প্রতিক্রিয়া

ফেসবুক বন্ধ করলেই কি প্রশ্ন ফাঁস বন্ধ হবে?

Looks like you've blocked notifications!

সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুকের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের কাছে প্রশ্ন চলে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে অহরহ। নানা তদারকি করেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় ভয়াবহ এ ব্যাধি বন্ধ করতে পারেনি। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের পর গতকাল এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নও ফাঁস হয়েছে। পরীক্ষা শুরুর অন্তত ৩০ মিনিট আগেই ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্ন পাওয়া গেছে। ফেসবুকে পাওয়া প্রশ্ন পরীক্ষার প্রশ্নের সঙ্গে হুবহু মিলে গেছে। প্রশ্ন ফাঁস বন্ধ না হওয়ায় জাতির মেরুদণ্ড ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে। ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়ে শিক্ষার্থীরা দেশের সম্পদ নয়, বরং বোঝায় পরিণত হচ্ছে। তাই শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে এবার ফেসবুককেই পরীক্ষার সময় বন্ধ করতে চাইছে।

কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতা এত তাড়াতাড়ি তারা ভুলল কী করে? বাংলাদেশে ফেসবুক বন্ধ হওয়ার ঘটনা কি এটাই নতুন? না, এটা নতুন কিছু নয়। একাধিকবার বন্ধ করা হয়েছে ফেসবুক। ২০১৫ সালের নভেম্বরে আইনশৃঙ্খলা অবনতি হতে পারে, এমন আশঙ্কায় থেকে ফেসবুক বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। কিন্তু ফেসবুক যখনই বন্ধ হয়েছে, তখনই এর ব্যবহারকারীরা বিকল্প পথ বের করেছে। ফেসবুক বন্ধ করলেই প্রশ্ন ফাঁস বন্ধ হয়ে যাবে না, এটা বোঝানোর মতো রাষ্ট্রে কেউ নেই? হোয়াটসআপ, ভাইবারে কি ফাঁস হওয়া প্রশ্ন পাঠানো যাবে না?

তবে এটা আমরা সকলেই জানি যে, সবগুলো বন্ধ করে দেওয়া হলেও প্রক্সি ব্রাউজার বন্ধ করা সম্ভব হয়তো হবে না। আর এই সুযোগটাকে যে প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সদস্যরা কাজে লাগাবে না, তার গ্যারান্টি কে দেবে? 

তাই প্রশ্ন ফাঁস প্রতিরোধ করতে ফেসবুক বা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো বন্ধ করে দেওয়া কোনো কাজের কথা নয়, এ কথা জোর গলায় আমরা সকলেই বলতে পারি। যারা প্রশ্ন ফাঁস করছে, তাদের আগে আইনের আওতায় আনা জরুরি। তাদের আইনের আওতায় নিয়ে না এলে এই প্রশ্ন ফাঁস কখনোই বন্ধ করা সম্ভব হবে না। অপরাধীদের না ধরে ফেসবুক বন্ধ করে দিয়ে কোনো ফল পাওয়া সম্ভব হবে বলে আমার মনে হয় না।

আর এসব ঠুনকো প্রযুক্তির ব্যবহার যেখানে সাধারণ জনগণও বোঝে, অপরাধীরা বুঝবে না? মাথাব্যথা করলে মাথা কেটে ফেলাটা সমাধান নয়, এটা সবাই বোঝে এখন। তাহলে শিক্ষা মন্ত্রাণালয় এটা কেন বুঝছে না?

লেখক : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি, বাংলাদেশ।