যেভাবে মর্মান্তিক ১৫ আগস্ট তৈরি হলো

Looks like you've blocked notifications!

কাঁদো বাঙালি কাঁদো। আজ ১৫ আগস্ট হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির মুক্তির মহানায়ক, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদাত বার্ষিকী। 

১৯৭৫ সালের কাল রাত্রিতে ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে ৭১-এর পরাজিত শক্তি সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে পাকিস্তানি ধারায় ফিরিয়ে নেওয়ার অপচেষ্টা চালায়। সামরিক-বেসামরিক, আমলাতন্ত্র, ষড়যন্ত্রকারী কতিপয় রাজনীতিকের সহযোগিতায় ইতিহাসের মূল ধারাকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা চালায়। আমাদের ইতিাহসের সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত সাংবাদিক লরেন্স লিপৎসুজ লিখেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তান আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও শেখ মুজিবকে কখনোই মেনে নিতে পারেনি।

তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরী কিসিঞ্জার ৭১-এর পরাজয়কে তার ব্যক্তিগত পরাজয় হিসেবে ধরে নিয়েছিলেন। ঠিক একিভাবে পাকিস্তানি সেনা শাসকরা ও তাদের দোসর জুলফিকার আলী ভুট্টোও ৭১-এর পরাজয়কে মনে করেছিলেন ব্যক্তিগত পরাজয় হিসেবে। 

৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলকালেই মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা (সিআইএ) ও পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা (আইএসআই) প্রবাসী সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খুনি মোস্তাকের মাধ্যমে তাদের ষড়যন্ত্রের নীল নকশা প্রণয়নের কাজ শুরু করে।

স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে সিআইএ ও আইএসআই তাদের নীল নকশা প্রণয়নে আরো বেশি কার্যকরী তৎপরতা চালায়। 

১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর অনুগত ছাত্রলীগের দ্বিধা-বিভক্তি ও নতুন রাজনৈতিক দল গঠন, বঙ্গবন্ধু সরকারের বিরুদ্ধে নিয়মতান্ত্রিক ও অনিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত আন্দোলন, চীনপন্থী কমিউনিস্টদের সর্বহারা পার্টিও নামে সশস্র সংগ্রাম ও আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে লুকিয়ে থাকা ষড়যন্ত্রকারীদের অপতৎপরতা বঙ্গবন্ধু হত্যার প্লট তৈরি করতে সহায়তা করে। 

১৯৭৪ সালে এ ভয়াবহ বন্যায় দেশের মানুষ চরম খাদ্য সংকটে নিপতিত হয়। বঙ্গবন্ধু সারা বিশ্বেও মানুষের প্রতি খাদ্য সহায়তার আহ্বান জানান। সিআইএর চক্রান্ত কত গভীর ছিল তা ওই কৃত্রিম দুর্ভিক্ষের কথা স্মরণ করলে দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে উঠে। অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের লিখিত বাংলাদেশ এক রক্তাক্ত দলিল’ বইয়ের পাতায় পাতায় ষড়যন্ত্রের চিহ্নগুলো কাল বেদনার অক্ষরের মতো স্পষ্ট চোখে ভেসে আসে, আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় এক শ্রেণির আওয়ামী লীগার ও বিরোধী দলগুলোর কর্মকাণ্ড। 

বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের হত্যাকাণ্ডটি সংগঠিত হয় কিছু বিপথগামী সেনাকর্মকর্তাদের হাতে, ওই সেনা অফিসারদের মধ্যে যেমন ছিল মুক্তিযোদ্ধা অফিসার, তেমন ছিল পাকিস্তান প্রত্যাগত সেনাকর্মকর্তা। বঙ্গবন্ধু হত্যার যে বিভৎস বর্ণনা উঠে এসেছে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার সাক্ষীদের জবানবন্দিতে তা পড়লে যেকোনো বাঙালির গা শিউরে উঠবে। এ প্রসঙ্গে আমরা পরে আসি।

