বাজেটের চরিত্র বদলাবে কি?

Looks like you've blocked notifications!

জুন মাসে সরকারের বাজেট দেওয়ার সময় ঘনিয়ে এলেই পত্রপত্রিকার সাংবাদিকরা টেলিফোনে অনুরোধ করতে থাকেন বাজেটের সম্ভাব্য গতি-প্রকৃতির ওপর কিছু বিশ্লেষণমূলক মন্তব্য দেওয়ার জন্য। অর্থনীতি সম্পর্কে লেখালেখি করার কারণে আমাদের কাছে তাঁদের প্রত্যাশা, পাঠকদের জন্য বাজেটের চরিত্র সম্বন্ধে আগাম কিছু ইঙ্গিত আমরা দিতে সক্ষম হব এবং বাজেটে কী কী গুরুত্ব পাওয়া উচিত সেটারও কিছু দিকনির্দেশনা দিতে পারব।

১৯৮১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করে দেশে ফিরে আসার পর ৩৪ বছর ধরে প্রায় প্রতিবছর মে-জুন মাসে বিভিন্ন পত্রিকায় আমার একাধিক লেখা প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশের মতো একটি জনবহুল স্বল্পোন্নত দেশের সরকারি বাজেটে কোন কোন বিষয় অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত সে সম্পর্কে। যেহেতু ডক্টরাল প্রোগ্রামে পাবলিক ফিন্যান্স এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন আমার বিশেষায়নের দুটো প্রধান ক্ষেত্র ছিল, সে জন্য এ দেশের বাজেটের চরিত্র বদলানোর প্রয়োজনকে আমি সবিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আসছি বরাবরই। বাংলাদেশে সাংবিধানিকভাবেই যেহেতু রাষ্ট্রকে জনগণের মধ্যে আয় ও সম্পদ পুনর্বণ্টনের মূল এজেন্টের ভূমিকা পালনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাই এ দেশের সরকারের বাজেট শুধু সরকারের আয়-ব্যয়ের খতিয়ান নয়, এটাকে প্রস্তুত ও উপস্থাপন করতে হবে ক্ষমতাসীন সরকারের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দর্শনের গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে এবং আয় পুনর্বণ্টন ও বৈষম্য নিরসনের কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে। এভাবে দেখতে গেলেই হতাশ হয়ে যাই যে গত ৩৪ বছরে সামরিক সরকার (১৯৮১-১৯৯০), অন্তর্বর্তীকালীন সরকার (১৯৯০-৯১), নির্বাচিত বিএনপি সরকার (১৯৯১-৯৬), প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকার (১৯৯৬), নির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকার (১৯৯৬-২০০১), নির্বাচিত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার (২০০১-২০০৬), তত্ত্বাবধায়ক নামধারী সামরিক বাহিনী-সমর্থিত সরকার (২০০৭-৮) এবং নির্বাচিত আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার (২০০৯-২০১৫) ক্ষমতাসীন থেকে প্রতিবছর বাজেট ঘোষণার পরও এ দেশের বাজেটের চরিত্র তেমন একটা বদলায়নি। বরং সামরিক সরকারগুলোর ও বিএনপির পুঁজিবাদ-পছন্দ রাজনৈতিক দর্শনের কারণে বাজেটকে অপব্যবহার করে এ দেশে আয় ও সম্পদ বণ্টনের বৈষম্যকে বিপজ্জনকভাবে বাড়িয়ে ফেলা হয়েছে, যেটা বৈষম্য-পরিমাপক গিনি সহগ ১৯৭২ সালের ০.৩২ থেকে বেড়ে ২০১০ সালের বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপে (হাউসহোল্ড ইনকাম এন্ড এক্সপেনডিচার সার্ভে) ০.৪৬৫-এ পৌঁছে যাওয়ার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। (পাঠকদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি, যেসব দেশে গিনি সহগ ০.৫ এর বেশি, সেসব দেশগুলোকে অর্থনীতি শাস্ত্রে ‘উচ্চ আয় বৈষম্যের দেশ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অতএব, বাংলাদেশে সামরিক শাসকদের এবং বিএনপির ভুল ধনাঢ্য-তোষণনীতির ফলে এই বৈষম্য বৃদ্ধির দুষ্টচক্রটি সৃষ্টি হয়েছে বলা চলে। গত ৪৪ বছরে এ দেশে প্রায় ৪০ হাজার কোটিপতি সৃষ্টি এই ভুলের প্রতিফলন।) বাজেটের চরিত্র পরিবর্তন বলতে আমি কী বোঝাতে চাচ্ছি তা নিচের আলোচনায় ব্যাখ্যা করছি :

