জমি দখলের আশঙ্কা, আইনি প্রতিকার কী?
পাঠকের প্রশ্ন : আমি পৈত্রিকসূত্রে জায়গার মালিক। আমি বর্তমাসে সে জায়গায় দখলে আছি। কিন্তু স্থানীয় কিছু ভূমি দস্যু আমার সম্পত্তিতে সমস্যা রয়েছে বলে আমার জমি দখলের পাঁয়তারা করছে। আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। যেকোনো সময় তারা সন্ত্রাসী দিয়ে আমার জমি দখল করে নিতে পারে। এ ক্ষেত্রে আমি আইনি প্রতিকার কীভাবে পেতে পারি?
নাজিম ( পাবনা)
আইনজীবীর উত্তর : পাঠক জমি নিয়ে ঝামেলা হলে আপনি ফৌজদারি আদালতে প্রতিকার চাইতে পারেন।
ফৌজদারি প্রতিকার কী?
জমি দখলকে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিলে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৫ ধারা অনুযায়ী প্রতিকার চাইতে পারেন কোনো ব্যক্তি। এই ধারা অনুযায়ী প্রতিকার চাইতে হবে প্রথম শ্রেণির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে। আর এ মামলা করতে হবে বেদখল হয়ে গেলে কিংবা বেদখল হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেওয়ার দুই মাসের মধ্যে। কোনো মামলা করলে ম্যাজিস্ট্রেট প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সমন জারি করবেন। পরবর্তী সময়ে উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে এবং সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে সম্পত্তির দখলদার কে তা নির্ধারণ করবেন। প্রয়োজনে সরেজমিনে গিয়ে তদন্তের আদেশ দিতে পারেন স্থানীয় পুলিশকে। তাদের দেওয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রকৃত দখলদার কে, সে বিষয়ে রায় দেবেন বিচারক। তবে ১৪৫ ধারায় প্রতিকার চাইতে গেলে এখানে স্বত্ব বা মালিকানা দাবি করা যাবে না। এর মাধ্যমে শুধু প্রকৃত দখলদার নির্ণয় করার জন্য প্রতিকার চাওয়া যাবে।
কোথায় ও কীভাবে আইনের আশ্রয় নেবেন
এ ক্ষেত্রে আপনি জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট আইনজীবীর মাধ্যমে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৫ ধারায় পিটিশন বা নালিশি মামলা করতে পারবেন। তবে অবশ্যই মামলা করার সময় আপনার সব অরিজিনাল কাগজপত্র নিয়ে যেতে হবে। বিচারক সে কাগজপত্র যাচাই-বাচাই করে দেখবেন ঘটনা কতটুকু সত্য। তার পরে বিচারক মামলাটি সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেবেন। তদন্ত প্রতিবেদন থানা থেকে আপনার পক্ষে এলে বিচারক প্রতিপক্ষকে সব ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেবেন।
হুমকির প্রতিকার
প্রতিপক্ষের দ্বারা আপনি হুমকির শিকার হলে প্রথমে নিকটস্থ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করবেন। তারপরে সে সাধারণ ডায়েরিটি নিয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে নির্বাহী ম্যাজিস্টেটের নিকট ফৌজদারি কার্যবিধির ১০৭ ধারায় মামলা করতে পারবেন।
লেখক : আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট