Skip to main content
NTV Online

শিশু-কিশোর

শিশু-কিশোর
  • অ ফ A
  • জবর খবর
  • আজব
  • রহস্য
  • ধাঁধা
  • জানো কি
  • তোমাদের জন্য
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • শিশু-কিশোর
ছবি

কানে নজরকাড়া লুকে জাহ্নবী কাপুর

বর্ণিল সাজে সেমন্তী সৌমি

লাল টুকটুকে মিম

একান্তে তাহসান-রোজা

মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর ৫ খাবার

মেট গালা ফ্যাশনে দ্যুতি ছড়ালেন কিয়ারা

গ্রীষ্মের ফুলে ভিন্নরূপে রাজধানীর প্রকৃতি

বিমান বাহিনীর অনুশীলন পর্যবেক্ষণে প্রধান উপদেষ্টা

বিমান বাহিনীর অনুশীলন পর্যবেক্ষণ প্রধান উপদেষ্টার

পুলিশ সপ্তাহ শুরু

ভিডিও
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৭৩
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৭৩
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫০
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫০
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ৯
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ৯
জোনাকির আলো : পর্ব ১২৩
নাটক : প্রেম আমার
নাটক : প্রেম আমার
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, পর্ব : ১৩
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, পর্ব : ১৩
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫২৮
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫২৮
মিউজিক নাইট : পর্ব ১৯৫
মিউজিক নাইট : পর্ব ১৯৫
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৫৯
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৫৯
রোজা শাওয়াল রিজওয়ান
১২:৪১, ১৮ মে ২০১৬
আপডেট: ১২:৫৪, ১৮ মে ২০১৬
রোজা শাওয়াল রিজওয়ান
১২:৪১, ১৮ মে ২০১৬
আপডেট: ১২:৫৪, ১৮ মে ২০১৬
আরও খবর
আমি মালালা বলছি: বুদ্ধিমানদের ক্লাস
আমি মালালা বলছি: মৃত্যুর উপত্যকা
আমি মালালা বলছি: শরতের ভূমিকম্প
আমি মালালা বলছি: নারীজাতির সব চিহ্ন মুছে ফেলতে চাইছিল

আমি মালালা বলছি

রক্তাক্ত চত্বর

রোজা শাওয়াল রিজওয়ান
১২:৪১, ১৮ মে ২০১৬
আপডেট: ১২:৫৪, ১৮ মে ২০১৬
রোজা শাওয়াল রিজওয়ান
১২:৪১, ১৮ মে ২০১৬
আপডেট: ১২:৫৪, ১৮ মে ২০১৬

রাতের বেলা মৃতদেহগুলো চত্বরে ফেলে রাখা হতো, যাতে পরদিন সকালে কাজে যাওয়ার পথে সবাই দেখতে পায়। সাধারণত দেহের সঙ্গে একটি নোটে লেখা থাকত, ‘আর্মি এজেন্টের এই দশাই হয়’ অথবা ‘বেলা ১১টার আগ পর্যন্ত এই দেহ ছোঁবে না। ছুঁলে তুমিই হবে পরবর্তী ব্যক্তি। কোনো কোনো হত্যাকাণ্ডের রাতে ভূমিকম্পও হতো, যা মানুষকে আরো সন্ত্রস্ত করে তুলত, যেহেতু আমরা প্রতিট প্রাকৃতিক দুর্যোগকে মানবসৃষ্ট দুর্যোগের সঙ্গে সংযুক্ত করি।

২০০৯ সালের জানুয়ারির এক তীব্র শীতের রাতে তারা শাবানাকে হত্যা করল। সে মিঙ্গোরা শহরের একটি সরু রাস্তা, বানর বাজারে থাকত। বানর বাজার সংগীতশিল্পী ও নৃত্যশিল্পীদের জন্য বিখ্যাত ছিল। শাবানার বাবা জানান, একদল লোক দরজায় টোকা দিয়ে শাবানাকে তাদের জন্য নাচতে অনুরোধ করে। যখন সে নাচের পোশাক পরে এলো, তখন তারা বন্দুক বের করে তার গলা চিরে ফেলার হুমকি দিল। রাত ৯টার কারফিউর পর এটা ঘটেছিল এবং মানুষ তার চিৎকার শুনল। ‘শপথ করছি, আমি এসব বন্ধ করব। আমি আর নাচ-গান করব না। আল্লাহর ওয়াস্তে আমাকে ছেড়ে দাও। আমি একজন নারী, একজন মুসলিম। আমাকে মেরো না।’ এরপর গুলি ছুটল এবং তার ঝাঁজরা শরীরটা গ্রিন চৌকে টেনে নিয়ে যাওয়া হলো। ওখানে এত দেহ রাখা ছিল যে মানুষ একে ‘রক্তাক্ত চত্বর’ বলা শুরু করল।

