প্রতিক্রিয়া

জাতীয় পতাকার আদলে কেক কেন?

Looks like you've blocked notifications!

বিজয় দিবস উপলক্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকার আদলে তৈরি করা একটি কেক কেটে বিজয় দিবস উদযাপনের চেষ্টা করা হয়। প্রশ্ন হলো কেকের আকৃতি এবং রং জাতীয় পতাকার মতো কেন? বারংবার একটা প্রশ্ন মনে আসছে। পতাকা কি শুধু একটি পতাকা। সবুজ আর লাল রঙের কাপড়। নাকি একটি জাতির জতীয় প্রতীক, মুক্তির সনদ। যদি জাতীয় প্রতীক হয়ে থাকে তাহলে এই পতাকার আদলের রঙে কেক তৈরি করা হবে কেন? তারপরও এত বড় একটি দ্বায়িত্বশীল একটি জায়গা থেকে। যা কখনো মানা যায় না। এই সাধারণ সেন্সটুকুও নেই। একটি জাতীয় পতাককে মূল্যায়ন করার ক্ষমতা তাদের নেই। শুনলাম মন্ত্রীকে খুশি করারা জন্য তারা কেক কাটার আয়োজন করেছে কিন্তু মন্ত্রী এই কেক কাটেননি। মন্ত্রী এই ভূমিকার জন্য প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য।

যেহেতু জাতীয় পতাকার আদলে কেকটি করা হয়েছে তাই নির্ধিদ্ধায় বলা যায় তাদের একটা উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু কী উদ্দেশ্য? একটি দেশকে ছোট করা, একটি জাতির প্রতিককে অবমাননা করা। মন্ত্রী বলেছেন, কী উদ্দেশ্যে কে এনেছেন, সে বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন? প্রশ্ন হলো এত কাণ্ডজ্ঞানহীন লোক নিয়োগ পান কী করে। সেটা আশ্চর্যের বিষয়। 

গত সোমবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। নির্ধারিত অনুষ্ঠানটি শেষে উপস্থিত সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করতে করতে চা চক্রে হাজির হন তিনি। ঠিক এ সময় অনুষ্ঠানস্থলে হাজির করা হয় জাতীয় পতাকার আদলে তৈরি করা বিশাল আকৃতির একটি কেক। স্বাধীনতার ৪৬ বছর পূর্তি উপলক্ষে ৪৬ কেজি ওজনের কেকটি আনা হয়েছে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রীকে এটি কাটার অনুরোধ করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশির কর্মকর্তারা। কিন্তু কেকটি দেখে প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হন শিক্ষামন্ত্রী। কিন্তু কেক দেখেই যখন রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন মন্ত্রী। তখন কর্মকর্তারা একে অন্যের ওপর দায় চাপাতে থাকেন। কেক কোথা থেকে এলো, কে নিয়ে এলো, কার সিদ্ধান্তে জাতীয় পতাকার আদলে তৈরি করা হলো তা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও তার দায়িত্ব নিতে রাজি হননি অনুষ্ঠান সংশ্নিষ্ট কোনো কর্মকর্তাই। কেউ যখন দায় নিচ্ছেন না তাহলে কেক কি হাওয়ায় ভেসে এসেছে? যারা কেক কাটার জন্য মন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন তারা নিশ্চই জানেন কোথায় থেকে কেক এসেছে। 

আমার মনে হয় তারা কি মুক্তিযুদ্ধ ও প্রগতিশীলতার আদর্শে বিশ্বাসী। নাকি তাদের ভেতরের রুপ অন্য ধরনের। 

শিক্ষামন্ত্রী এ সময় বলেন,‘কেকে কেন জাতীয় পতাকা? আমি কি জাতীয় পতাকা কাটতে এসেছি? এই আইডিয়া কার? কে অর্ডার দিয়ে এই কেক বানিয়েছেন? একজন মন্ত্রী হয়ে আমি কি জাতীয় পতাকা কাটতে পারি? এই কাজের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের শাস্তি পেতে হবে।’ শিক্ষামন্ত্রীর যৌক্তিক কথা। তাদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। 

মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তাই কে কেক এনেছেন সেটা স্বীকার করবেন না। এটা স্বাভাবিক। কারণ এতে তাদের মুখোস উন্মোচন হবে। তারা কোন আদর্শে বিশ্বাসী এটাও প্রকাশ হবে। এ রকম অপরাধ যেই করুক তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিন। 

লেখক :শিক্ষার্থী ও দৈনিক আমাদের সময়ের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি