ইইউ দল নির্বাচন প্রস্তুতি জানতে চেয়েছে, সহিংসতা নিয়েও কথা হয়েছে : সেতুমন্ত্রী
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধি দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠক করেছে। আজ মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ইইউ দল বাংলাদেশের নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে জানতে চেয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক, পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি আরও বলেছেন, বৈঠকে বিএনপির নির্বাচন পণ্ডের সহিংসতা নিয়েও কথা হয়েছে।
বৈঠকে ইইউ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন ডেভিড ওয়ার্ন। আওয়ামী লীগ থেকে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আরাফাত। বৈঠক শেষে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ইইউ দল বাংলাদেশের নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে জানতে চেয়েছে। কথা হয়েছে বিএনপির নির্বাচন পন্ডের সহিংসতা নিয়েও। বিএনপি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জবাব দিচ্ছে সহিংসতা করে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ইইউ প্রতিনিধিদল আমাদের আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দলের বক্তব্য শুনেছেন। বাংলাদেশের বাস্তবতা এই নির্বাচনটা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নির্বাচনটা আমাদের করতে হয়েছে। ২৭টার মতো দল আছে, এক হাজার ৮৯৬ জন প্রার্থী রয়েছেন। এসব বিষয় তারা পজিটিভ নিয়েছেন।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা আমাদের ইলেকশনকে সামনে রেখে তাদের প্রদত্ত যে দায়িত্ব সেটা পালন করছেন। তারা আমাদের কথাই বেশি শুনতে আগ্রহী ছিলেন। মন্তব্য তারা তেমন করতে চাননি। আমরাও ইনসিস্ট করিনি। আমরা আমাদের ইলেকশন নিয়ে কথা বলেছি।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ভয়ভীতি এসব আছে। তারপরও আমরা বলেছি ভোটের টার্ন আউট সন্তোষজনক হবে। মানুষের আগ্রহ আছে। সারাদেশের ভোটারদের মধ্যে যা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তাতে করে টান আউট নিয়ে উদ্বিগ্ন হবার কোনো কারণ নেই। বিএনপি একটি বড় দল, টার্ন আউট নিয়ে প্রশ্ন থাকতেই পারে। পৃথিবীর গণতান্ত্রিক দেশের স্ট্যান্ডার্ড বজায় থাকবে সেটাই আমরা বলেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘সহিংসতা নিয়ে তারা জানতে চেয়েছে। আমরা বলেছি, ভায়োলেন্স তো হচ্ছে। পিসফুল নির্বাচনের জবাব দিচ্ছে ভায়োলেন্স দিয়ে। পাঁচ বছর পরপর ইলেকশন করা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। নির্বাচিত সরকার, নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে, এটাই সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তাদের (ইউরোপীয় ইউনিয়ন) আসলে মাথাব্যথা ইউক্রেন নিয়ে, গাজা-ইজরায়েল-ফিলিস্তিন নিয়ে। কাজেই শক্তিধররা বেশি ঘামাচ্ছেন এসব নিয়ে। কঙ্গোতে একটা ইলেকশন হয়েছে, কারও সেঙ্গে কারও যোগাযোগ নেই। ফলাফল হয়ে গেছে। পাকিস্তান ভালো ডেমোক্রেসির উদাহরণ, এটা কেউ বলবে না।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাদের কোনো কনসার্ন নাই। ইলেকশন নিয়ে প্রস্তুতি কী জানতে চেয়েছে। কনসার্স থাকলেও সেটা তাদের মনে আছে।’
এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা করায় সদস্যপদ বহিষ্কার ও স্থগিতাদেশ নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, দলীয় যে কেউ স্বতন্ত্রপ্রার্থীর পক্ষে ক্যাম্পেইন চালাতে পারে। এখানে দোষের কিছু নেই। সে সুযোগ তাদের দেওয়া হয়েছে। কাউকে বহিষ্কার বা সদস্যপদ স্থগিত করার অধিকার জেলা-উপজেলা কমিটির নেই। তারা শুধু কেন্দ্রে সুপারিশ পাঠাতে পারে। তিনি বলেন, সে অধিকার দেওয়া হয়েছে। যে স্বতন্ত্র ইলেকশন করছে, সে যদি আওয়ামী লীগের হয় তার সঙ্গে অন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কাজ করে তাহলে কোনো সমস্যা দেখি না। আমরা নতুন এক্সপেরিয়েন্স বিশ্বকে দেখাতে চাচ্ছি। জনমত নিয়ে এটাও ডেমোক্রেসি।