যৌতুকের শাস্তি কী?
যৌতুক এক ধরনের সামাজিক ব্যাধি। বিয়ের সময় বা বিয়ের পরে অনেক নারী যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হন। অনেক সময় ঘটনা মৃত্যু পর্যন্ত গড়ায়।
যৌতুকের কারণে কখনো কখনো সংসারজীবনে নেমে আসে অশান্তি। অনেক সময় সংসার ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়ে থাকে।
যৌতুকের সংজ্ঞা
সাধারণ অর্থে যৌতুক বলতে বিয়ের সময় মেয়েপক্ষের কাছ থেকে ছেলেপক্ষের আর্থিক বা অন্য কোনো সুবিধা নেওয়াকে বোঝায়। তবে আইনে বিয়ের শর্ত হিসেবে বর বা কনেপক্ষের দাবি-দাওয়াকে যৌতুক বলে।
১৯৮০ সালের যৌতুক নিরোধ আইন অনুযায়ী, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যদি কোনো পক্ষ অপর পক্ষকে বিয়ের আগে-পরে বা বিয়ে চলাকালে যেকোনো সময় যেকোনো সম্পদ বা মূল্যবান জামানত হস্তান্তর করে বা করতে সম্মত হয়, সেটাই যৌতুক বলে বিবেচ্য হবে। যৌতুক গ্রহণ ও যৌতুক প্রদান অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
উপহার কি যৌতুক?
বিয়েতে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা পর্যন্ত মূল্যমানের উপহার যৌতুক হিসেবে গণ্য হবে না। তবে এখানে শর্ত হচ্ছে যে এই উপহার অবশ্যই বিয়ের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত নয় এমন কেউ প্রদান করতে হবে এবং বিয়ের পণ (যৌতুক) হিসেবে প্রদান করতে পারবেন না, উপহার হিসেবে দিতে হবে।
অর্থাৎ বিয়ের শর্ত হিসেবে ৫০০ টাকার সমমূল্যের কোনো কিছুও দেওয়া যাবে না। দিলে তা আইন অনুসারে যৌতুক হবে এবং অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
এ ছাড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ অনুযায়ী, বিবাহ স্থির থাকার শর্তে বা বিবাহের পণ হিসেবে প্রদত্ত বা প্রদানে সম্মত অর্থ, যেকোনো সামগ্রী বা অন্যবিধ সম্পদ হলো যৌতুক।
যৌতুকের শাস্তি
যৌতুক নেওয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ, যা প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর এবং সর্বনিম্ন এক বছর কারাদণ্ড বা জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে।
লেখক: আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট