'অবাধ্য' বাড়িমালিকদের চিহ্নিত করা হচ্ছে
যেসব বাড়ির মালিক ২৫ হাজার টাকার বেশি ভাড়া পেয়েও ব্যাংকে জমা দিচ্ছেন না, তাঁদের তালিকা করতে কাজ করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আসছে অর্থবছরে (২০১৫-১৬) দাখিলকৃত আয়ের বিবরণী দেখে আইন লঙ্ঘনকারী বাড়ির মালিকদের করের আওতায় আনতে এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে আয়কর নীতি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
২০১৪ সালের ১ জুলাই এ বিধান কার্যকর হলেও খুব কম সংখ্যক বাড়ির মালিকই তা মেনেছেন, যা এনবিআরের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে।
আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪-এর ধারা ৩৫ এবং বিধি ৮এ অনুসারে বাড়ি ভাড়া ব্যাংক হিসাবে জমা করার বিধান করা হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, এক বা একাধিক ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে বাড়ি ভাড়া বাবদ মাসিক মোট ২৫ হাজার টাকার বেশি অর্থপ্রাপ্ত হলে বাড়ির মালিককে ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে তা গ্রহণ করতে হবে।
এই বিধান সব বাড়ি, আবাসন ও বাণিজ্যিক জায়গার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। ব্যক্তি, ফার্ম, কোম্পানি বা যৌথ মালিকানার ক্ষেত্রেও এ বিধান প্রযোজ্য হবে। এ ক্ষেত্রে নিবন্ধনের জন্য বাড়ির ভাড়াটিয়ার নাম, ঠিকানা, ভাড়া পরিশোধের তারিখ, ভাড়া বাবদ প্রাপ্ত অর্থের পরিমাণ ইত্যাদি উল্লেখ করতে হবে। প্রয়োজনে আলাদা রেজিস্টারে সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে।
অবাধ্য বাড়ির মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এই বিধান অনুযায়ী। বিধানে উল্লেখ করা হয়েছে, এ বিধান পরিপালন করা না হলে গৃহসম্পত্তি বাবদ অর্জিত আয়ের ওপর প্রদেয় আয়করের ৫০ শতাংশ অথবা ন্যূনতম পাঁচ হাজার টাকা (যেটি বেশি) হারে বাধ্যতামূলকভাবে জরিমানা দিতে হবে।
আসছে অর্থবছরের মধ্যেই এ বিষয়টি কার্যকর করতে এনবিআর এরই মধ্যে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে সচেতনতামূলক প্রচার চালানো শুরু করেছে।
এ ব্যাপোরে বাড়ির মালিকদের সংশয় দূর করতে তাদের নিয়ে সচেতনতামূলক কর্মশালা আয়োজন করবে এনবিআর।
রাজস্ব বাড়াতে গত বছরের জুলাই এই বিধান চালু করে সরকার। গত বছর এনবিআরের একটি জরিপে দেখা যায়, করযোগ্য আয় থাকা সত্ত্বেও এক লাখ ৬৬ হাজারের বেশি বাড়ির মালিক কর দেন না।
এখন ভাড়াটিয়ারা ক্রস চেকের মাধ্যমে অথবা বাড়ির মালিকের ব্যাংক হিসাবেও নগদ জমা দিতে পারেন। কোনো ভাড়াটিয়া বাড়ির মালিককে নগদ ভাড়া পরিশোধ করলে, বাড়ির মালিক তাঁর ব্যাংক হিসাবে ওই পরিমাণ ভাড়া জমা দেবেন।
যদি বাড়ির মালিকরা প্রকৃত আয় গোপন করেন তবে, এনবিআর পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বাসার বাড়া নির্ধারণ করবে।
এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ বলেন, অবাধ্য বাড়ির মালিকদের বাসায় বাসায় যেয়ে খুঁজে বের করা এবং তাঁদের কাছ থেকে কর আদায় করা, এটি কষ্টসাধ্য কাজ। তবে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা গেলে এ খাত থেকে বড় অঙ্কের রাজস্ব আহরণ করা সম্ভব।