রম্য
সবজান্তা গুগলকে দিয়ে যা করানো যেত
বলা হয়ে থাকে, সার্চ ইঞ্জিন গুগল সব জানে। গুগল যদি আসলেই ‘সবজান্তা’ হতো এবং এটি যদি কথা বলতে পারত, তবে কেমন হতো? জানাচ্ছেন হাস্যরস প্রতিবেদক।
পাত্র বা পাত্রীর তথ্য
বিয়ে করতে গিয়ে পাত্র বা পাত্রীর আচরণ কেমন, চরিত্র কেমন এসব নানা বিষয় খোঁজা হয়। এ ক্ষেত্রে সবজান্তা গুগল কথা বলতে পারলে সহজেই বলে দিত পারত, ‘অমুকের আচরণে কিঞ্চিৎ ঝামেলা আছে’ কিংবা ‘অমুক তো আগেই আরেকটা বিয়া করছিল’!
প্রেমের ক্ষেত্রে
অনেকেই প্রেম করে। কিন্তু প্রতিবার নতুন প্রেমের সময় তারা বলে ‘এটাই আমার প্রথম প্রেম’! অর্থাৎ, এখানে ধোঁকাবাজি চলে। গুগল কথা বলতে পারলে এই ধোঁকাবাজি থাকত না। কে কয়টা প্রেম করেছেন, তা হড়হড় করে বলে দিত গুগল।
চারিত্রিক সার্টিফিকেট
যে ব্যক্তিকে চেনেন না, তাকেও ‘চরিত্র ভালো’ হিসেবে চারিত্রিক সার্টিফিকেট প্রদান করেন মেয়র, কাউন্সিলর, চেয়ারম্যান, মেম্বার কিংবা দায়িত্বশীল কেউ। তবে সবজান্তা গুগল কথা বলতে পারলে এসব সার্টিফিকেটে কাজ হতো না, গুগলকে জিজ্ঞেস করলেই বলে দিত, ‘অমুকের চরিত্র ফুলের মতো পবিত্র’ কিংবা ‘অমুকের চরিত্রে যে কত ঝামেলা, তা আমি গুগলও গুণে শেষ করতে পারব না’!
সংসারে
সংসারে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে নানা ঝুটঝামেলা হয়। এই যেমন স্বামী অফিস শেষে কোনো সুন্দরীর সঙ্গে ডেট করছে কি না, স্বামী অফিসে থাকার সুযোগে স্ত্রী অন্য কারো সঙ্গে সময় কাটাচ্ছে কি না এসব নানা বিষয়ে সংসারে সন্দেহ থেকে ঝগড়া, অশান্তি হয়। গুগল যদি আসলেই সব জানত আর কথা বলতে পারত, তবে এসব ঝগড়া কখনই হতো না। স্বামী বা স্ত্রী কোথায় কী করছে, তা বলে দিত গুগল।
বাজারে
ভেতরে আস্ত পচা, কিন্তু বাইরে চকচকে। এ রকম নানা পণ্য বিক্রি করে ক্রেতাকে ঠকায় বিক্রেতা। কিংবা ফরমালিন দেওয়া মাছকে বলে সদ্যই হাওর থেকে ধরে আনা, কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো ফলকে নিজস্ব বাগানে প্রাকৃতিকভাবে পাকানো বলে ক্রেতাকে গছিয়ে দেওয়া হয়। গুগল সবজান্তা হয়ে কথা বলতে পারলে বিক্রেতাদের খবরই ছিল।
যানবাহনে
ফিটনেসবিহীন লক্কড়ঝক্কড় মার্কা বাসকে রংচং মাখিয়ে নতুন বাসের মতো করে রাস্তায় চালিয়ে দেওয়া হয়। ভুয়া লাইসেন্স বানিয়ে চালক বনে যায় কতশত জন। গুগল সব জেনে কথা বলতে পারলে, ফিটনেসবিহীন বাসে যাত্রী ওঠে বাসের নাম্বার দিয়ে গুগলকে জিজ্ঞেস করলেই আসল তথ্য ফাঁস করে দিত।
অপরাধী ধরতে
দেশে অনেক অপরাধ সংঘটিত হয়। অনেক ক্ষেত্রে কে অপরাধী, তা শনাক্ত করা কঠিন হয়ে যায়। এমনও হয়, অপরাধ না করেও জেলে বন্দি হন নিরীহ মানুষ। এসব ক্ষেত্রে গুগলকে কাজে লাগানো যেত। সবজান্তা গুগল আসল অপরাধীর তথ্য দিতে পারত।
কপিবাজ
আজকাল অনলাইনে কে যে কার লেখা কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দিচ্ছে, তা মেলানো আর সাগরে মুক্তো খোঁজা একই কথা। এ ক্ষেত্রে ‘কথা বলতে পারা’ গুগল দারুণ কাজ দিত। অনলাইনে কোনো লেখা পড়ার সময়, সে লেখা কপি করা হয়ে থাকলে গুগল আসল লেখকের নামদাম পাঠককে বলে দিত এভাবে, ‘আরে ভাই, কপি করা লেখা পড়ছেন কেন। এই লেখার আসল ও আদি লেখক অমুক।’
ঘুষখোর শনাক্ত
গুগল যেহেতু সব জানে, সেহেতু কোনো কর্মকর্তা ঘুষখোর কি না, তা সহজেই বলে দিতে পারত গুগল।