আমরা পরদিন সকালে শাবানার মৃত্যুর কথা শুনলাম। মোল্লা এফএম-এ ফজলুল্লাহ বলল যে, অনৈতিক চরিত্রের জন্য এই মৃত্যুই তার প্রাপ্য এবং বানর বাজারে নাচ-গান প্রদর্শন করা সব মেয়েকেই একে একে হত্যা করা হবে। আমরা সোয়াতের সুর এবং শিল্প নিয়ে গর্ব করতাম, কিন্তু এখন বেশির ভাগ নৃত্যশিল্পীই লাহোর বা দুবাইতে পলাতক। সংগীতশিল্পীরা গান-বাজনা ছেড়ে দেওয়া এবং ধার্মিক জীবনযাপন করার কথা লিখে তালেবানকে শান্ত করার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিল।

মানুষ শাবানার অসৎ চরিত্র নিয়ে কথা বলত; কিন্তু তারা শাবানার নাচ দেখতেও পছন্দ করত, আবার সে নৃত্যশিল্পী হওয়ার কারণে তাকে ঘৃণাও করত। খানের কন্যা নাপিতের পুত্রকে বিয়ে করতে পারে না, আবার নাপিতের কন্যা খানের পুত্রকে বিয়ে করতে পারে না। আমরা পশতুনরা জুতা ভালোবাসি, কিন্তু মুচিকে ভালোবাসি না; আমরা আমাদের স্কার্ফ ও কম্বল ভালোবাসি, কিন্তু তাঁতিকে সম্মান করি না। কায়িক শ্রমিকরা সমাজে বিরাট অবদান রাখে, কিন্তু স্বীকৃতি পায় না এবং এ কারণেই এদের অনেকেই তালেবানে যোগ দেয়; শেষ পর্যন্ত তারা মর্যাদা ও ক্ষমতা লাভ করে।

তাই মানুষ শাবানার নাচ দেখতে পছন্দ করত, কিন্তু তাকে শ্রদ্ধা করত না এবং সে খুন হওয়ায় কেউ কিছু বলল না। এমনকি কেউ কেউ তালেবানকে ভয় পেয়ে বা সত্যিই এই কাজ সমর্থন করে শাবানার হত্যাকাণ্ডের পক্ষ নিল। শাবানা মুসলিম ছিল না, তারা বলল। ‘সে খারাপ ছিল, তাকে হত্যা করাটা উচিত কাজেই হয়েছে।’

ওটাই সবচেয়ে বাজে দিন কি না, জানি না। শাবানার হত্যার আশপাশের সময়টায় প্রতিদিনই সবচেয়ে খারাপ মনে হতে লাগল, প্রতিটি মুহূর্তই সবচেয়ে জঘন্য মনে হতো। সবখানেই খারাপ খবর—অমুকের জমিতে বিস্ফোরণ, তমুক স্কুল উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, তমুককে জনসমক্ষে চাবুক মারা হয়েছে। হানাহানিগুলো ছিল অসীম এবং অভিভূত হওয়ার মতো। শাবানার খুনের দুই সপ্তাহ পর মাত্তায় এক শিক্ষককে হত্যা করা হলো। সে তালেবানের মতো করে সালোয়ার গোড়ালির ওপর উঠিয়ে পরতে অস্বীকৃত জানিয়েছিল। সে তাদের বলেছিল যে ইসলামের কোথাও এর প্রয়োজন নেই। তারা তাকে ঝুলিয়ে তার বাবাকে গুলি করে।

আমি বুঝতে পারলাম না, তালেবান আসলে কী করতে চাইছিল। ‘তারা আমাদের ধর্মকে অপব্যবহার করছে’, আমি সাক্ষাৎকারে বললাম। ‘আমি আপনার মাথায় বন্দুক ধরে যদি বলি ইসলামই একমাত্র সত্য ধর্ম, আপনি কীভাবে ইসলাম গ্রহণ করবেন?’ তারা যদি পৃথিবীর প্রতিটি লোককে মুসলমান বানাতে চায়, তবে প্রথমে নিজেদের ভালো মুসলিম হিসেবে উপস্থাপন করে না কেন?

