স্মরণ

স্বপ্নের নায়ক সালমান শাহ

Looks like you've blocked notifications!

প্রকৃত নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। রুপালি পর্দায় তিনি সালমান শাহ নামে পরিচিত হন। ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেটের জকিগঞ্জে নানাবাড়িতে জন্ম। কমর উদ্দিন চৌধুরী ও নীলা চৌধুরীর বড় ছেলে ছিলেন সালমান শাহ।

জনপ্রিয় একটি হিন্দি সিনেমার অফিশিয়াল রিমেক ছিল 'কেয়ামত থেকে কেয়ামত'। সোহানুর রহমান সোহানের হাত ধরে ১৯৯২ সালে 'কেয়ামত থেকে কেয়ামত' সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে ধূমকেতুর মতো নায়করূপে আসেন সালমান শাহ। এ সিনেমা মুক্তির পর রাতারাতি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন সালমান।

পর্দায় সালমান শাহর উপস্থিতি, পোশাক-পরিচ্ছেদ, সংলাপ বলার ধরন, হাঁটা কিংবা অভিনয় দক্ষতা সবকিছু মিলিয়ে দর্শকের মনে স্থান করে নিতে সময় লাগেনি এ নায়কের। দ্রুত হয়ে উঠেছিলেন বাংলাদেশে তরুণদের ফ্যাশন আইকন।

বাংলা সিনেমার মাধ্যমে সালমান শাহ যে স্টাইল তৈরি করে গেছেন, এখন পর্যন্ত কি সেটা থেকে কেউ বের হতে পেরেছে?

টি-শার্টের সামনের দিক ইন, পেছন দিকের ইন ছাড়া। মাথায় রুমাল কিংবা চোখে গোল কালো ফ্রেমের চশমা। বড় শার্ট গিট্টু দিয়ে রাখা, মাথায় গামছা বাঁধা কিংবা স্টাইলিশ টুপি।

আচ্ছা, সালমান শাহের এই স্টাইল থেকে কি প্রজন্ম এখনো বের হতে পারছে? সেটা হয়তো সময় বলে দেবে। কিন্তু একটা কথা ধ্রুব সত্য, সালমান শাহের জন্ম হয়েছিল ইতিহাস সৃষ্টি করার জন্য, তিনি তা করতে পেরেছিলেন। মাত্র চার বছরের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারের উপহার দিয়েছেন ২৭টা ব্যবসাসফল ছবি। সৃষ্টি করেছিলেন বাংলা সিনেমায় নতুন এক ধারা। যে ধারার হাত ধরে বাংলা সিনেমা প্রবেশ করেছিল নতুন এক যুগে।

১৯৯৬ সালে আজকের এই দিনে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে স্বপ্নের নায়ক খ্যাত সালমান শাহের আকস্মিক মৃত্যুতে স্তম্ভিত হয়ে যায় পুরো দেশ। তার মৃত্যুর সংবাদ দেশের নানা শ্রেণি-পেশার দর্শকের হৃদয়ে এতটাই দাগ কেটেছিল যে ২১ বছর পরও অনেকে প্রিয় নায়ককে ভুলতে পারেনি। সালমান শাহর মৃত্যুর এত বছর পরও তাঁকে নিয়ে দর্শকের মধ্যে আলোচনা থামেনি, বরং ক্রমেই তা বাড়ছে। বাংলা মিডিয়া তথা বিশ্ব মিডিয়া এখনো সরব তার আলোচনায় প্রতিনিয়ত।

কৌতূহলী মানুষের প্রশ্ন, সালমান শাহর বিশেষত্ব কী ছিল? কেন তিনি এতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন? কেন মৃত্যুর দুই দশক পরেও তাঁর জনপ্রিয়তা কমেনি?

পৃথিবীতে বেঁচে থাকলে সালমান শাহের বয়স হতো এখন ৪৬ বছরের মতো। সালমান শাহ এখন পৃথিবীতে নেই। তাঁর মৃত্যুতে এ দেশের চলচ্চিত্রশিল্পের যে ক্ষতি হয়েছে, তা আজো পূরণ হয়নি। সালমান শাহের কর্ম থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে এগিয়ে যাক বাংলা চলচ্চিত্র।

সালমান শাহের জন্ম হয়েছে দর্শকের  হৃদয়ে বেঁচে থাকার জন্য। এই দেশে চলচ্চিত্রপ্রেমীরা যত দিন বেঁচে থাকবে, সালমান শাহ তত দিন থাকবে।

লেখক : স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান ও রম্য লেখক