শাহবাগ ছিল ঐক্যের ডাক

Looks like you've blocked notifications!
শেরিফ আল সায়ার

২০১৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি, শাহবাগ আন্দোলনের দ্বিতীয় বছর পূর্ণ হলো আজ। ২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির পক্ষে শাহবাগের মোড়ে জড়ো হয়েছিল লাখ লাখ মানুষ। ‘যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি’—শব্দ তিনটি শোনার পর নিশ্চয়ই অনেকে নড়েচড়ে বসেছেন। বলছেন, এই আন্দোলন তো ছিল কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে। হ্যাঁ, আমি আপনার সঙ্গে একমত। কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে ২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারির বিকেলে একটি মানববন্ধন হয়, যা পরে টেনে নিয়ে যায় আন্দোলনে। সেই আন্দোলনের অনিবার্য পরিণতি হিসেবে তৈরি হয় গণজাগরণ মঞ্চ। আর সেখান থেকেই দাবি তোলা হয়, সব যুদ্ধাপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে। এমনকি জামায়াতের মতো রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষিদ্ধের দাবি আসে। 

এসব দাবি উত্থাপিত হওয়ার সঙ্গে অনেকেই রাজনীতির গন্ধ শুঁকে বেড়ান। নিরপেক্ষতার লেবাসে অনেকেই দাবি করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের ভেতরও রয়েছে যুদ্ধাপরাধী। শাহবাগ আন্দোলন কোনো দলের ভেতর হৃষ্টপুষ্ট রাজাকারদের বিচারের কথা বলেনি। তাদের দাবি ছিল, ‘সকল যুদ্ধাপরাধীর’। তা সে যে দলেরই হোক, যে মতেরই হোক। বিচার তার হতেই হবে। 

তবে বর্তমান সময়ে ‘শাহবাগ আন্দোলন’-কে মঞ্চকেন্দ্রিক বানিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হয়। গণজাগরণ মঞ্চের সাংগঠনিক কাঠামো, তার নানা বিতর্কিত ইস্যু নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার আপ্রাণ চেষ্টা জারি আছে এখনো। মঞ্চ এখন কয়েক খণ্ডে খণ্ডিত বা বিভক্ত। তাদের মঞ্চ থেকে কর্মসূচি ঘোষণা হয়। তারা সেগুলো পালনও করে। লাখ লাখ জনতা এখন মঞ্চের সেই কর্মসূচিতে অংশ নেয় না হয়তো। তার মানে কি শাহবাগ মরে গেছে? 

১.
না, শাহবাগ মরে যায়নি। শাহবাগের চেতনা রয়ে গেছে মানুষের হৃদয়ের ভেতর। গণজাগরণ মঞ্চ তাদের এজেন্ডার জন্য বিভক্ত হয়েছে। কিংবা ভেতরে কোনো রাজনীতি আছে। যে বিভাজিত রাজনীতি এ দেশকে গ্রাস করেছে, হয়তো সেই বিভাজন গণজাগরণ মঞ্চের ভেতর প্রবেশ করে বিভক্ত করে দিয়েছে। কিন্তু জাতি তো এমন বিভাজন কখনো চায়নি। জনতা চেয়েছিল ঐক্য। অন্তত বাঙালি জাতির পরিচয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করার এক বিশাল সুযোগ ছিল শাহবাগ, যে শাহবাগে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো অংশ নিয়ে তাকে চেতনার আন্দোলনে রূপ দিতে সক্ষম হয়েছিল।

