যাত্রী হয়রানি ঠেকাতে বিমানবন্দরে ভ্রাম্যমাণ আদালত
যাত্রী হয়রানি ঠেকাতে বিমানবন্দরে বসানো হয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের ভ্রাম্যমাণ আদালত। যাত্রী হয়রানির জন্য দেশি-বিদেশি এয়ারলাইনসগুলোকে আর্থিক জরিমানা করা হচ্ছে। তেল চুরিসহ নানা অনিয়মের কারণে বিমানের কর্মকর্তাদের পাঠানো হচ্ছে জেলে।
আগামী ছয় মাসের মধ্যে শতভাগ সেবা ও শৃঙ্খলা ফিরে আসবে বলে জানিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বিদেশি এয়ারলাইনসগুলো বলেছে, কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই এমন অভিযান অব্যাহত থাকলে বিমান পরিচালনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সংশ্লিষ্ট বিদেশি এয়ারলাইনস।
যুক্তরাজ্যে কার্গো বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারির পর থেকেই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ব্যাগের অতিরিক্ত ওজন, অতিরিক্ত বুকিং এর কারণ দেখিয়ে যাত্রা বাতিল করলেও কোনো ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে না এয়ারলাইনসগুলো। যাত্রীদের এমন অভিযোগ আমলে নিয়ে বিমানবন্দরে বসানো হয়েছে ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয়। বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত এক মাসে ফ্লাই দুবাই, এয়ার এরাবিয়া, সৌদিয়া, কাতার এয়ারওয়েজ ও টার্কিশ এয়ারলাইনসকে বিভিন্ন আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। তেল চুরির অভিযোগে বিমানের এক কর্মকর্তাকে দেওয়া হয়েছে জেল-জরিমানা।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট শরীফ মো. ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন, বিমানবন্দরের ইমেজ পুনরুদ্ধারে আইন অনুযায়ী কাজ করছেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘সেবা এবং নিরাপত্তা এই দুটিই আমাদের এখানকার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশে সার্ভিস দিতে হলে তার স্ট্যান্ডার্ড এবং আমার স্ট্যান্ডার্ড দুটোকে ম্যাচ করেই তাকে সেই সেবাটি দিতে হবে। তারা অন্যান্য এয়ারপোর্টে যে সেবাটা দিচ্ছে সেটা যখন দিতে চাচ্ছে না, তখনই আইনের আওতায় তাদের বাধ্য করার চেষ্টা করছি এবং আমরা অনেক দূর এগিয়ে গেছি।’
বিদেশি এয়ারলাইনসদের সংগঠন-বোর্ড অব এয়ারলাইনস রিপ্রেজেন্টেটিভের ভাইস প্রেসিডেন্ট হানিফ জাকারিয়া জানিয়েছেন, কোনো ঘোষণা ছাড়াই এমন অভিযানে বিব্রত তাঁরা। তিনি বলেন, ‘আমি আমার হেড অফিস, দূতাবাসে জানাব। সরকার টু সরকার কথা হবে। এ কথার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কোন দেশ আমাদের ব্যবসার জন্য ভালো।’
বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ‘আইন মেনেই বিমান পরিচালনা করতে হবে এয়ারলাইনসগুলোকে। যাত্রীরা ঢাকা থেকে কুয়েত যাত্রায় যে ব্যবহার পায়, যখন কুয়েত থেকে লন্ডনে যায় তখন ব্যবহারটা সম্পূর্ণ পাল্টে যায়। আমরা বলেছি, এটি হবে না। এরাই যখন তোমাদের রুটি রুজি দিচ্ছে, তখন এই লোকগুলোকে যথাযথ সম্মান তোমাদের দিতে হবে।’ সমাধানের জন্য সিভিল এভিয়েশনের সঙ্গে খুব শিগগির বিদেশি এয়ারলাইনসদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান বিমানমন্ত্রী।