১)   বাজেটের রাজস্ব সংগ্রহ, ব্যয় বরাদ্দ এবং সরকারি ঋণ সংগ্রহ ও ব্যবহারের গতি-প্রকৃতির মাধ্যমেই ফুটে উঠবে বাজেটের চরিত্র। যেমন, সরকারের আহরিত মোট রাজস্ব এবং সরকারি ব্যয় জিডিপির শতাংশ হিসেবে কোথায় অবস্থান করছে? বাংলাদেশে এখনো সরকারি রাজস্ব-জিডিপির অনুপাত মাত্র সাড়ে ১২ শতাংশ, যা দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও নেপালের চেয়ে কম। এ দেশের কর-জিডিপির অনুপাত মাত্র ১০ শতাংশ। তার মানে, এ দেশের ধনাঢ্য ব্যক্তিদের কর দিতে বাধ্য করার ব্যাপারে বাংলাদেশের সরকারগুলোর ব্যর্থতা এখনো কাটিয়ে ওঠা যায়নি। দুর্নীতি এখনো দোর্দণ্ড প্রতাপে রাজত্ব করছে তাবৎ কর আদায় সংক্রান্ত প্রশাসনিক বিভাগগুলোতে। এই ব্যাপারে বাংলাদেশের গত ৪৪ বছরের সব সরকারের ব্যর্থতা পর্বতপ্রমাণ। ২০০১ সাল থেকে ২০০৫-পরপর পাঁচ বছর দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার মাধ্যমে এই ব্যর্থতা প্রমাণিত হওয়ার পরও কোনো সরকারই এই দুর্নীতি মোকাবিলায় আন্তরিক প্রয়াস নেয়নি। এমনকি ২০০৭-০৮ সালের সামরিক বাহিনী-সমর্থিত তথাকথিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রশংসনীয় দুর্নীতি দমন তৎপরতাও যতখানি রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের টার্গেট করেছিল, ততখানি এই চরম দুর্নীতিগ্রস্ত বিভাগগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টার্গেট করেনি কোন রহস্যজনক কারণে। আয়কর বিভাগ, ভ্যাট কর্মকর্তা-কর্মচারী, কাস্টমস বিভাগ, ভূমি রাজস্ব বিভাগ- এগুলোর কতজন কর্মকর্তা-কর্মচারী ওই সময়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় পড়েছিল সে হিসাবটা নিলেই এই রহস্যজনক অনাগ্রহের বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। এহেন সর্বগ্রাসী প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি বিস্তারের কারণে এ দেশে মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট), আমদানি শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক ও সারচার্জের মতো পরোক্ষ করের ওপর বাজেটের অতিনির্ভরতা কাটানো যাচ্ছে না। এখানে জোর দিয়ে বলা প্রয়োজন, ব্যবসায়ী বা আমদানিকারকরা এসব পরোক্ষ কর আদায় করতে ভূমিকা পালন করলেও তাঁরা এসব করের শুধুই ‘সংগ্রহে সহায়তাকারী’, পরোক্ষ করের প্রকৃত করদাতা ভোক্তা হিসেবে খুচরা ক্রেতারা। তাই, মাঝে মাঝে যখন কোনো কোনো ব্যবসায়ী নেতাকে বড় গলায় বলতে শুনি ‘আমরাই কর দিয়ে সরকার চালাই’ তখন খুব রাগ লাগে। মূল সমস্যা হলো, বাংলাদেশে যাঁদের সামর্থ্য আছে, তাঁরা ঘুষ দিয়ে কর ফাঁকি দেওয়ার জন্যই প্রাণপাত প্রয়াসে লিপ্ত থাকেন। সে জন্য আয়কর, করপোরেট আয়কর হোক কিংবা ব্যক্তিগত আয়কর হোক, সেটাকে যথোপযুক্ত পরিমাণে আদায় করতে পারছে না সরকারি প্রশাসনযন্ত্র।

