কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে বিপাকে ভৈরবের ব্যবসায়ীরা
কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কিশোরগঞ্জের ভৈরবের ব্যবসায়ীরা। ঈদের পর ১১ থেকে ১২ দিন চলে গেলেও এখনও কেনা চামড়া বিক্রি করতে পারছেন না। ফলে চামড়ার ক্রয়মূল্যের সঙ্গে বাড়তি খরচ হিসেবে যোগ হচ্ছে শ্রমিক খরচ, বিদ্যুৎ বিল ও ঘরভাড়া।
ট্যানারি মালিকদের পক্ষ থেকে কেনার সাড়া না পাওয়ায় শঙ্কা নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন তারা। যতো বেশি দিন তাদের কাছে চামড়া থাকবে, চামড়া নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও ততো বেশি বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান, চলতি মৌসুমে ঢাকার বাইরে গরু ও মহিষের চামড়ার সরকারি মূল্য নির্ধারিত ছিল ৩৭ টাকা। আর ছাগল ও ভেড়ার যথাক্রমে ১৩ ও ৯ টাকা। সে হিসাবে প্রতিটি গরু ও মহিষের চামড়ার দাম আসে ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা।
এই হিসাব মাথায় রেখে তারা প্রতিটি চামড়া ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা দরে কিনেছেন। লবণ ও শ্রমিক খরচ যোগ করে যার মোট মূল্য দাঁড়িয়েছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। ট্যানারি মালিকরা সরকার নির্ধারিত মূল্যে তাদের কাছ থেকে চামড়া কিনলে তাদের প্রতি চামড়ায় লাভ হবে ১০০ থেকে ২০০ টাকা।
কিন্তু ঢাকার ট্যানারি মালিকদের পক্ষ থেকে সাড়া না পাওয়ায় কয়েক কোটি টাকার অবিক্রিত চামড়া নিয়ে শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা। তাদের আশঙ্কা, যথা সময়ে চামড়া বিক্রি করতে না পারলে সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে মান কমে যাবে তাদের চামড়ার। মানহীন সেই চামড়া কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হলে লোকসানে পড়বেন তারা।
ভৈরবের চামড়া ব্যবসায়ী মো. সজল মিয়া জানান, তিনি এবার ৯ হাজার পিস গরু ও মহিষের চামড়া কিনেছেন। প্রসেসিং করে স্তুপাকারে রেখেছেন। যার মূল্য ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা। প্রতি বছর যেসব ট্যানারিতে চামড়া বিক্রি করে থাকেন, তাদের কাছে থেকে এখনও অফার পাননি তিনি। লকডাউনের অছিলা দিয়ে তারা চামড়া কেনা থেকে বিরত আছেন। এই চামড়া কোনো কারণে নষ্ট হলে তিনি পথে বসবেন।
সজল অভিযোগ করে বলেন, ‘বিগত তিন মৌসুম ধরে ট্যানারি মালিকরা বিক্রিত চামড়ার মূল্য তাদের পরিশোধ করছেন না। ফলে আমার নিজের দুই কোটিসহ ভৈরবের প্রায় ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা আটকে আছে ট্যানারি মালিকদের হাতে। অথচ এই টাকার ব্যাংক সুদ গুনতে হচ্ছে আমাদের।’
একই শঙ্কা ও অভিযোগ জানালেন চামড়া ব্যবসায়ী হৃদয় মিয়া, বাচ্চু মিয়া ও সিদ্দিক মিয়া। ভৈরবের চামড়া ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখতে তারা ট্যানারি মালিকদের সহায়তাসহ সরকারি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।