বাবা নিয়মিতই প্রত্যক্ষ করা বা শোনা ভয়ানক সব ঘটনা, যেমন পুলিশের মাথা কেটে কাটা মাথা নিয়ে শহর প্রদক্ষিণ এসব দেখেশুনে বিহ্বল হয়ে বাড়ি ফিরতেন। এমনকি যারা শুরুতে ফজলুল্লাহর পক্ষে ছিল, তার লোকদের ইসলামের দণ্ডধারী মনে করত এবং তাকে স্বর্ণ দিয়েছিল, তারাও তার বিপক্ষে যাওয়া শুরু করল। বাবা আমাকে এক মহিলার কথা বললেন, যিনি স্বামী বিদেশে থাকাবস্থায় তালেবানকে উদারহস্তে দান করেছিলেন। তাঁর স্বামী ফিরে এসে যখন দেখলেন, তিনি স্বর্ণ দিয়ে দিয়েছেন, তিনি অত্যন্ত রাগান্বিত হলেন। এক রাতে তাদের গ্রামে ছোট একটি বিস্ফোরণ হলে স্ত্রীটি কাঁদতে থাকলেন। ‘কেঁদো না’, তার স্বামী বলল, ‘এটা তোমার কানের দুল এবং নাকফুলের শব্দ। এখন তোমার লকেট আর চুড়ির শব্দ শোনো।’

তবুও খুব কম লোকই প্রতিবাদ করল। কলেজের রাজনীতিতে বাবার পুরোনো প্রতিদ্বন্দ্বী হইসান-উল-হক হাক্কানী ইসলামাবাদে সাংবাদিক হয়ে গিয়েছিলেন এবং তিনি সোয়াতের অবস্থা নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করলেন। সোয়াত থেকে আমন্ত্রিত কোনো আইনজীবী বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকই এলেন না। শুধু আমার বাবা এবং কিছু সাংবাদিক এলেন। মনে হলো, মানুষ ঠিক করেছে যে তালেবান এখানে থাকার জন্যই এসেছে এবং তাদের সঙ্গে মানিয়ে চলাই ভালো। ‘তালেবানের পক্ষে থাকলে তোমার জীবন শতকরা ১০০ ভাগ নিরাপদ’, মানুষ বলত। এটার জন্যই তরুণরা স্বেচ্ছায় সেখানে যায়। তালেবান মানুষের বাসায় এসে কালাশনিকভ কেনার টাকা চাইত অথবা তাদের পক্ষে যুদ্ধ করার জন্য তাদের ছেলেদের চাইত। ধনীদের অনেকেই পালিয়ে গেল। গরিবদের টিকে থাকার চেষ্টা করা ছাড়া আর কিছু করার ছিল না। তাই আমাদের অনেক পুরুষ খনিতে বা উপসাগরে কাজ করতে চলে গেল, আর পিতাবিহীন পরিবারে তাদের পুত্ররা ছিল সহজ শিকার।

হুমকিগুলো নিকটবর্তী হতে লাগল। একদিন আহমেদ শাহ অচেনা লোকদের কাছ থেকে প্রাণনাশের হুমকি পেয়ে বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতে কিছুদিনের জন্য ইসলামাবাদ গেলেন। ওই সময়ের খুব জঘন্য একটা ব্যাপার হলো, আমরা একে অপরকে সন্দেহ করা শুরু করলাম। এমনকি আমার বাবাও সন্দেহের তালিকাভুক্ত হলেন। ‘আমাদের লোকজন মারা যাচ্ছে, কিন্তু এই জিয়াউদ্দিন এত বাচাল হওয়ার পরও বেঁচে আছে। সে নিশ্চয়ই সিক্রেট এজেন্ট।’ আসলে তাঁকেও হুমকি দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তিনি আমাদের জানাননি তিনি তালেবানের বিরুদ্ধে সাময়িক অভিযান এবং তাদের কমান্ডারদের গ্রেপ্তার দাবি করে পেশোয়ারে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন। পরবর্তীকালে মানুষ তাঁকে জানাল, শাহ দাউরান থেকে তাঁর নামে একটি হুমকি মোল্লা এফএফ-এ শোনা গেছে।

বাবা সেটা উড়িয়ে দিলেন। কিন্তু আমি চিন্তিত হয়ে পড়লাম। তিনি স্পষ্টভাষী ছিলেন এবং এত গ্রুপ ও কমিটির সঙ্গে জড়িত ছিলেন যে প্রায়ই মধ্যরাতের আগে বাড়ি ফিরতে পারতেন না। তালেবান তাঁকে মারতে এলে আমরা যাতে নিরাপদে থাকি, সে জন্য তিনি তাঁর এক বন্ধুর বাসায় ঘুমাতে শুরু করলেন। তিনি আমাদের সামনে খুন হওয়ার ব্যাপারটা সহ্য করতে পারবেন না। বাবা বাড়ি না ফেরা এবং আমি গেট তালা না দেওয়া পর্যন্ত ঘুমাতে যেতে পারতাম না। বাবা বাসায় থাকলে মা পেছনের উঠানে বাইরের দেয়ালের দিকে একটি মই রাখতেন, যাতে হঠাৎ বিপদে পড়লে বাবা বাইরে রাস্তায় নেমে যেতে পারেন। বাবা এ পরিকল্পনায় হাসলেন। ‘অটল কাঠবিড়ালিটার দ্বারা এটা সম্ভব হতে পারে, কিন্তু আমার দ্বারা নয়।’

মা সারাক্ষণই তালেবান এলে তিনি কী করবেন, সে বিষয়ে পরিকল্পনা করতেন। তিনি বালিশের নিচে ছুরি নিয়ে ঘুমানোর চিন্তা করলেন। আমি বললাম, আমি চুপিচুপি বাথরুমে ঢুকে পুলিশকে ফোন দিতে পারি। আমি আর ভাইরা একটা সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কথা ভাবলাম। আমি আবারও তালেবানকে উধাও করে দিতে জাদুর কাঠির জন্য প্রার্থনা করলাম।

একদিন আমি দেখলাম, অটল বাগানে পাগলের মতো মাটি খুঁড়ছে। ‘কী করছ?’ আমি জিজ্ঞেস করলাম। ‘কবর তৈরি করছি’, সে বলল। আমাদের সাময়িকীগুলো হত্যা আর মৃত্যুর খবরে পরিপূর্ণ ছিল, তাই ওর পক্ষে কবর-কফিনের ব্যাপারে চিন্তা করাটা স্বাভাবিকই ছিল। লুকোচুরি আর চোর-পুলিশ খেলার বদলে বাচ্চারা আর্মি বনাম তালেবান খেলত। তারা গাছের ডাল দিয়ে রকেট আর লাঠি দিয়ে কালাশনিকভ বানাত; এগুলো ছিল তাদের আতঙ্কের খেলা।

আমাদের রক্ষা করার কেউ ছিল না। আমাদের ডেপুটি কমিশনার সাইয়েদ জাভিদ তালেবানের সভায় যাচ্ছিল, তাদের মসজিদে নামাজ পড়ছিল, তাদের সভায় নেতৃত্ব দিচ্ছিল। সে নিখুঁত তালিব হয়ে উঠল। তালেবানের অন্যতম লক্ষ্য ছিল এনজিও। তাদের ভাষ্যমতে, ওগুলো ইসলামবিরোধী। এনজিওরা তালেবানের কাছ থেকে হুমকিসংবলিত চিঠি পেয়ে ডিসির কাছে সাহায্যের জন্য গেলে সে কথাই শুনত না। একবার এক সভায় বাবা তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানান, ‘আপনি কার আদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন? ফজলুল্লাহর নাকি সরকারের?’ আমরা আরবিতে বলি, ‘মানুষ রাজাকে অনুসরণ করে।’ জেলার সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ তালেবানের পক্ষে চলে গেলে তালেবানীকরণ স্বাভাবিক হয়ে যায়।

