নির্বাচন বিলম্বিত হোক আমরা চাই না : নজরুল ইসলাম খান
নির্বাচন বিলম্বিত হোক সেটা বিএনপি চায় না বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নাসির উদ্দিনের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে বৈঠক শুরু হয়। সন্ধ্যা ৬টায় শেষ হয় বৈঠক। পরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের নজরুল ইসলাম খান এ কথা জানান। প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ এবং ইসির সাবেক অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ জাকারিয়া।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা আজকেও আরও কিছু প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছি—অর্থাৎ নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় আছি। আমরা চাই যথাসময়ে নির্বাচন হোক। জনগণ যেন ঠিক করতে পারে রাষ্ট্র কে চালাবে। এটা বিলম্বিত হোক আমরা চাই না।
নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, খোদা না করুন—অনিবার্য কোনো পরিস্থিতি ছাড়া আমরা নির্বাচন প্রক্রিয়ার বাইরে যেতে চাই না।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আমাদের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, যাকে দেশবাসী শ্রদ্ধা করে, তার রোগমুক্তির জন্য সবাই দোয়া করছে। আমরা তার সুচিকিৎসার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। আল্লাহর মেহেরবানীতে সম্ভবত কাল ভোরে তিনি দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন।
নির্বাচন নিয়ে বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা ১৪–১৫ বছর ধরে বরাবরই দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়েছি। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই, এখনো বলছি যথাসময়ে নির্বাচন হোক।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে ভোটকেন্দ্র ও বুথসংখ্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এবার ভোটটা হচ্ছে দুইটা ব্যালটে—একটা সংসদ সদস্য নির্বাচনের, আরেকটা গণভোটের। যেখানে একটা ব্যালটে ভোট দিতে যথেষ্ট সময় লাগে, সেখানে দুইটা। আমরা দেখলাম, নির্বাচন কমিশন এমন প্রস্তাব করেছে, যেখানে বুথপ্রতি ভোটারের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা চাই, সব ভোটার যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে—কেউ যেন ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন।
বিএনপির পক্ষ থেকে ভোটের সময়সীমা ও বুথ সংখ্যা বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। নজরুল ইসলাম খান বলেন, ভোটের সময় ৮টা থেকে ৪টা থাকে—এটা সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ৫টা করা যায় কিনা বা বুথের সংখ্যাও বাড়ানো যেতে পারে—এসব অনেক কিছুই তারা মাথায় রেখেছেন।
ব্যালট পেপার ছাপানো প্রসঙ্গে নজরুল বলেন, এতদিন ব্যালট সরকারি প্রেসে ছাপানো হয়েছে। আমরা আলোচনা করেছি এবার যেন কোনো প্রাইভেট প্রেসে ব্যালট পেপার ছাপানো না হয়। তারা আমাদের জানিয়েছেন যে কোনো প্রাইভেট প্রেসে ব্যালট পেপার ছাপানো হবে না।
প্রবাসীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা পরামর্শ দিয়েছি পাসপোর্টকে ভোটার হওয়ার জন্য ভ্যালিড ডকুমেন্ট হিসেবে গ্রহণ করতে। বিদেশে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিরাও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন—তারা ভোটার হতে চান কিন্তু তাদের ন্যাশনাল আইডি নেই। পোস্টাল ব্যালটের রেজিস্ট্রেশন পাসপোর্ট দেখে করা—এটাই অনুরোধ। পাসপোর্ট নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকলে ভেরিফাই করতে পারে, সমস্যা নেই।
ভোটার তালিকায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম না থাকা প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম বলেন, উনি বাংলাদেশের নাগরিক। ভোটার তালিকায় নাম না থাকলে—নাম উঠানোর জন্য সময় পার হয়ে যায়নি। এটা কমিশন যখন চাইবে তখনই পারবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক