প্রবাসীদের যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট প্রদানে সময় বাড়ছে
নির্ধারিত সময় চলতি বছরের নভেম্বরের মধ্যে প্রবাসে থাকা অর্ধলক্ষাধিক বাংলাদেশিকে যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট (এমআরপি) দেওয়া নিয়ে আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান পরিবহন সংস্থার কাছে আরো তিন বছর সময় বাড়ানোর আবেদন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পাসপোর্ট অধিদপ্তর। তাড়াতাড়ি এমআরপি না পেলে সমস্যার মধ্যে থাকবেন প্রবাসীরা। এতে তাঁদের জীবনে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
নির্ধারিত সময়ে প্রবাসীদের এমআরপি দেওয়া প্রসঙ্গে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এটা নিয়ে একটু বিপাকেই আছি। প্রবাসীদের অনেককেই এখনো এমআরপি দেওয়া সম্ভব হয়নি। তাঁদের তো বিদেশের নিরাপত্তা বাহিনী রাস্তা থেকে ধরবে, আর প্লেনে উঠিয়ে দেবে। আমি তাঁদের (পাসপোর্ট অধিদপ্তর) এও বলেছি, আপনাদের যদি প্রিন্টার মেশিন লাগে, ক্যামেরা লাগে আমরা আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে কিনে দেব। লোকও দেব। তাঁদের বেতনও দেব। দয়া করে বেশি করে টিম লাগান, যাতে এই জাতীয় বিপর্যয় না আসে।’
বছর চারেক আগে শুরু হয় যন্ত্রে এমআরপি দেওয়ার কার্যক্রম। আর তখন থেকেই দেশের বাইরে কর্মরত প্রায় ৭৫ লাখ বাংলাদেশিকে এ ধরনের পাসপোর্ট দেওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান পরিবহন সংস্থার বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হচ্ছে চলতি বছরের নভেম্বরে। কিন্তু এখন পর্যন্ত দেশের বাইরে থাকা অন্তত ২৫ লাখ বাংলাদেশিকে এমআরপি দেওয়া সম্ভব হয়েছে বলে দাবি পাসপোর্ট অধিদপ্তরের। মাস কয়েক ধরে অনেক দৌড়ঝাঁপ শুরু হলেও নির্ধারিত সময়ে আর কতজনকে এমআরপি কার্যক্রমের আওতায় আনা যাবে, তা নিয়েই যত চিন্তা প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রীর।
বহির্গমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এন এম জিয়াউল আলমের দাবি, বাইরের প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ায় শুরুতে কিছুটা বাধা-বিপত্তি ছিল। এখন তার অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা গেছে।
তবে যত চেষ্টাই করা হোক না কেন, আট মাসে সব প্রবাসীর হাতে এমআরপি দেওয়া প্রায় অসম্ভব বলে মনে করেন তিনি। তাই আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান পরিবহন সংস্থার কাছে সময় বাড়ানোর আবেদন করছেন তাঁরা।
জিয়াউল আলম বলেন, ‘আমাদের হাতে যে সময়টা আছে, আমরা হয়তো অনেক দূরে যেতে পারব। কিন্তু শেষ করতে পারব কিনা, এটা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। এ জন্য আমরা ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চেয়েছি। তবে এত সময় পাব কিনা জানি না। যদি আরো এক বছরও সময় পাই, তবে পেরে যাব।’
এমআরপি না পেলে প্রবাসীদের সমস্যায় পড়তে হতে পারে বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) প্রকল্প সহযোগী কর্মকর্তা অনিন্দ্য দত্ত। তিনি বলেন, ‘সরকার অবশ্যই এ নিয়ে সচেতন। সরকার যদি প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে বা উপকরণ সরবরাহ নিয়ে যদি কোনো অনুরোধ করে থাকে তবে যতটা সাধ্য আমরা সহায়তা করব।’
বছর বছর যাদের হাত ধরে দেশের বাইরে থেকে আসছে কোটি কোটি টাকার প্রবাসী আয়, তাদের যেন কোনো সমস্যা না হয়— সে বিষয়ে সরকারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ারও তাগিদ সংশ্লিষ্টদের।