অথচ ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শত থেকে হাজার, হাজার থেকে লাখো জনতা যে শাহবাগের মোড়ে গিয়ে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়েছিল, তাদের হৃদয়ের অনুভূতিকে কেউ অন্তরচক্ষু দিয়ে বিবেচনা করেনি। সরকার যেমন শাহবাগকে পকেটে নেওয়ার চেষ্টা জারি রেখেছিল, ঠিক সেভাবে বিরোধী পক্ষ ক্রমাগত শাহবাগকে বিতর্কিত করার চেষ্টায় লিপ্ত ছিল। একটি জাতীয় দৈনিকে ক্রমাগত এই আন্দোলনের বিরুদ্ধে, এই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে গেছে। তাতে জাতি হয়ে পড়েছিল বিভক্ত। প্রধানমন্ত্রী যেমন রাজীব হত্যার পর তার পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে গিয়েছিলেন, ঠিক তেমনি অনুভূতি থেকে সংসদে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার মনটা পড়ে আছে ওখানে’, যা সেদিন হাজারো তরুণের হৃদয়ে উৎসাহের সঞ্চার করেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শাহবাগের প্রতিটি কর্মসূচিকে সমর্থন করেছিলেন। যখন শাহবাগে মোমবাতির আলোয় ছেয়ে যায়, তখন প্রধানমন্ত্রীও মোমবাতি জ্বালিয়ে তরুণদের উৎসাহিত করেছিলেন। কিন্তু যখন হেফাজত সামনে এসে দাঁড়ায়, যখন এক তাণ্ডবলীলায় নামে তারা। আস্তিক-নাস্তিকতা দিয়ে একটি আন্দোলনকে বিতর্কিত করার চেষ্টায় লিপ্ত করে। তখন ৫ মে হেফাজতকে শাপলা চত্বর থেকে উঠিয়ে দেওয়া হলো, ঠিক পরের দিন উঠিয়ে দেওয়া হলো গণজাগরণ মঞ্চকে। সেদিন হয়তো সরকার মঞ্চকে আর প্রয়োজন নেই বলে মনে করেছে। তবে এও তো ঠিক, শাহবাগ আন্দোলন থেকে ফুঁসে ওঠা তরুণদের দাবি সংসদ গ্রহণ করেছিল। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আইন সংশোধন করে আপিল করার সুযোগ তৈরি হয়েছিল। সে সুযোগের কারণেই কাদের মোল্লার ফাঁসি হয়েছিল। 

২.
কিন্তু এত সবকিছুর পরও বিভক্ত কেন জাতি? আমাদের মনে রাখতে হবে, জাতি এভাবে কখনো বিভাজিত থাকতে চায়নি। সম্প্রতি সহিংস রাজনীতি জাতি তো চায়নি। জাতি চেয়েছে শান্তি এবং ঐক্য। জাতি চেয়েছে দেশের মানুষ থাকবে ঐক্যবদ্ধ। সব কালো ছায়ার বিরুদ্ধে জাতি লড়বে একসঙ্গে। আর সেই ঐক্যের ডাক তো তারা বহুবার দিয়েছে। তারা তো প্রমাণ দিয়েছে। ১৯৫২ সালে দিয়েছে, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে দিয়েছে, ১৯৭০ সালের নির্বাচনে দিয়েছে, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে দিয়েছে। এমনকি স্বৈরাচার এরশাদের পতনেও জাতি নিজেদের ঐক্যবদ্ধতা প্রমাণ করেছে। তারা বারবার সব গোষ্ঠীকে বলেছে—আমরা এক, আমাদের দাবায়া রাখতে পারবা না। 

অনেকেই বলেন, যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে জাতি বিভাজিত ছিল। বিশেষ করে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলই তাদের হৃষ্টপুষ্ট করেছে। কথা হয়তো ঠিক; কিন্তু এও তো ঠিক, এই জাতি যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতেও সোচ্চার হয়েছে বারবার। ঐক্যের ডাক দিয়েছে বারবার। ১৯৯২ সালের গণ-আদালতই যার প্রমাণ। তখন বিএনপি ক্ষমতায়। তৎকালীন সরকার বিব্রত ছিল। অনেক রাজনৈতিক খেলায় শেষ পর্যন্ত তারা গণ-আদালতের ঐক্যে একমত হয়নি। তারা অনৈক্যের কাতারেই রয়ে গেল। তবে তাদেরও বারবার ঐক্যের মিছিলে নাম লেখানোর আহ্বান জানানো হয়েছিল, ডাক দেওয়া হয়েছিল। 

গণ-আদালতকে সমর্থন করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এবং তৎকালীন প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে ১৬ এপ্রিল ১৯৯২ সালে এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। যে ভাষণে তিনি গোলাম আযম এবং যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে সবাইকে একত্র হওয়ার আহ্বান জানান। ওই বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, 
‘...যে দল স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, আর তারই নেতা গোলাম আযম এক যুদ্ধাপরাধী, তার পক্ষে একটি দল ওকালতি করছে, যে দলের নেতাও মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন।...’

