৭ জানুয়ারির নির্বাচনে আমাদের অস্তিত্ব নির্ভর করছে : ইসি আনিছুর
৭ জানুয়ারির নির্বাচনে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি ও আমাদের অস্তিত্ব নির্ভর করছে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আনিছুর রহমান। আজ মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর পাবলিক লাইব্রেরি ও টাউন হল মিলনায়তনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ইসি আনিছুর বলেন, নির্বাচনে যারা সরকারি দল বা আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের প্রার্থী তাদের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি। কারণ যেকোনো ধরনের ঘটনা ঘটলে পুরো দায় সরকারের ওপর চলে যায়। নির্বাচনে আচরণবিধি অবশ্যই মেনে চলতে হবে। ৭ জানুয়ারির নির্বাচন শুধু আমাদের চোখেই দেখছি না, এ নির্বাচন বিশ্ববাসী দেখছে। এ নির্বাচনের ওপর দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি ও আমাদের অস্তিত্ব নির্ভর করছে। তাই এমন কিছু করবেন না যাতে আমাদের কঠোরতার চরম পর্যায়ে যেতে হয়। প্রয়োজনে আমরা প্রার্থিতা বাতিল করে দেব। ভোট বন্ধ করে দেব। পুনর্নির্বাচন করব। যতবার প্রয়োজন ততবার নির্বাচন করব, ভোট সুষ্ঠু হতে হবে।
ইসি আনিছুর আরও বলেন, কোথাও কোনো অসুস্থ কাজ করলে, অন্যায় কাজ করলে পরিস্কার নির্দেশনা দেওয়া আছে। আমরা পাঁচজন নির্বাচন কমিশনার রয়েছি। আমরা নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করতে চাই। কাউকে খুশি বা অখুশি করতে নির্বাচন করতে চাই না। জনগণ ভোট দেবে। ভোট গ্রহণের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে দিয়েছি, তৈরি থাকবে।
আনিছুর রহমান আরও বলেন, লক্ষ্মীপুর-১ আসন নিয়ে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ। কিন্তু কেন এমন হবে। যত বড় শক্তিশালীই হোক আমরা কাউকে ছাড় দেব না। আমরা যখন প্রার্থিতা বাতিল করে দেব, তখন কারোরই কিছু করার থাকবে না। এরপর পুনর্নির্বাচন হলেও আপনি আর নির্বাচন করতে পারবেন না। সমগ্র বাংলাদেশে একইভাবে কেউ কোনো ঘটনা ঘটাবেন প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যাবে। কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। অন্যায় কেউ করতে পারবেন না। ভোটে অবৈধভাবে কেউ বাক্স ভরার চিন্তা করলে, ভুলে যান। কারণ ভোট বাতিল হয়ে যাবে। ভোট সেখানে আবার হবে। প্রয়োজনে একটা আসনের সমগ্র কেন্দ্রের ভোট বাতিল করা হবে। গাইবান্ধা-৫ আসন তার উদাহরণ।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের লক্ষ্মীপুর জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কুমিল্লার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন ও লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ।
এ সময় প্রার্থীদের মধ্যে বক্তব্য দেন লক্ষ্মীপুর-১ আসনের প্রার্থী আনোয়ার হোসেন খান (নৌকা), এম এ গোফরান (কেটলি), হাবিবুর রহমান পবন (ঈগল), লক্ষ্মীপুর-২ আসনের প্রার্থী নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন (নৌকা), বোরহান উদ্দিন আহমেদ মিঠু (লাঙল), লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের প্রার্থী গোলাম ফারুক পিংকু (নৌকা), এম এ সাত্তার (ট্রাক), মোহাম্মদ রাকিব হোসেন (লাঙল), লক্ষ্মীপুর-৪ আসনের প্রার্থী মোশারফ হোসেন (নৌকা) ও ইস্কান্দার মির্জা শামীম (ট্রাক) প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, লক্স্মীপুরের চারটি সংসদীয় আসনে ১৪ লাখ ৯৬ হাজার ৫৯৬ জন ভোটার রয়েছে। এরমধ্যে সাত লাখ ৭৪ হাজার ১৯৩ জন পুরুষ, সাত লাখ ২২ হাজার ৩৯৯ নারী ও চারজন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার। জেলার পাঁচটি উপজেলার চারটি পৌরসভা ও ৫৮টি ইউনিয়নে ৪৭৭টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে।