সমসাময়িক
ঢাকা শহরের পথে, একদিন প্রতিদিন
আমার জন্ম, বেড়ে ওঠা, লেখাপড়া, কর্মস্থল সবই ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্রে। যাকে বলা যায় ‘হার্ট অফ ঢাকা’। বিভিন্ন সময় উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে থাকা ছাড়া জীবন কেটে যাচ্ছে এই ঢাকা শহরেই। অনেক বর্ষীয়ান ব্যক্তির কাছে এখনো শুনি গত শতকের মধ্যভাগে বা মুক্তিযুদ্ধের ঠিক আগে এবং পরে ঢাকা যেমন ছিল, সেই গল্প। আর আশির দশকের শুরু থেকে ঢাকা যেমন ছিল, তা তো নিজের স্মৃতিতেই টাটকা। নব্বই দশকের শুরুতেও ঢাকা শহরের বিভিন্ন দিক অজস্র অ্যাপার্টমেন্টে ঠাসাঠাসি হয়ে ওঠেনি। রাস্তায় যানবাহন আর মানুষও এখনকার মতো গিজগিজ করত না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঁচ টাকা রিকশা ভাড়ায় যাওয়া যেত ধানমণ্ডি, পথে রিকশা আটকে থাকত না যানজটে। গাড়িতে বা স্কুটারে উত্তরার মতো দূর এলাকায়ও যাওয়া যেত নির্বিঘ্নে এবং কম সময়ে, কারণ রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা ছিল অনেক কম।
অথচ গত ২০ বছরে ঢাকা এত বদলে গেল যে নব্বই দশকের শুরুর দিকের ঢাকার কথা যখন ভাবি মনে হয়, তখন যেন বসবাস করতাম অন্য এক স্থানে। নিয়মিত তৈরি হতে থাকা বহু উঁচু ভবন, প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকা যানবাহন আর মানুষের ভিড়ে এই শহর এখন আর চিরচেনা মনে হয় না। কোনো শহরে ভবন, যানবাহন, মানুষ বেড়ে যাওয়া নগরায়ণের স্বাভাবিক ফলাফল। কিন্তু অসহনীয় যানজট, বায়ু আর শব্দদূষণ, পার্ক ও খোলা জায়গা না থাকা, জলাশয় এবং গাছপালা কমে যাওয়া প্রভৃতি সমস্যা নাগরিকদের জীবন দুর্বিষহ করে তুললে নগরায়ণ আদৌ পরিকল্পিতভাবে ঘটছে কি না, তা বিশ্লেষণ করা জরুরি হয়ে ওঠে। দেশের উন্নয়ন ঘটে চলেছে সন্দেহ নেই, কিন্তু এখনো দেশের বহু মানুষ ভালো উপার্জনের জন্য নিজ শহর ছেড়ে রাজধানীতে আসতে আগ্রহী। কয়েক লাখ লোকের বসবাসের জন্য উপযুক্ত যে শহর, সেখানে এখন বসবাস করে দুই কোটি মানুষ। ঢাকায় বসবাসের জন্য প্রতিবছর প্রায় তিন লাখ লোক অন্যান্য জেলা থেকে ঢাকায় আসছে। ঈদের ছুটিতে ঢাকা নিরিবিলি হয়ে ওঠাতেই বোঝা যায়, দেশের অন্যান্য স্থানের কত মানুষ ঢাকায় বসবাস করে। কাজের সুযোগ এবং উন্নয়ন বহুলাংশে একটি নির্দিষ্ট শহরকেন্দ্রিক হলে সেই শহর অত্যধিক জনাকীর্ণ হয়ে উঠবে আর তার ফলে তীব্রতর হবে বিভিন্ন নাগরিক সমস্যা, সেটাই স্বাভাবিক।
গত সপ্তাহে কখনো ৪২ মিলিমিটার, কখনো ২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিতে ঢাকার বিভিন্ন দিকে রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে গিয়েছিল। জলাবদ্ধতার জন্য তৈরি হয়েছে অসহনীয় যানজট, অচল হয়ে পড়েছিল শহর। নগর বিশেষজ্ঞ এবং ঢাকার নতুন মেয়ররা উল্লেখ করেছেন, শহরের বিভিন্ন প্রাকৃতিক খাল এবং লেকের মুখ মাটি ও আবর্জনার কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণেই জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে। কিছু মানুষের ব্যক্তিগত লাভ আর অপরিণামদর্শিতার জন্যই তো শহরের বিভিন্ন জলাশয় ভরাট হয়ে গেছে। বৃষ্টির পানি পথ থেকে জলাশয়ের মাধ্যমে প্রাকৃতিকভাবে সরে যাওয়ার সুযোগ এখন বাধাগ্রস্ত। শহরের জলাশয়গুলো যথেচ্ছভাবে ভরাট করার নিয়ম না থাকলেও ধীরে ধীরে এই শহরের বিভিন্ন খাল, পুকুর, লেক ভরাট করে বাড়ি বানানো হয়েছে; কোথাও আবর্জনা ফেলে জলাশয় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জলাশয় দখলমুক্ত এবং সচল রাখার জন্য কার্যকর আইনি ব্যবস্থা আর সঠিক পরিকল্পনা বিভিন্ন সরকারের সময় গ্রহণ করা হলে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি কি আমাদের দেখতে হতো?
দেশে উন্নয়ন তো ঘটেছে নিশ্চয়ই। শহরে অনেক রিকশাচালক এবং খেটে খাওয়া মানুষের হাতেও এখন দেখা যায় মোবাইল ফোন। শপিংমল আর নানা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়ে চলেছে প্রতিবছর। শহরের বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত উঁচু হচ্ছে ভবনগুলো। বিজ্ঞাপনের বহু বিশাল বিলবোর্ডের সদম্ভ উপস্থিতি রাস্তার পাশে। ঢাকার জাঁকজমক বেড়েই চলেছে। কিন্তু এমন আধুনিক শহরেই প্রতিদিন পথচলা মানুষকে পীড়িত, অস্থির, পর্যুদস্ত করছে ভয়ানক যানজট। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত কখনোই ঢাকার রাজপথ যানজটমুক্ত নয়। যানজটের কারণে পথে বহু মানুষের কেবল ভোগান্তিই নয়, অপচয় হচ্ছে মূল্যবান সময়। অনেক আগে যাত্রা শুরু করলেও নির্দিষ্ট সময়ে কোনো গন্তব্যে পৌঁছানো যাবে—এ নিশ্চয়তা বর্তমান ঢাকা শহরে নেই। আর এমন অনিশ্চয়তা কোনোভাবেই কি আশা করা যায় একটি আধুনিক শহরে? এই দুঃসহ যানজটের মধ্যে আবার প্রায়ই দেখা যায়, দেশের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বাহন যানজট এড়াতে ট্রাফিক নিয়ম অবজ্ঞা করে এগিয়ে চলেছে ভুল পথ দিয়ে। কখনো পথে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা ঠিক পথে থাকা মানুষ আর যানবাহন আটকে দিয়ে ভুল পথে আসা ক্ষমতাশালী কোনো ব্যক্তির গাড়ি চলার পথ করে দিচ্ছে। এমনই এক দৃশ্য গত মাসে দেখেছি রমনা এলাকায়। কয়েকজন পুলিশ সদস্য ঠিক পথে থাকা সব যানবাহন আটকে রেখে উল্টো পথে আসা একটি গাড়ি এক সরকারি ভবনে ঢোকার সুযোগ করে দিলেন এবং কালো কাচে ঢাকা সেই গাড়ির আরোহীদের উদ্দেশ করে স্যালুটও করলেন। সঠিক পথে আটকে থেকে ঘটনাটি দেখে মনে মনে ভাবছিলাম, দৃশ্যটি প্রতীকীভাবে সমাজের কোন গভীরতর বাস্তবতা তুলে ধরল?
