রম্য
শীতে কম্বল-সোয়েটার-মোজার দুঃখ
শীতে বহুল ব্যবহৃত তিনটি জিনিস হলো কম্বল, সোয়েটার ও মোজা। এসব বস্তু যদি তাদের ব্যবহারকারীদের উদ্দেশে কিছু বলার সুযোগ পেত, তাহলে এদের বক্তব্যটা যেমন হতে পারত তা তুলে ধরা হলো হাস্যরসের এই লেখায়।
সোয়েটার
শীত আসা মানেই আলমারির ভেতরে একদম নিচ থেকে আমাকে টেনে বের করা হবে। এভাবে বন্দি থাকাটা বোতলবন্দি আলিফ-লায়লার জিনের থেকেও বেশি কষ্টকর। অতঃপর বের হয়েই আমায় আছাড় দিয়ে ধৌত করার পর তপ্ত রোদে শুকাতে দেওয়া হয়। আমার স্কিন নিয়ে যেন কারো চিন্তাই নেই। এরপরই শুরু হলো অবহেলা। বিশেষ করে ব্যাচেলর ভাইদের ক্ষেত্রে শীতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাকে পরিধান করে যাবে। নিজেরা গড়ে পাঁচ দিনে একবার গোসলে গেলেও আমারও যে একটা শরীর আছে, সে নিয়ে চিন্তা নেই।
কম্বল
কেউ সোয়েটার কিংবা জ্যাকেট, যেটা দিয়েই শীত নিবারণ করুক, দিন শেষে আমায় জড়িয়ে নিতেই হবে। আমিও বেশ এনজয় করি অন্যকে জড়িয়ে ধরে উষ্ণ একটা লম্বা ঘুম দিতে। কিন্তু কর্মজীবী কিংবা ছাত্রদের ক্ষেত্রে তা আর হয় না। সকাল সকাল তাদের স্ত্রী কিংবা মা আমায় হঠাৎ টেনে ছুড়ে দিয়ে তাদের ডাকাডাকি করে। বিষয়টি প্রচুর বিরক্তিকর। কম্বল বলে কি এভাবে ছুড়ে দেবে? তবে অনেক সময় রাতে লুঙ্গি পরে ঘুমানো ব্যক্তির ক্ষেত্রে এভাবে ডাকাটা বেশ হাস্যকর ও লজ্জারও বটে।
মোজা
আমার কদর সারা বছরই থাকে, সে নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথা নেই। কিন্তু আমার অভিযোগ এক জায়গায়। তা হলো ইদানীং ফুটপাতে এত কম মূল্যে মোজা কিনতে পাওয়া গেলেও অনেকেই আমাদের পরে পরে বারোটা বাজিয়ে দেন। অনেক সময় পায়ের বৃদ্ধা আঙুল মোজা ছিদ্র করে বাইরে চলে আসে কিংবা গোড়ালির ঘষায় মোজার নিচের অনেক অংশই ফাঁকা হয়ে যায়। কিন্তু তাতেও কারো নজর পড়ে না। আবার অন্যদিকে অনেকেই আছেন যত্রতত্র মোজা খুলে প্রবেশ করেন আর পচা গন্ধে সকলেই দোষারোপ করেন আমাদের। অথচ আমরা কি বলেছি, টানা দু-তিন দিন একই মোজা পরে কাটাতে?
জনৈক গবেষক বলেছেন, ‘বাড়ি থেকে মেহমান তাড়ানোর সহজ বুদ্ধি হলো টানা পাঁচ দিন ব্যবহারকৃত মোজা গেস্টরুমের আশপাশে রেখে দিন।’
অন্যদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্কিন বিশেষজ্ঞ তরুণ-তরুণীদের পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, ‘আমরা হাতে ও পায়ে টানা মোজা ব্যবহারে স্কিনের উজ্জ্বলতা লক্ষ করেছি। অনুরূপ এই শীতে মুখজুড়ে মোজার (মুখোশ) ব্যবহার করলেও বেশ ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে।’