বদরুল যারই হোক, চাই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি

Looks like you've blocked notifications!

বখাটে বদরুল কার? বিতর্ক চলছেই। ছাত্রলীগের দাবি, বদরুল ছাত্রলীগের কেউ নয়। তাই এই ঘটনার দায় কোনো ভাবেই নেবে না ছাত্রলীগ। কারণ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়, সুনামগঞ্জের একটি স্কুলে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। তাই ছাত্রলীগের গঠণতন্ত্র অনুযায়ী, চাকরিতে কর্মরত থাকায়, কোনো ভাবেই ছাত্রলীগের নেতা হতে পারেন না। প্রশ্ন হচ্ছে, ঘটনার আগ পর্যন্ত তাহলে গঠনতন্ত্রকে লঙ্ঘন করে কীভাবে ছাত্রলীগ নেতা ছিলেন বদরুল? যখন কমিটিতে তাঁকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, তখনো তিনি একই চাকরিতে কর্মরত ছিলেন। তাহলে ৮ মে ২০১৬ কেন সিলেট শাবিপ্রবি শাখা তাঁকে কমিটিতে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং তা বাস্তবায়নও করা হয়? কেন তখন গঠনতন্ত্র বিবেচনায় আসেনি?

দ্বিতীয়ত, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, আটক বদরুলের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমানে কোনো সম্পর্ক নেই। 
অর্থাৎ, দুটি পক্ষের দাবি অনুযায়ী, বদরুল তাদের কারোই নয়। বদরুলের অপরাধের দায়ভার কেবল বদরুলেরই। খুবই ভালো কথা। আসলেই তো অপরাধীকে অপরাধী হিসেবেই ভাবা উচিত। চাপাতি দিয়ে এমন নৃশংস ভাবে কাউকে খুন করার মতো ‘সাহস’ কি করে পায় বদরুলের মতো অপরাধী? তাও দিনে দুপুরে, চারপাশে অসংখ্য মানুষের সামনে? শুধু কি প্রেমে ব্যর্থ হওয়ার ক্ষোভেই এমনটা করেছেন? না। এমনটি হওয়ার কথা নয়। এজন্য সে হয়তো রেগে গেছে, অপমানও বোধ করেছে। 

কারণটি হচ্ছে তিনি ক্ষমতাবান। সে কারণেই তিনি হয়তো ভেবেছেন- এমন ক্ষমতাবান একজনের প্রেমের প্রস্তাব কেন ফিরিয়ে দেবে খাদিজা , এত বড় স্পর্ধা? বদরুল নিজেও স্বীকার করেছেন, প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় খাদিজাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়েছেন। 

কেবল প্রেম নয়, নানা ইস্যুতে সাম্প্রতিক সময়ে চাপাতি নিয়ে অসুস্থ প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছে বদরুলের মতো অসংখ্য অপরাধী। হয়তো বা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় পার পেয়ে যাবে চিন্তা করে, খুনের মতো অপরাধেও তারা জড়িয়ে পড়ছে। দলীয় স্বার্থের কথা চিন্তা করে, অনেকসময় তাদের অস্বীকারও করে দলগুলো। আবার অনেক সময় নানা বিবেচনায় ধামাচাপায় পড়ে যায় ইস্যুগুলো। যেমন, ঢাকার আফসানার মৃত্যুরহস্যসহ তনু হত্যাকাণ্ড ।এসব ক্ষেত্রে প্রকৃত অপরাধীরা থেকে যায় ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। তনুসহ অন্য সব হত্যাকাণ্ডের যদি সুষ্ঠু বিচার করা সম্ভব হতো- তাহলে হত্যার পুনরাবৃত্তি হয়তো আর ঘটত না। 

সন্তান ভালো করলে অভিভাবকরা যেমন সুনাম নেন, তেমনি খারাপ কিছু করলে তার জন্য অন্যের গালমন্দও শুনতে হয় অভিভাবককে। সুতরাং, দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। 

তবে এমনটা দেখতে চাই না আর। বদরুলকে দিয়েই শুরু হোক। বদরুল যারই হোক- কঠোর ও দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাই। শত চেষ্টা করলেও  আর কোনো বদরুলের জন্ম যেন না হয় এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করা দরকার।

লেখক : বার্তাকক্ষ সম্পাদক, নাগরিক টেলিভিশন