উচ্চশিক্ষার জন্য বেশ কিছু বছর আমি কাটিয়েছি লন্ডন আর সিডনি শহরে। এই বিখ্যাত দুটি শহরের পথে চলেছি অনেক, কোনো দিন দেখিনি ট্রাফিক নিয়ম ভেঙে একটি গাড়িও উল্টো পথে চলেছে। পথের যানবাহন আটকে রেখে ভিআইপিদের যাতায়াতও সেখানে কখনো দেখতে পাইনি। ঢাকায় উল্টো পথে প্রভাবশালীদের গাড়ি চলা নিয়ে সংবাদপত্র আর টেলিভিশন চ্যানেলে রিপোর্ট হয়েছে, এই প্রবণতার সমালোচনা করেছেন স্বয়ং সড়ক পরিবহনমন্ত্রী। কিন্তু ঢাকার পথে প্রবল আর অসহনীয় ট্রাফিক জ্যামে আটকে থাকা সাধারণ মানুষ নিয়মিতভাবেই দেখছে ট্রাফিক নিয়ম তোয়াক্কা না করে উল্টো পথে চলেছে প্রভাবশালীদের গাড়ি। ক্ষমতাশালীদের নিয়ম অবজ্ঞা করার এই প্রবণতা কোন কল্যাণ যুক্ত করছে আমাদের সমাজে? এক-একটি বছর কেটে যাচ্ছে, যানজট সমস্যা হচ্ছে আরো অসহনীয়। পথে যানবাহন চলাচল সুশৃঙ্খল করার কার্যকর উদ্যোগ নেই, সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে, অথচ প্রায়ই দেখতে হচ্ছে প্রভাবশালীদের ট্রাফিক নিয়ম উপেক্ষা করে পথ চলার দৃশ্য। নিয়ম ভাঙার এমন প্রবণতা বেপরোয়া আর অসহিষ্ণু করে তুলছে অনেককেই। শাহবাগে একদিন যানজটে আটকে থাকা অবস্থায় দেখলাম, ছাত্রদের বহনকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসও চলেছে উল্টো পথে। নেতিবাচক প্রবণতার এমন বিস্তার অনুভূতিপ্রবণ এবং রুচিশীল মানুষকে ব্যথিত আর হতাশাগ্রস্ত করছে, তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। কারণ, এমন মানুষ নিয়ম মেনে চলতে অভ্যস্ত। অথচ এই শহরে তাদের দেখতে হয় নিয়মহীনতার নিয়মিত চর্চা।
বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় কেবল সারি সারি অ্যাপার্টমেন্ট আর কোথাও দেখা যায় মানুষের বাড়ি ঘেঁষেই দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন ধরনের দোকান। চোখে পড়ে গাড়ি মেরামতের ওয়ার্কশপ। বাড়ির ঠিক পাশেই এমন দোকান আর ওয়ার্কশপ থাকার ফলে যে ভিড়, শব্দ এবং বায়ুদূষণ তৈরি হয়, তা আবাসিক এলাকার বাসিন্দাদের প্রাইভেসি যেমন নষ্ট করছে, তেমনি তাদের স্বাস্থ্যেরও ক্ষতিসাধন করছে। আবাসিক এলাকায় এমন পরিস্থিতির কথা একটি পরিকল্পিত শহরে চিন্তাও করা যায় না। ঢাকায় শব্দদূষণের মাত্রাও ভয়াবহ। বাস, প্রাইভেটকার চালকরা প্রতিনিয়ত বাজাচ্ছেন চড়া হর্ন, কখনো তীব্র শব্দে শহরের মধ্য দিয়ে হর্ন বাজিয়ে ছুটে যায় ট্রেন, শহরের আকাশে প্রচণ্ড শব্দে উড়ে যায় যুদ্ধবিমান। রাস্তায় কখনো ভারী যানবাহনের তীব্র হর্ন শুনে মনে হয়, এই হর্ন নিষিদ্ধ হাইড্রোলিক হর্ন কি না। কারণ, সেই তীব্র শব্দ কানে তালা ধরিয়ে দেয়, কিছুক্ষণের জন্য যেন পথচারীকে বধির করে তোলে। যে যানগুলো এমন তীব্র শব্দে হর্ন বাজাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দৃশ্য তো পথে চোখে পড়ে না। কখনো কোনো স্থানে মাইক ব্যবহার করা হয় যথেচ্ছভাবে, চিন্তাও করা হয় না মাইকের এমন ব্যবহার মানুষের জন্য পীড়াদায়ক হচ্ছে কি না। কখনো রাতের বেলায়ও শোনা যায় উচ্চ শব্দে কোনো নির্মাণাধীন ভবনে কাজ হচ্ছে। শব্দদূষণ যে স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর, এ ধারণাটি কি এই শহরের মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করা হবে না? এই অসহনীয় অবস্থা বন্ধে কার্যকর উদ্যোগও কি গ্রহণ করা হবে না?
