ব্যাংক খাতের সুশাসনে আইন সংস্কারের দাবি
স্বার্থের সংঘাত ও ব্যাংক খাতে দ্বৈতশাসন রোধকল্পে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বিলুপ্তি দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিলের নেতারা। এছাড়া ব্যাংক খাতের সুশাসন ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট আইন, বিধি ও অন্যান্য সংস্কারের দাবি তাদের।
আজ বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল নেতারা এসব কথা। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তানভীর আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক একেএম মাসুম বিল্লাহসহ অন্যান্য নেতারা ।
বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ১১ দফা দাবি জানিয়েছে। ব্যাংক খাত শক্তিশালী করা, অর্থপাচার রোধ ও দেশের আর্থিক খাতের সুশাসন ফিরিয়ে আনতে তারা এসব দাবিসহ একটি স্মারকলিপি গত মঙ্গলবার অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিনের কাছে পেশ করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংককে অধিকতর শক্তিশালীকরণ, অর্থপাচার রোধ এবং দেশের আর্থিক খাতের সুশাসন ফিরিয়ে আনতে ১১ দফা অবিলম্বে কার্যকর করার দাবি জানায়।
দফাগুলো হলো- বাংলাদেশ ব্যাংক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্ণাঙ্গ স্বায়ত্তশাসন তথা প্রশাসনিক, অপারেশনাল ও অর্থ ব্যয়ের স্বাধীনতা নিশ্চিতকল্পে বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার, ১৯৭২ এ প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জন; স্বার্থের সংঘাত ও ব্যাংকিং খাতে দ্বৈতশাসন রোধকল্পে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বিলুপ্তি; বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদের কাঠামোগত সংস্কার সাধন; ব্যাংক ও আর্থিক খাতের সুশাসন ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট আইন, বিধি ও অন্যান্য সংস্কার সাধন; বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর পদকে সাংবিধানিক পদে অন্তর্ভুক্তকরণ, পূর্ণ মন্ত্রীর মর্যাদা প্রদান এবং গভর্নর হিসেবে খ্যাতিসম্পন্ন অর্থনীতিবিদ বা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তা নিয়োগ; ডেপুটি গভর্নর ও বিএফআইইউ প্রধানের পদকে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মিত পদে রূপান্তর এবং সিনিয়র সচিব পদমর্যাদা প্রদান; বাংলাদেশ ব্যাংক এর গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ (সুদ হার, বিনিময় হার, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স প্রদান ইত্যাদি) প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও প্রভাবমুক্তকরণ; বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকের পদকে গ্রেড-১, পরিচালকের পদকে গ্রেড-২ ও অতিরিক্ত পরিচালকের পদকে গ্রেড-৩ এ উন্নীতকরণ এবং ওয়ারেন্ট অব প্রেসিডেন্স-এ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের অন্তর্ভুক্তকরণ; অষ্টম বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বিশ্বের অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ন্যায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা- কর্মচারীদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রবর্তন; বিগত বছরসমূহে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যে সকল সুবিধা বাতিল/হ্রাস করা হয়েছে তা পুনর্বহালকরণ; এবং (১১) অন্তর্মুখী রেমিট্যান্স প্রবাহ ও বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশন/দূতাবাসসমূহে ব্যাংকিং এটাচি পদ সৃষ্টিপূর্বক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের পদায়ন।