যদিও তৎকালীন বিরোধী দলগুলো বঙ্গবন্ধু সরকারের পতন ঘটানোর জন্যে নিয়মতান্ত্রিক ও অনিয়মতান্ত্রিক সব পথেই বেচে নিয়েছিল কিন্তু, বঙ্গবন্ধু সরকারের অভ্যন্তরে লুকায়িত শক্তি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মদদে বঙ্গবন্ধুকে খুনের সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এগিয়ে যায়। একটি ছোট্ট উদাহরণ-মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রবাসী সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খন্দকার মোস্তাক আহমদ পাকিস্তানের সংগে কনফেডারেশন কওে ব্যর্থ হয়, এসময় তার সচিব ছিল পরবর্তী কালে অন্যতম ডাকসাইটে আমলা মাহাবুব আলম চাষী। ১৯৭৪ সালের ভয়াবহ বন্যা পরবর্তী দূর্ভিক্ষ মোকাবেলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পিএল ফোর এইট্টির মাধ্যমে যে খাদ্য সহায়তা পাঠিয়েছিল তা ফিরিয়ে নিয়ে যায় এবং বঙ্গোপসাগরে নিক্ষেপ করে। ১৯৭৮ সালের ভয়াবহ বন্যার পর বন্যা উত্তর কর্মসূচিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বনির্ভর বাংলাদেশের কর্মসূচি হিসেবে গ্রহণ করা হয়। এই কর্মসূচির পরিচালক করা হয় মাহাবুব আলম চাষীকে। খন্দকার মোস্তাক তাকে এই পদে নিয়োগের ব্যবস্থা করে। ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে এক ভয়াবহ অস্থিরতার জন্ম দেয়। ১৯৭৫ সালের মার্চ মাসের শেষের দিকে কুমিল্লার বার্ডে এই কর্মসূচির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সম্মেলন হয় সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন খন্দকার মোশতাক, তাহের উদ্দিন ঠাকুর, অধ্যাপক নূরুল ইসলাম, অধ্যাপক খুরশিদ আলম, মাহাবুব আলম চাষীসহ আরো অনেকে। নিজের চোখে দেখা এই ঘটনার সাক্ষ্য দিয়েছেন খুরশিদ আলম।

সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন বিকেলে একটি সামরিক জিপে সাদা পোশাকে মেজর আবদুর রশিদ এবং আরেক সামরিক অফিসার রেস্ট হাউসে আসেন। তাঁরা খন্দকার মোশতাকের কক্ষে প্রবেশ করে। মাহাবুব আলম চাষী এ সময় তাহের উদ্দিন ঠাকুরকে নিয়ে সেই কক্ষে যান। সেখানে তাঁরা ৩০-৪০ মিনিট কথা বলার পর মাগরিবের আযানের আগে সেনা অফিসার দুজন চলে যায়। পরে মে বা জুন মাসে মোশতাকের গ্রামের বাড়ি এলাকার একটি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা শেষে মোশতাকের বাড়িতে চা পানের সময় মোশতাক, তাহের উদ্দিন ঠাকুর এবং শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী কর্মসূচির সমালোচনা করতে থাকেন। খন্দকার মোশতাককে সেদিন এসব নীতি নির্ধারণী কর্মসূচির বিরুদ্ধে বিদ্বেষ মূলক কথা বলতে দেখা যায়। একই বছর জুন-জুলাই মাসে দাউদকান্দি মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে পরিবার পরিকল্পনার এক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে মোশতাক তাহের উদ্দিন ঠাকুর ও আলী আশরাফ উপস্থিত ছিলেন। পরে মাহাবুব আলম চাষীও আসেন। সম্মেলন চলকালে সামরিক জিপে আসেন মেজর আবদুর রশিদ, মেজর ফারুক মেজর শাহরিয়ার এবং আরো কয়েকজন সেনা অফিসার। সম্মেলন শেষে মোশতাক, তাহের উদ্দিন ঠাকুর, মাহাবুব আলম চাষী, মেজর রশিদ , মেজর ফারুক এবং মেজর শাহরিয়ার মোশতাকের গ্রামের বাড়ি যায়। বঙ্গবন্ধুর খুনীদের এই তৎপরতা ছিল গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ এসব বৈঠকের আলোচনায় তারা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করে। কাঙ্ক্ষিত পদোন্নতি না পেয়ে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার আগে লেফটেনেন্ট কর্নেল সুলতার শাহরিয়ার রশিদ খান ১৯৭৩ সালে কুমিল্লায় ছিলেন। খুনি মেজর ডালিম, ক্যাপ্টেন বজলুল হুদা, মেজর আজিজ পাশা প্রথম ফিল্ড আর্টিলারিতে সেখানে কর্মরত থাকাকালে তাঁদের সঙ্গে শাহরিয়ারের ঘনিষ্ঠতা হয়। ওই সময় ঢাকার লেডিস ক্লাবে মেজর ডালিমের এক আত্মীয়র বিয়েতে ডালিমের স্ত্রীসহ কয়েক জন লাঞ্চিত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেনাবাহিনীর লেন্সার ইউনিটের ও দ্বিতীয় ফিল্ড আর্টিলারি রেজিমেন্টের কিছু অফিসার ও অন্যান্য র্যাঙ্কের কিছু সেনা সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা গাজী গোলাম মোস্তফার বাড়ি আক্রমণ ও তছনছ করেন। এই ঘটনার পর শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে খুনি ডালিম ও নূর চৌধুরীসহ কয়েকজনের চাকরি চলে যায়। শাহরিয়ার চাকরি ছাড়ার পর ঢাকায় পুরুনো টিভি ফ্রিজ মেরামতের ব্যবসা শুরু করেন। তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান শেরী এন্টারপ্রাইজ’ ছিল মেজর ডালিম, মেজর নূর চৌধুরী, আজিজ পাশা, ক্যাপ্টেন বজলুল হুদার উঠা-বসার কেন্দ্র। সেখানে তাঁরা আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু ও অন্যান্য নেতার সমালোচনা করতেন। ঠিক এই সময়ে দ্বিতীয় ফিল্ড আর্টিলারির মেজর খুনি খন্দকার আবদুর রশিদ ভারতে প্রশিক্ষণ শেষ করে এর অধিনায়কের দায়িত্বে যোগদান করায় ডালিম একদিন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে পুরো ঘটনা তাঁকে জানিয়ে প্রতিকারের জন্য সাহায্য কামনা করলে মেজর রশিদ তাঁকে সাহায্যের আশ্বাস দেন। এভাবে চলতে থাকে বঙ্গবন্ধু হত্যার নীল নকশা ও বাস্তবায়নের কাজ। 

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড একটি সুপরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞের অংশ। বঙ্গবন্ধুকে যেদিন হত্যা করা হয় সেদিন রাতে শুরু হয় ফিল্ড আর্টিলারির রাত্রিকালীন প্রশিক্ষণের নামে হত্যাকাণ্ড বাস্তবায়নের চূড়ান্ত তৎপরতা। তারা প্রথমে বঙ্গবন্ধুর বাড়ি ঘেরাও করে মেশিনগানের গুলি ছুড়তে থাকে। বঙ্গবন্ধুর আত্মীয়স্বজন যে যেখানে বসবাস করত সেই বাড়িগুলোকেও ঘেরাও করা হয়। বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে প্রথম শহীদ হন বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল। আক্রান্ত হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু কয়েক ঘণ্টা সময় পেয়েছিলেন তিনি তৎকালীন সেনা প্রধানসহ বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানদের এগিয়ে আসার নির্দেশ দিয়েছিলেন। রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু কেউ বঙ্গবন্ধুকে রক্ষা করার জন্য এগিয়ে আসেননি। বঙ্গবন্ধুর ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে যারা নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল তাদের একে একে হত্যা করা হয়।

