তাঁর কর্ম, সাহস, দৃঢ়তা আমাদের কাছে পাথেয় হয়ে থাকবে

Looks like you've blocked notifications!

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বাংলাদেশের জাতীয় নেতা, ১৪ দলের মুখপাত্র, সাবেক মন্ত্রী, জাতীয় চার নেতার অন্যতম এম মনসুর আলীর সুযোগ্য পুত্র, প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত সহকর্মী মুক্তিযোদ্ধা শ্রদ্ধাভাজন জননেতা মোহাম্মদ নাসিম আর আমাদের মাঝে নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

এটা আমাদের জন্য একটি অনেক বড় আঘাত। কারণ, তাঁর মতো একজন জনমুখী, কর্মীবান্ধব, দেশপ্রেমিক নেতা সব সময় তৈরি হয় না। দীর্ঘ পাঁচ দশকের পথপরিক্রমায় তিনি মোহাম্মদ নাসিম হয়ে উঠেছিলেন। যেকোনো কঠিন পরিস্থিতিতে মোহাম্মদ নাসিম একটি সাহসের নাম।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর খুনিরা পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছিল। যার অন্যতম এম মনসুর আলী প্রয়াত নেতার বাবা। সে রকম একটি কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও অসীম সাহস নিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সংগ্রামে ছিলেন অকুতোভয়।

স্বৈরাচার খুনি জিয়ার অত্যাচার, জেল-জুলুম মোহাম্মদ নাসিমকে দমাতে পারে নাই। ১৯৮১ সালের ১৭ মে প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা বাংলাদেশে পদাপর্ণের পর থেকে রাজনৈতিক ছায়াসঙ্গী হয়ে গণতন্ত্র, ভোট ও ভাতের অধিকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সংগ্রামে প্রয়াত নেতা ছিলেন সব সময় পুরোভাগে।

আমি সদ্যপ্রয়াত নেতার সংস্পর্শে আসি সম্ভবত ১৯৮৭ সালে। যুবলীগের সম্মেলনে দিনাজপুরে গিয়েছিলেন জননেতা আমির হোসেন আমুর সঙ্গে। তখন তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ছিলেন, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের উত্তাল সময়। তার পর থেকে সে সম্পর্ক আরো কাছাকাছি হয়েছে।

রাজনৈতিক উপদেশ, দিকনির্দেশনা আমাকে পথ দেখিয়েছে। অনেক স্মৃতি...! সাংগঠনিক কাজ করতে গিয়ে প্রয়াত নেতার সঙ্গে কত হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়েছি, তা নিরূপণ করা সম্ভব নয়। তাঁকে কখনো ক্লান্ত হতে দেখিনি।

২০০১ সালের পর খালেদা-নিজামীর দুঃশাসনের বিরুদ্ধে রাজপথে মোহাম্মদ নাসিম একটি প্রেরণার নাম ছিলেন।

১/১১-এর সময় গ্রেপ্তার করে নির্যাতন করা হয়েছিল তাঁকে। সেই সময় শারীরিক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক হস্তক্ষেপে উন্নত চিকিৎসায় তাঁকে বিদেশ পাঠানো হয়েছিল। তিনি সুস্থ হয়ে এলেও শারীরিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেননি। কিন্তু তাঁর মনোবল ছিল দৃঢ়। শারীরিক সীমাবদ্ধতাটাকে মানসিক দৃঢ়তা দিয়ে কাটিয়ে উঠতেন তিনি, যা আমাদের কাছে প্রেরণা।

বিশেষ করে ২০১১ সালের পর স্বাধীনতাবিরোধীদের তাণ্ডবের সময় ১৪ দলীয় জোটের রাজনীতিতে তাঁর ভূমিকা অপরিসীম। আমাকে সব সময় অণুপ্রেরণা দিতেন তিনি। ১৪ দলের জাতীয় নেতাদের নিয়ে সারা দেশ চষে বেড়িয়েছেন। গণমানুষকে সংগঠিত করেছন দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।

এই সময় তাঁর চলে যাওয়া আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি। তবে তাঁর কর্ম, সাহস, দৃঢ়তা আমাদের কাছে পাথেয় হয়ে থাকবে।

প্রয়াত নেতার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা...।

লেখক : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