে একটি রাজনৈতিক দলের এমপির পক্ষে কথা বলেছেন। তখন তাকে বদলি করেছি।
আজ বুধবার (২২ নভেম্বর) নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর এসব কথা বলেন।
প্রশাসনে নিয়ন্ত্রণ আনার জন্য রদবদল করবেন কি? এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি আলমগীর বলেন, অনেকে নিজেদের ভাবনা থেকে এগুলো বলেন। আইনের ব্যাখ্যাটা হলো আরপিও অনুযায়ী পুলিশের কমিশনার, বিভাগীয় কমিশনার এবং এর নিচে যতো কর্মকর্তা আছেন তারা নির্বাচন কমিশনের অনুমতি ছাড়া বদলি হতে পারবে না। সরকার চাইলে এদের বদলি করতে পারবে না। সবাই আমাদের অধীনে এসেছে, এই আইনটি আপনারা কোথায় পেলেন? যদি এটা দেখাতে পারেন, তাহলে আমরা এর উত্তর দিতে পারব।
মো. আলমগীর আরও বলেন, কোনো বিভাগের কোন কর্মকর্তা কর্মচারী যদি নির্বাচন কমিশনের কাছে মনে হয় তার আচরণ নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিপক্ষে। তখন নির্বাচন কমিশন সেই কর্মকর্তাকে বদলি করতে পারে। রিটার্নিং অফিসার যাদের নিয়ে নির্বাচন করবেন অর্থাৎ প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার এদের জেলার বাইরে বদলি করা যাবে না। পুরো সরকারি আইন ও রাষ্ট্র আমাদের অধীনে এসেছে এটা আপনাদের কে বলেছে? এটা কোথায় পেয়েছেন। টকশো দিয়ে দেশ চলে না। সংবিধানে আছে নির্বাচন কমিশন নির্বাহী বিভাগের সহায়তা চাইলে তারা দিতে বাধ্য। আরওপিওতে আছে নির্বাচন কমিশন কোন সংস্থা ও বিভাগের সহায়তা চাইলে তারা দিতে বাধ্য।
রদবদল প্রসঙ্গে মো. আলমগীর বলেন, আমরা রদবদল করব কেন করব? একটা যৌক্তিক কারণ বা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকতে হবে। যদি অভিযোগ থাকে এই কর্মকর্তা নিরপেক্ষ নন বা অমুকের পক্ষে কাজ করছেন; যদি সেই প্রমাণ থাকে তখন আমরা ব্যবস্থা নেব। তা ছাড়া এতো হাজার হাজার কর্মকর্তাদের বদলি করা হলে প্রশাসনে বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দেশ পরিচালনায় অথবা নির্বাচন পরিচালনায় যে একটা বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে, এই দায়িত্ব কে নেবে। এখন কোন যুক্তিতে আমরা সবাইকে বদলি করব। একটা যুক্তি তো থাকতে হবে। বদলি করলে তাদেরকে প্রচুর টিএ বিল দিতে হবে, এই টিএ বিলের টাকাটা কে দেবে? প্রচুর টাকা লাগলে কয়েকশ কোটি টাকা টিএ বিল লাগবে। আপনারা জানেন একটা কর্মকর্তাকে বদলি করা হলে তার ফ্যামিলির যাওয়া আসার খরচ ও মালামাল পরিবহণের খরচ দিতে হয়। অনেক টাকা দিতে হয়। তারপরে বাসা পরিবর্তন করতে হয়। নতুন অফিসার এসে বলবে বাসায় রং করো, তার একটা খরচ আছে। কারণ আগের বাসায় তিনি থাকবে না। এই টাকা কে দেবে? মুখ দিয়ে বদলি বললেই হয় না। বদলি করতে টাকা লাগে। হ্যাঁ, আমরা অবশ্যই বদলি করবো যদি তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকে বা প্রমাণ পাই।
বিরোধী দল অভিযোগ করছে সরকার নিজের মতো প্রশাসন সাজিয়ে রেখেছে? এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি আলমগীর বলেন, এই অভিযোগ আমি ১৯৭০ সাল থেকে শুনে আসছি। আমি তখন ছোট ছিলাম প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র ছিলাম যথেষ্ট বুঝতাম। তখন ইত্তেফাক পত্রিকা পড়েই দেখতাম এসব অভিযোগ। এর পরে যতো নির্বাচন বাংলাদেশে হয়ে এসেছে, এই ধরনের অভিযোগ শুনে এসেছি। এই অভিযোগ কেয়ামত পর্যন্ত থাকবে।