 একপর্যায়ে বঙ্গবন্ধু নিজেই সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে ঘাতকদের উদ্দেশ্যে বজ্র কণ্ঠে বলেন তোরা কী চাস, তোরা আমাকে কোথায় নিয়ে যেতে চাস কিন্তু ঘাতকের বুলেট বাঙালি জাতির মহানায়ক বঙ্গবন্ধুকে স্তব্ধ করে দেয় স্তব্ধ হয়ে যায় ইতিহাসের চাকা। এরপর একে একে হত্যা ও খুনের জিঘাংসায় মেতে উঠে তারা। বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, শেখ কামাল ও তাঁর নববিবাহিতা স্ত্রী, শেখ জামাল ও নববিবাহিত স্ত্রীসহ পরিবারের সব সদস্যকে মর্মান্তিকভাবে মৃত্যুর কোলে ঠেলে দেয়। বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ ছেলে শেখ রাসেল যার বয়স ছিল ১০ বছর সেই ভয়ে বঙ্গবন্ধুর বাড়ির পাচক রমার কোলে আশ্রয় নেয়। খুনি ঘাতকরা সেখান থেকে শিশু রাসেলকে টেনে হিঁছড়ে নিয়ে হত্যা করে। রাসেল বারবার চিৎকার করে বলছিল আমি আমার মায়ের কাছে যাব। কিন্তু ঘাতকের দল তাকেও রেহাই দেয়নি। একই দিনে খুন হন বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে মুজিব বাহিনীর কমান্ডার, যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনি, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনিকে। খুন করা হয় বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাতকে পরিবারসহ। বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর শিশু সন্তানকেও খুন করা হয়। খুন করা হয় বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতা শেখ আবদুর নাসেরকে। বিদেশে থাকার কারণে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞের ইতিহাস লিখে শেষ করা যাবে না। 

কালের চাকা থেমে থাকে না। ইতিহাস রুখে দাঁড়ায়, এ দেশের ছাত্র জনতা খুনি সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে থাকে। ১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত লাগাতার আন্দোলনের মাধ্যমে ১৯৯০-এর ৪ ডিসেম্বর ছাত্রজনতার দুর্বার আন্দোলনে সামরিক তন্ত্রের পতন ঘটে। পদত্যাগে বাধ্য হয় রাষ্ট্রপতি এরশাদ। 

১৯৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধুবিহীন বাংলাদেশে পদার্পণ করেন সবহারানোর বেদনা নিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। লড়াই সংগ্রামের ধারায় এরশাদের পতনের পর ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার সব সম্ভাবনা থাকার পরও বিরোধী দলে স্থান করে নিতে হয় আওয়ামী লীগকে। ১৯৯৬ সালের অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে বিজয়ী হয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধুকন্যা সর্বংসহা বেদনায় নীল হয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা হন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। সরকার গঠন করে বিদ্বেষপ্রসূত না হয়ে প্রচলিত আইনে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের কার্যক্রমে উদ্যোগী হন।

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচারের রায়ে ২০ জনকে মৃত্যদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। আপিল বিভাগ সেই সাজা বহাল রাখেন। খুনিদের মধ্যে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে পাঁচ খুনির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি। যেসব খুনিদের মৃত্যদণ্ড কার্যকর করা হয় তাঁরা হলেন খুনি কর্নেল ফারুক, মেজর হুদা, কর্নেল মহিউদ্দিন (লেন্সার), কর্নেল মহিউদ্দিন আর্টিলারি ও কর্নেল সুলতান শাহরিয়ার খান। ৬ খুনির মধ্যে লে. কর্নেল নূর চৌধুরী, লে. কর্নেল রাশেদ চৌধুরী, কর্নেল ডালিম, লে. কর্নেল রশীদ, ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদ, রিসালদার মুসলেহ উদ্দিন পলাতক রয়েছে। অপর এক খুনি মেজর পাশা পলাতক অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। 

শোককে শক্তিতে ধারণ করে ১৫ আগস্টে আমাদের শপদ হোক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বাংলাদেশে রূপান্তরিত করার। দাবি জানাই পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে এনে দ্রুত বিচারের রায় কার্যকর করে দেশ ও জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করার। জয় আমাদের অনিবার্য। 

লেখক : আওয়ামী লীগ নেতা ও নব্বইয়ের গণ-অন্দোলনে সর্বদলীয় ছাত্র-ঐক্যের নেতা।