টুথব্রাশ এলো কোত্থেকে?
প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে সবারই একটা নিয়মিত কাজ, টুথব্রাশে পেস্ট লাগিয়ে দাঁত মাজতে লেগে যাওয়া। কখনো কি ভাবা হয়, এই টুথব্রাশ কোত্থেকে এলো, কীভাবেই বা এলো? এই ইতিহাস জানতে হলে পিছিয়ে যেতে হবে বহু বছর আগে। সামারভিল নামে একটি ওয়েবসাইটে টুথব্রাশের আগমন এবং বিবর্তনের বিষয়ে মোটামুটি ধারণা পাওয়া যায়।
সৃষ্টির শুরু থেকে অবশ্যই টুথব্রাশ ছিল না। তাই বলে কি আর মানুষ দাঁত মাজত না বা পরিষ্কার করার চেষ্টা করত না? অবশ্যই করত! তারা তখন গাছের ডাল কায়দামতো চিবিয়েই দাঁত পরিষ্কারের কাজটা সেরে ফেলত। আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ সাল পর্যন্ত এভাবেই কাজ চালিয়েছে মানুষ।
এর পর একটু নতুনত্ব এনেছে মিসরের মানুষ। সুগন্ধি কোনো ডালের শেষের দিকটা একটু ছালবাকল ছাড়িয়ে দাঁত পরিষ্কার করার কাজে লাগাত তারা। গ্রিক আর রোমানরা আবার ব্যবহার করত টুথপিক (মানে কাঠি দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করত আর কী!)। অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তি কবরে পর্যন্ত দাঁত পরিষ্কার করার সরঞ্জাম নিয়ে যেতেন, মানে তাঁদের সমাধিতে দাঁত পরিষ্কারের জন্য এগুলোও দিয়ে দেওয়া হতো, যাতে ‘পরবর্তী’ জীবনে তাঁরা ঠিকমতো দাঁত সাফ করতে পারেন!

প্রথম টুথব্রাশ, একেবারে ব্রিসলসমেত, আবিষ্কার হয় চীনে। সেটা পঞ্চদশ শতকের দিককার ঘটনা। প্রাণীর হাড় বা বাঁশ দিয়ে বানানো হতো ব্রাশের হাতল। ঘোড়ার চুল দিয়ে বানানো হতো ব্রিসল! বাণিজ্যিকভাবে প্রথম টুথব্রাশের উৎপাদন হয় ১৭৮০ সালে। উইলিয়াম অ্যাডিস নামের এক ব্রিটিশ ভদ্রলোক ছিলেন এর উদ্যোক্তা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এর বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয় ১৮৫৭ সালে।
১৯৩০ সালে ব্রিসলে ব্যবহৃত হয় নাইলন। এই বিষয় বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ড্যুপন্ট ডি’ নেমরস ছিলেন এর উদ্ভাবক। এই ব্রাশের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘ডক্টর ওয়েস্টস মিরাকল টুথব্রাশ’। পরে ১৯৬০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বৈদ্যুতিক টুথব্রাশ উদ্ভাবন হয়।
টুথব্রাশ যেমনই হোক, রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ও সকালে ঘুম থেকে উঠে দাঁত মাজতে ভুল যেন না হয় কখনো!

ফিচার ডেস্ক