রম্য
শপিংয়ের জন্য স্বামীদের পরিপূর্ণ প্রস্তুতি!

ঘনিয়ে আসছে ঈদ। আর ঈদ মানেই গিন্নিদের শপিং। আর গিন্নিদের শপিং মানেই স্বামীদের করুণ অবস্থা! সে যা-ই হোক, ঈদ আসছে, স্ত্রীকে নিয়ে শপিংয়ে যেতেই হবে; সে জন্য স্বামীদের সব দিক থেকে পরিপূর্ণ প্রস্তুতি থাকা চাই!
প্রস্তুতি নম্বর ১ : যেহেতু ঈদ ঘনিয়ে আসছে, সেহেতু স্ত্রীগণ ঘ্যানরঘ্যানর শুরু করে দেবেন, এটা নিশ্চিত! মানে তারা শপিংয়ে যাওয়ার বিষয়ে দিনে অসংখ্যবার কথা বলবেন। বউদের এই ঘ্যানরঘ্যানর সহ্য করার প্রস্তুতিই প্রথমে নিতে হবে স্বামীদের।
প্রস্তুতি নম্বর ২ : ঘ্যানরঘ্যানর সহ্য করতে পারেন আর নাই পারেন, শপিংয়ে আপনাকে যেতেই হবে! না, একা একা শপিংয়ে যাওয়ার ভাগ্য বিয়ে করার পর থেকেই আপনার কপাল থেকে হারিয়ে গেছে! বউকে নিয়েই যেতে হচ্ছে তাই! তো, শপিংয়ে যেহেতু যাবেনই, সেহেতু মানসিকভাবে আপনাকে প্রস্তুত হতে হবে! শপিংয়ে গিয়ে বউ কী কী করতে পারে, সে বিষয়ে পূর্বাভিজ্ঞতা থেকে ‘জ্ঞান’ নিয়ে নিজের মনকে সে অনুযায়ী প্রস্তুত করতে হবে।
প্রস্তুতি নম্বর ৩ : এ ধাপে স্বামীদের হাত-পায়ের প্রস্তুতি প্রয়োজন। হাত-পায়ের প্রস্তুতি কেন, এমন প্রশ্ন তোলার আগে শুনুন, বউয়ের সঙ্গে শপিং মানেই এ দোকান থেকে ও দোকানে, ও দোকান থেকে সে দোকানে... তথা এক জিনিস কিনতেই শখানেক দোকানে ঘুরতে হবে! এ ছাড়া তার শপিংয়ের বহরে ব্যাগ তো কমপক্ষে ৮-১০টা হবেই! তো, দোকানে দৌড়াদৌড়ির জন্য পা আর শপিং ব্যাগ বহনের জন্য হাতের প্রস্তুতির দরকার আছে না? এ জন্য আগে থেকেই ঘরে একটু দৌড়াদৌড়ি আর ভারী জিনিস বহনের চেষ্টা করতে হবে!
প্রস্তুতি নম্বর ৪ : প্রস্তুতির এ পর্যায়ে মনকে শক্ত করতে হবে! মূলত এটাই হচ্ছে সবচেয়ে কার্যকর প্রস্তুতি! এ পর্যায়ে স্বামীদের চিন্তা করতে হবে, ‘স্ত্রী তো একটাই! না হয় কিছু টাকা খরচ করে শপিং করলোই!’ আরে মশাই, শপিংয়ে গিয়ে স্ত্রী যে যা দেখবে, তা কিনতে চাইবে, আর তাতে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ হবে, সে জন্য তো মনকে কোনো কিছু বলে সান্ত্বনা দিতে হবে! নাকি?
প্রস্তুতি নম্বর ৫ : শপিংমলে ঢুকলে মনে হবে দেশের সব মানুষ বুঝি কাজকাম ফেলে এখানেই চলে এসেছে! বিশেষ করে ঈদের সময় তো কথাই নেই! এ অবস্থায় বউয়ের সঙ্গে শপিংয়ে যাওয়া মানেই শত শত লোকের ভিড়ের ক্রমাগত ‘গুঁতা’ তথা ধাক্কা খাওয়ার প্রস্তুতিটা স্বামীদের আগেভাগেই নিয়ে রাখতে হবে।
প্রস্তুতি নম্বর ৬ : ঘরে মাথা ধরা প্রতিরোধক, মাথা ঘুরান্তি দেওয়া প্রতিরোধক এবং উত্তমরূপে ঘুম হওয়ার সহায়ক ওষুধ মজুদ রাখতে হবে! কারণ, বউয়ের সঙ্গে শপিংয়ে কয়েক ঘণ্টা কাটিয়ে বাসায় এসে স্বামীদের মাথাব্যথা, মাথা ঘুরান্তি দেওয়া এবং অনিদ্রা রোগ দেখা দেওয়ার সমূহ আশঙ্কা থাকে! অতএব, প্রস্তুত থাকাই ভালো!
প্রস্তুতি নম্বর ৭ : বউয়ের পেছনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যয় করে, নিজের পরিশ্রমের টাকা জলে দিয়েও স্বামীদের শান্তি নেই! ঘরে ফিরে বউয়ের কাছ থেকে ঝাড়ি খেতেই হবে! ঝাড়িটা হবে এ রকম, ‘মিনসের ঘরের মিনসে! এত কম টাকা নিয়ে কেউ শপিংয়ে যায়! মাত্র তিনখানা শাড়ি, তিনখানা ড্রেস, তিনখানা জুতো, আর মাত্র কয়েক রকমের গহনা কিনলাম! আমার কপালরে! এই কিপটের লগে আব্বা-আম্মা কেন আমার বিয়ে দিলরে!’ স্বামীগণ, প্রস্তুতিটা নিয়ে রাখুন কিন্তু!