পাকিস্তানে আমরা ষড়যন্ত্রতত্ত্ব পছন্দ করি এবং তা অনেক বেশি হতো। কেউ কেউ বিশ্বাস করত, কর্তৃপক্ষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে তালেবানকে উৎসাহ জোগাচ্ছে। তারা বলল যে, সেনাবাহিনী সোয়াতে তালেবানকে রাখতে চায়, কারণ আমেরিকানরা তাদের ড্রোন নামাতে একটি এয়ারবেজ ব্যবহার করতে চায়। উপত্যকায় তালেবান থাকলে সরকার আমেরিকানদের বলতে পারে যে আমাদের নিজেদের সমস্যা আছে, তাই তোমাদের সাহায্য করতে পারব না। আমাদের সেনাবাহিনী তালেবানকে থামানোর বদলে সাহায্য করছে—বাড়তে থাকা এই মার্কিন সমালোচনার জবাব দেওয়ারও এটা একটা রাস্তা। এখন আমাদের সরকার বলতে পারে, ‘তোমরা বলছ আমরা তোমাদের  অর্থ দিয়ে এই সন্ত্রাসীদের লালন-পালন করছি, তাই যদি হয় তবে তারা আমাদের আক্রমণ করছে কেন?’

‘তালেবান অবশ্যই অদৃশ্য শক্তির সমর্থন পাচ্ছে’, বাবা বললেন। ‘কিন্তু যা ঘটছে, তা এত সহজ নয়। আর তুমি যতই এটা বুঝতে চেষ্টা করবে, ব্যাপারটা ততই জটিল হবে।’

২০০৮ সালে সরকার টিএনএসএম-এর প্রতিষ্ঠাতা সুফি মোহাম্মদকেও কারাগার থেকে মুক্তি দিল। সে তার মেয়েজামাই ফজলুল্লাহর চেয়ে কম উগ্রপন্থী বলে পরিচিত ছিল এবং আশা ছিল যে সে সরকারকে সোয়াতে শরিয়ত আইন প্রবর্তন করতে অনুরোধ করে আমাদের তালেবানি সহিংসতা থেকে মুক্তি দেবে এবং সরকারের সঙ্গে  শান্তিচুক্তি করবে। বাবা এটার পক্ষেই ছিলেন। আমরা জানতাম এটাই শেষ না, কিন্তু বাবা যুক্তি দিলেন যে শরিয়ত প্রতিষ্ঠিত হলে তালেবানের লড়াই করার কিছুই থাকবে না। তারা অস্ত্র নামিয়ে রেখে সাধারণ মানুষের মতো থাকবে। যদি তারা তা না করে, বাবার ভাষ্যমতে, তাহলে বোঝা যাবে যে তারা আসলে কেমন ছিল।

সেনাবাহিনীর বন্দুক তখনো মিঙ্গোরার পর্বতে সেট করা ছিল। আমরা সারা রাত শুয়ে শুয়ে তাদের বুমবুম শব্দ শুনতাম। পাঁচ, দশ, পনেরো মিনিটের জন্য থেমে আমরা ঘুমে ঢলে পড়ার পরমুহূর্তেই তারা গর্জে উঠত। আমরা মাঝেমধ্যে কান ঢেকে রাখতাম বা বালিশের নিচে মাথা দিয়ে রাখতাম, কিন্তু বন্দুকগুলো খুব কাছাকাছি ছিল এবং শব্দও খুব জোরে হতো। এরপর, পরদিন কালে আমরা টিভিতে তালেবানের আরো হত্যার খবর দেখতাম আর ভাবতাম, সারা রাত আর্মি তাদের গর্জনকারী কামান নিয়ে কী করেছে এবং মোল্লা এফএম-এর দৈনিক সম্প্রচারও কেন তারা বন্ধ করতে পারছে না।