এ থেকে বোঝা যায়, রাজনৈতিক দর্শনে অনৈক্য থাকলেও শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল—বিএনপিকে সম্মানের সঙ্গে এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। অধ্যাপক শাহরিয়ার কবিরের সঙ্গে এক আলাপে তিনি বলেছিলেন, ওই ঐতিহাসিক ভাষণের সময় তৎকালীন বিএনপি সরকারের অনেক সংসদ সদস্য টেবিল চাপড়ে শেখ হাসিনার বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে গোলাম আযম যে যুদ্ধাপরাধী ছিলেন, তার প্রমাণও তুলে ধরেন। যেখানে তিনি কুমিল্লার হোমনা থানার একটি গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠন সিরু মিয়া দারোগা ও তাঁর কিশোর পুত্র আনোয়ার কামালকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে গোলাম আযমের নাম উল্লেখ করেন। তিনি এও উল্লেখ করেন, সিরু মিয়া বিপ্লবী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের স্ত্রী বেগম তাজউদ্দীনকে সপরিবারে কুমিল্লার সীমান্ত পার করে দিতে সহায়তা করেছিলেন। সেই সিরু মিয়াকে গোলাম আযমের নির্দেশে হত্যা করা হয়। শুধু তাই নয়, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য Act XIX of 1973 (আন্তর্জাতিক ক্রাইম অ্যাক্ট)-এর কথাও সংসদকে মনে করিয়ে দেন। 

যখন যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে কথা হয়, তখন সবাই বলে বেড়ান—সব রাজাকারকে বঙ্গবন্ধুই ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। এ বিষয়ে শেখ হাসিনা সেদিন সংসদে কথা বলেছিলেন। তিনি সংসদকে মনে করিয়ে দিয়ে বলেন,
‘বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রায় ৩৭ হাজার দালাল বন্দী হয়। এবং এই সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর প্রায় ২৬ হাজার দালাল মুক্তি পায়। তার পরও ১১ হাজার দালাল তখনও বন্দী ছিল এবং তাদের বিচার চলছিল। এর মধ্যে অনেক বন্দী সাজাপ্রাপ্ত ছিল। পরে আমরা দেখেছি, এসব সাজাপ্রাপ্ত বন্দী এই স্বাধীন বাংলাদেশের মন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর পদও অলংকৃত করেছে।’

৩.
শাহরিয়ার কবিরের ‘গণ-আদালত থেকে গণজাগরণ মঞ্চ’ বইয়ের এক জায়গা থেকে জানা যায়, যারা মনে করেন, বিএনপি কখনই জামায়াতের বিরুদ্ধে কথা বলেনি, তাদের এ ধারণা ভুল। তিনি ১৯৯৩ সালের একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেন।

১৯৯৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের হামলায় শতাধিক ছাত্র আহত হন এবং নিহত হন ছাত্রনেতা রীমু।

রীমু ওয়ার্কার্স পার্টির ছাত্রসংগঠন ছাত্রমৈত্রীর নেতা হলেও তাঁর মা হেলেনা চৌধুরী ছিলেন সাতক্ষীরা বিএনপির সভাপতি। তখন ক্ষমতায় ছিল বিএনপি। রীমু হত্যার পর বিএনপি-আওয়ামী লীগের সব সাংসদ জামায়াতের বিরুদ্ধে সংসদে জোরালো বক্তৃতা রাখেন। 