বর্তমান ঢাকায় খোলা জায়গারও খুবই অভাব। পার্কের সংখ্যাও যথেষ্ট নয়, আর সেসব পার্কে নিরাপদে ও নিরিবিলি সময় কাটানো যাবে কি না, তা নিয়েও মানুষের দুশ্চিন্তা থাকে। রাজপথে যানজটের কারণে যেমন থেমে থাকতে হয় কর্মব্যস্ত পথচারীদের, তেমনি পথচারীরা ফুটপাত দিয়েও কি সহজে ও নির্বিঘ্নে হাঁটতে পারেন? বিভিন্ন রাস্তার পাশে ফুটপাতগুলো পুরোপুরি দখল করে বিভিন্ন পণ্যের দোকান সাজিয়ে বসে আছেন দোকানিরা। ফুটপাত যেন হাঁটার জন্য নয়, তা যেন পণ্য কেনাবেচারই নির্ধারিত স্থান। টেলিভিশন, পত্রপত্রিকায় এই অব্যবস্থা নিয়ে অনেক রিপোর্ট করা হয়েছে। কিন্তু অবস্থার উন্নতি হচ্ছে কোথায়? এই শহরে নিয়ম উপেক্ষা করা একটি সহজ আর স্বাভাবিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। কিছু মানুষের লোভ আর দায়িত্বহীন আচরণ অবসবাসযোগ্য করে তুলছে পুরো শহর।
নগর পরিকল্পনাবিদরা এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক উল্লেখ করেছেন, শহরের পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে হবে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় অব্যবস্থা দেখে আনিসুল হক বলেছেন, আমরা কতজনকে সঠিক আচরণ করার কথা বলব? নাগরিকদের সচেতন করে তোলা নিশ্চয়ই অতি জরুরি। তবে যে ধরনের মানুষ নিজেদের আর্থিক লাভের জন্য নিয়মবিরুদ্ধ কাজ করে শহরের পরিবেশের ক্ষতিসাধন করতে দ্বিধা করে না, তাদের সচেতন করার চেষ্টা করলেও হয়তো ফল পাওয়া যাবে না। নিয়ম মেনে চলার কথা তাদের বলা হলেও সেই কথায় তারা গুরুত্ব দেবেন, তা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। কারণ, নিজেদের স্বার্থের জন্য অনিয়ম করতে এমন মানুষ দ্বিধা করে না। অচল হওয়া থেকে শহর রক্ষা করার জন্য সবার আগে প্রয়োজন একটি সঠিক ও যৌক্তিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করা, যে পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে শহর সুশৃঙ্খল, দূষণহীন, নিখুঁত এবং সুন্দর করে তোলা সম্ভব হবে। আর এই পরিকল্পনা কার্যকরের পদক্ষেপ যদি বাধাগ্রস্ত হয়, তখন কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করতে হবে। নিয়ম ভাঙার বিরুদ্ধে আইনের যথাযথ প্রয়োগ এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। যাঁরা নিয়ম ভাঙছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগে অনীহা বা শৈথিল্য কখনো কোনো ভালো ফলাফল আনবে না; বরং বৃদ্ধি পাবে অব্যবস্থা আর জনদুর্ভোগ। যৌক্তিক নিয়ম যদি কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা হয় এবং নিয়ম অবহেলা করার দৃশ্য যদি না দেখা যায়, তখন সাধারণ মানুষ স্বেচ্ছায় সেই নিয়ম মানবে। ঢাকা শহরের অসহনীয় নাগরিক সমস্যাগুলো দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় যে পরিকল্পনা, তা সমর্থন করার এবং অনিয়ম দেখলে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাশালীদের সত্যিকারের সদিচ্ছা আর সহযোগিতা থাকতে হবে। কেবল তখনই ঢাকা রক্ষা করা সম্ভব। কিছু মানুষের লোভ, অসচেতনতা আর অপরিণামদর্শিতার জন্য সুবিখ্যাত এবং সুন্দর এই শহর দিন দিন দুর্দশাগ্রস্ত হবে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
ড. নাদির জুনাইদ : সহযোগী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।