আর্মি, তালেবান—উভয়ই শক্তিশালী। মাঝেমধ্যে তাদের রোড ব্লকগুলো একই মূল রাস্তায় এক কিলোমিটারের কম ব্যবধানে থাকত। তারা আমাদের থামাত, কিন্তু তারা একে অপরের উপস্থিতি সম্পর্কে অবগত বলে মনে হলো না। এটা ছিল অবিশ্বাস্য। কেউই বুঝল না, কেন আমাদের পক্ষে কেউ দাঁড়াচ্ছে না। মানুষ বলত, তারা একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। বাবা বললেন, আমরা সাধারণ মানুষরা হলাম পানিকলের দুই পাথরের মাঝে আটকা পড়া তুষের মতো। কিন্তু তিনি তখনো ভীত ছিলেন না। তিনি বললেন, আমাদের এখনো প্রতিবাদ করে যাওয়া উচিত।

আমি কেবল মানুষ এবং বন্দুকের শব্দ শুনলেই আমার হৃদস্পন্দন বেড়ে যেত। মাঝেমধ্যে আমি খুবই ভয় পেতাম, কিন্তু কিছু বলতাম না এবং এর মানে এই নয় যে আমি স্কুলে যাওয়া থামিয়ে দেব। কিন্তু শেষ দিকে ভয় খুবই প্রবল থাকে এবং এ ভয়ই মানুষকে শাবানার বিপক্ষে নিয়ে গিয়েছিল। আতঙ্ক মানুষকে নিষ্ঠুর করে ফেলেছে। তালেবান আমাদের পশতুন ও ইসলামী—উভয় মূল্যবোধই গুঁড়িয়ে দিয়েছে।

আমি স্টিফেন হকিংয়ের ‘এ ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম’ পড়ে নিজেকে বিচ্ছিন্ন রাখতে চাইলাম, যেখানে মহাবিশ্বের সৃষ্টি এবং সময় পেছনে ফিরে যেতে পারে কি-না, এ ধরনের বড় প্রশ্নের উত্তর আছে। আমার মাত্র ১১ বছর বয়স ছিল এবং আমি চাইছিলাম সময় যেন পেছনে যেতে পারে।

আমরা পশতুনরা জানি, প্রতিশোধের পাথর কখনো ক্ষয়ে যায় না এবং কেউ কোনো ভুল করলে তাকে বিপদ-বাধার মুখোমুখি হতেই হবে। কিন্তু কখন? আমরা ক্রমাগত নিজেদের জিজ্ঞেস করে যেতে থাকলাম।

(চলবে)

আমি মালালা বলছি মালালা ইউসুফজাই

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. আসছে এ পি জে আবদুল কালামের বায়োপিক, নায়ক ধানুশ
  2. অক্ষয়ের মামলা, সুদসহ টাকা ফেরত দিয়ে ‘হেরা ফেরি ৩’ ছড়ালেন পরেশ রাওয়াল
  3. শুধু অভিনেতা নন, পেশাদার পাইলটও ছিলেন মুকুল দেব
  4. বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই ঘরবন্দি ছিলেন মুকুল দেব
  5. পরেশ রাওয়ালের বিরুদ্ধে ২৫ কোটির মামলা ঠুকলেন অক্ষয় কুমার
  6. টিজারেই ঝড় তুলল ‘ওয়ার ২’, মুক্তির তারিখ ঘোষণা
সর্বাধিক পঠিত

আসছে এ পি জে আবদুল কালামের বায়োপিক, নায়ক ধানুশ

অক্ষয়ের মামলা, সুদসহ টাকা ফেরত দিয়ে ‘হেরা ফেরি ৩’ ছড়ালেন পরেশ রাওয়াল

শুধু অভিনেতা নন, পেশাদার পাইলটও ছিলেন মুকুল দেব

বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই ঘরবন্দি ছিলেন মুকুল দেব

পরেশ রাওয়ালের বিরুদ্ধে ২৫ কোটির মামলা ঠুকলেন অক্ষয় কুমার

ভিডিও
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৬
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৬
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৭৩
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৭৩
এই সময় : পর্ব ৩৮২২
এই সময় : পর্ব ৩৮২২
গানের বাজার, পর্ব ২৩৪
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৪২
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৪২
জোনাকির আলো : পর্ব ১২৩
মিউজিক নাইট : পর্ব ১৯৫
মিউজিক নাইট : পর্ব ১৯৫
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫২৮
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫২৮
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫০
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫০

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x