১৯৯৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে বিএনপির ১৬ জন, আওয়ামী লীগের ১১, জাতীয় পার্টির ২, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ ও ইসলামী ঐক্যজোটের ১ জন ও ১ জন স্বতন্ত্র সদস্যসহ ৩৩ জন সংসদ সদস্য প্রায় একই ভাষায় জামায়াত-শিবিরের নৃশংসতার বিবরণ দিয়ে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে এ দুটি সংগঠন নিষিদ্ধকরণের দাবি জানান। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষক নাজিম কামরান চৌধুরীর ভোটের একটি অঙ্ক তুলে ধরেন গবেষক বিশ্বজিৎ (সমাজ নিরীক্ষণ, ২০১৩)। যেখানে উল্লেখ রয়েছে, ১৯৯১ সালে জামায়াতের জেতা ১৮টির মধ্যে ১২টি আসনেই দ্বিতীয় স্থানে ছিল বিএনপি। ’৯৬-তে এককভাবে লড়ে জামায়াত ৮ শতাংশ ভোট পেলেও আসনসংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৩-এ। কিন্তু ২০০০ সালে রাজনৈতিক বিশ্লেষক নাজিম কামরান চৌধুরী ভোটের অঙ্ক ঘেঁটে দেখান, বিএনপি-জামায়াতসহ অন্য দক্ষিণপন্থী দলগুলোর সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধলে আওয়ামী লীগের জোট পরাস্থ হবে। ২০০১ সালে জামায়াত ফের খালেদার হাত ধরলে ৪ শতাংশ ভোট পেয়ে ১৭টি আসন পায়। এই জোট ৪৫ শতাংশ ভোট পেয়ে ২১৭টি আসন দখল করে ক্ষমতায় যায়। 

অতএব, ভোটযুদ্ধের কাছে পরাস্থ হয়েছে চেতনা। যদিও বাংলাদেশের আপামর জনতা চায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। যে দলেরই হোক, তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দেখতে চায় জনতা। আমার তো মনে হয়, বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি যদি জামায়াতকে ত্যাগ ক‌‌‌রে, তবে বিএনপির ভোট বেড়ে যাবে। তাদের মনে রাখতে হবে, বর্তমান তরুণ সমাজ বিশ্লেষণী বোধসম্পন্ন। তারা ইতিহাস পড়েছে, জেনেছে। তাদের কাছে ইতিহাসের মর্ম আছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি সম্মান আছে। হতেও তো পারে, সেই চেতনা থেকে বিএনপির দুঃখপ্রকাশকে তারা সাধুবাদ জানাবে ভোটের মাধ্যমে। এটা আমার বিশ্বাস। মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশে দীর্ঘ ২৩ বছর পালাক্রমে ক্ষমতায় ছিল বিএনপি ও আওয়ামী লীগ। অর্থাৎ দেশের মানুষ বারবার তাদের ওপরই আস্থা জানিয়েছে। তাদের ওপর বিশ্বাস করেছে। 

আওয়ামী লীগ যদি সেই আস্থায় বিশ্বাস রাখতে পারে, তবে বিএনপি কেন পারবে না? যে শাহবাগ গড়ে উঠেছিল অরাজনৈতিক জনতার হাত ধরে, সেই অরাজনৈতিক কাঠামোকে বিএনপি সাধুবাদ জানাক। সময় তো ফুরিয়ে যায়নি। 

৪.
সেদিন শাহবাগে যত মানুষ এসেছিল, সেদিন ঐক্যের ডাক নিয়েই এসেছিল। তারা প্রমাণ করে গেছে, আমরা ঘুমিয়ে যাইনি। প্রয়োজনে রাজপথ আমরা কাঁপাতে জানি। ঠিক তেমনি তারা এও বলে গেছে, তোমরা ভয় পেয়ো না। আমরা আছি। শাহবাগের সেই ঐক্য এখনও আছে। মানুষ হৃদয়ে লালন করছে শাহবাগের বিস্ফোরণ। 

শেরিফ আল সায়ার: গবেষক ও ‘শাহবাগের জনতা’ বইয়ের লেখক।