২)   পরোক্ষ করের ওপর যতদিন এই অতিনির্ভরতা কাটানো যাবে না, ততদিন বাংলাদেশের কর ব্যবস্থাকে প্রগতিশীল করা যাবে না। প্রগতিশীল কর ব্যবস্থার মানে হলো, যাঁর কর বেশি দেওয়ার সামর্থ্য রয়েছে তাঁর ওপর আনুপাতিকভাবে বেশি বেশি হারে কর আরোপ করা এবং কার্যকরভাবে তাঁকে কর প্রদানে বাধ্য করে বাস্তবেও তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি পরিমাণ কর রাজস্ব আহরণ করা। রাষ্ট্রকে সংবিধানে আয় পুনর্বণ্টনের মূল এজেন্ট হিসেবে বলা হলেও যতদিন সরকারি রাজস্ব আহরণের প্রধান সূত্র আয়কর (কেন্দ্রীয় সরকারের জন্য) এবং সম্পত্তি করের (স্থানীয় সরকারের জন্য হোল্ডিং ট্যাক্সের আদলে) মতো প্রত্যক্ষ কর না হবে, ততদিন বাজেটের চরিত্র বদলাচ্ছে বলা যাবে না। সুইডেন, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি ও বেলজিয়ামের মতো ইউরোপের কল্যাণ রাষ্ট্রগুলোতে জিডিপির ৩৫-৪০ শতাংশ এই ধরনের প্রত্যক্ষ কর থেকে আহরণ করে ওই রাজস্ব শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা, বেকার ভাতা, পরিবেশ সংরক্ষণ ও খাদ্যনিরাপত্তার পেছনে ব্যয় করা হয় বলে ওই সব দেশে দারিদ্র্যকে নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে।

এ দেশের কর ব্যবস্থা ও ব্যয় ব্যবস্থাকে সর্বশক্তি দিয়ে ক্রমান্বয়ে এই আদলে নিয়ে যেতেই হবে, যদিও সরকারি ব্যয়কে জিডিপির ৩৫-৪০ শতাংশে নিয়ে যাওয়া এ দেশের জন্য এখন অসম্ভব ব্যাপার। কর ব্যবস্থাকে পরোক্ষ করের ওপর নির্ভরশীল রেখে দিয়ে মুখের কথায় দারিদ্র্য নিরসন করা যাবে না। এখনো কর-জিডিপি অনুপাতকে ১০ শতাংশের ওপর তুলতে না পারা আমাদের সরকারগুলোর অমার্জনীয় ব্যর্থতা বলতেই হবে। ১৬ কোটি মানুষের দেশে মাত্র ১১ লাখ মানুষ নাকি ব্যক্তিগত আয়কর দিয়ে থাকে, অথচ করদাতা শনাক্তকরণ নম্বরধারীর সংখ্যা নাকি ২২ লাখ, অর্থমন্ত্রীর কথামতো। করপোরেট কর ফাঁকি দেওয়ার জন্য দেশীয় প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশি বহুজাতিক করপোরেশনগুলোর এদেশীয় সাবসিডিয়ারিগুলোর নানাবিধ প্রয়াসেরও অন্ত নেই। কর ফাঁকি দেওয়ার প্রধান পদ্ধতি ‘ট্রান্সফার প্রাইসিং’ উদঘাটন ও প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা এ দেশে এখনো গড়ে তোলা হয়নি। এ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণার অভাব অতীতের অর্থমন্ত্রী ও উচ্চতম পদের আমলাদের মাঝে দেখতে পেয়ে অবাকই হতে হয়েছে। শিশুশিল্পের কথা বলে কিংবা প্রতিযোগিতার দোহাই দিয়ে এ দেশের শিল্প-কারখানা ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলো বছরের পর বছর ‘ট্যাক্স হলিডে’নেওয়াটাকে অধিকার মনে করে। সাড়ে তিন দশক পরও আমাদের পোশাকশিল্পের প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো নানা ফন্দি-ফিকির করে চলেছে আয়কর না দেওয়ার জন্য বা কর মওকুফের জন্য!

৩)   সরকারি ব্যয়ের চরিত্র পরিবর্তনও গত ৪৪ বছরে তেমন একটা করা যায়নি। সিভিল প্রশাসন, প্রতিরক্ষা ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা খাতে প্রয়োজনীয় কিন্তু অনুৎপাদনশীল সরকারি ব্যয়ে এখনো রাশ টেনে ধরা যায়নি। এই পৌনঃপুনিক ধাঁচের ব্যয়গুলো উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো খুবই সম্ভব, কিন্তু কায়েমি স্বার্থবাদী মহলগুলোর সংঘশক্তির কাছে এখনো জিম্মি হয়ে রয়েছে এ দেশের সরকারগুলো। সে জন্য রাজস্ব বাজেটের ৫৮-৬০ শতাংশ প্রতিবছর খরচ হয়ে যাচ্ছে এই তিনটি খাতে। ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধে বরাদ্দ করতে হচ্ছে রাজস্ব বাজেটের আরো ১৭-১৮ শতাংশ। এরপর শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের জন্য তেমন কিছুই আর থাকছে না। শুনলে অবাক হতে হবে যে শিক্ষা খাতে বাংলাদেশের সরকারি ব্যয় এখনো মাত্র জিডিপির ২.২৩ শতাংশ, যা নেপালের চাইতেও কম। ভারতে এই অনুপাত চার শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে, শ্রীলঙ্কায় তা ছয় শতাংশ। বর্তমান সরকার নিজেদের ‘শিক্ষাবান্ধব সরকার’ বলে দাবি করলেও গত সাড়ে ছয় বছরে এই সরকার শিক্ষা খাতের ব্যয়কে জিডিপির ০.২ শতাংশও বাড়ায়নি, শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়ের প্রাণান্তকর দেন-দরবার সত্ত্বেও! স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দেরও একই দুর্দশা। অথচ আমাদের সশস্ত্র বাহিনী এখন ‘ফাইভ স্টার হোটেল’ বানাচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয় বানাচ্ছে, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বানাচ্ছে, মেডিক্যাল কলেজ বানাচ্ছে। নতুন নতুন ক্যান্টনমেন্ট হচ্ছে, নতুন নতুন ব্রিগেড হচ্ছে, ডিভিশন হচ্ছে। সিভিল প্রশাসনের সাইজ ছোট করার যে সুযোগ তথ্য-প্রযুক্তি বিপ্লব নিয়ে এসেছে তা আমরা গ্রহণ করছি না। প্রয়োজনাতিরিক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীর ভারে এখনো এ দেশের সরকার ন্যুব্জ হয়ে রয়েছে। 

৪)   আমাদের দেশে সরকারি ব্যয় এখনো জিডিপির মাত্র ১৮ শতাংশের মতো, যার মধ্যে প্রায় পাঁচ শতাংশের মতো সরকারি ঋণ থেকে আসে। এই পাঁচ শতাংশের মধ্যে দুই শতাংশ বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান, বাকি তিন শতাংশ অভ্যন্তরীণ ঋণ। এখনো এ দেশের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির মাত্র ৪০-৪৫ শতাংশ অর্থায়ন করা যাচ্ছে রাজস্ব বাজেটের উদ্বৃত্ত দিয়ে, বাকিটা আসছে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের অর্থ থেকে। রাজস্ব উদ্বৃত্ত বাড়ানো গেলে আমাদের অর্থনীতির বৈদেশিক ঋণ-নির্ভরতা অতিদ্রুত কমিয়ে ফেলা যেত।

ওপরের আলোচনা থেকে বাজেটের চরিত্র পরিবর্তন বলতে কী বোঝাতে চাইছি সে সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা মিলবে, আশা করি।                

ড. মইনুল ইসলাম : প্রফেসর, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়